ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক

১৩ জুলাই, ২০১৫ ০২:১৬

ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা অব্যাহত, পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ

ইরানের সঙ্গে একটি যুগান্তকারী পারমাণবিক চুক্তি করতে ছয় বিশ্ব শক্তির আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। তবে চুক্তির সম্ভাবনা এখনও দৃশ্যমান হচ্ছে না। ইরান পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে পিছুটান দেয়ার অভিযোগ করেছে এবং ওয়াশিংটন বলেছে, আলোচনা সামনের দিকে এগিয়ে নিতে তারা প্রস্তুত রয়েছে। খবর সূত্র: বাসস।

এদিকে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আলোচনার সময় দুই সপ্তাহের মধ্যে তৃতীয় দফা বাড়ানো হয়েছে। ইরান ও ছয় বিশ্বশক্তির নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী সোমবারের মধ্যে চূড়ান্ত মতৈক্যে পৌঁছতে হবে তাদের। এর আগে মার্কিন কংগ্রেসের বেঁধে দেয়া সময়সীমা অনুসারে, শুক্রবারের মধ্যেই চুক্তি হওয়ার কথা ছিল।

শুক্রবার অন্যান্য মন্ত্রীদের সাথে বৈঠকের পর ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফিলিপ হ্যামন্ড বলেন, আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে। তবে এই অগ্রগতি ‘কষ্টকর রকম ধীর’। এখনও কিছু বিষয়ে সমাধান হয়নি।

তবে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, ‘আগামী ১২ ঘন্টায় আরো কিছু বিষয় স্পষ্ট করতে বিশেষজ্ঞরা কাজ করছেন এবং এরপর আমরা শেষ প্রতিবন্ধকতাগুলো ভাঙতে ফের আগামীকাল বসতে পারি।’

তেহরানের বিতর্কিত পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে গত ১৩ বছরের অচলাবস্থা অবসানের লক্ষ্যে ইরানের সঙ্গে ছয় বিশ্বশক্তি যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও জার্মানির এই আলোচনা চলছে। সম্ভাব্য চূড়ান্ত চুক্তির আওতায় ইরান তার পারমাণবিক কর্মসূচি কমিয়ে আনবে, যাতে করে পাশ্চাত্য আশ্বস্ত হতে পারে যে দেশটি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে না। বিনিময়ে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউর বিভিন্ন অবরোধ ও নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তি পাবে ইরান।

ইরানের প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট আস-হাগ জাহাঙ্গুরি বলেন, পশ্চিমারা তাদের অতিরিক্ত দাবি পরিত্যাগ করলে ছয় জাতির সঙ্গে পারমাণবিক আলোচনায় একটি ভাল চুক্তি হতে পারে।

তিনি বলেন, ইরানের প্রতিনিধিরা ‘আমাদের জাতীয় অবস্থা, সরকারের রেড লাইন ও আমাদের পারমাণবিক অধিকার সুরক্ষা’ করছেন।

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফ জোর দিয়ে বলেছেন, আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে। সারা সপ্তাহজুড়ে আলোচনা হলে তিনি থাকবেন কিনা- এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেখা যাক। কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা থমকে গেছে। চুক্তি না হওয়ার জন্য প্রধান কারণগুলোর মধ্যে ইরানের ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির ওপর জাতিসংঘের নিষোধাজ্ঞা ও একটি অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বিরোধ অন্যতম।

মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী জন কেরি সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ওয়াশিংটনের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে। মাসের পর মাস আলোচনা চলতে পারে না। তিনি চিরকাল ধরে চলা আলোচনায় থাকবেন না।

পাশ্চাত্যের সঙ্গে ইরানের সম্পর্কে দীর্ঘ টানাপোড়নের অবসান ঘটাতে প্রায় দুই বছর ধরে এই আলোচনা চলছে। গত বছরের নভেম্বরে উভয় পক্ষ একটি অন্তর্বর্তী চুক্তিতে পৌঁছায়। আর গত এপ্রিলের শুরুতে উভয় পক্ষ একটি কাঠামো চুক্তির ব্যাপারে একমত হয়। ওই কাঠামো চুক্তির ভিত্তিতে গত ৩০ জুনের মধ্যে একটি চূড়ান্ত চুক্তি হওয়ার কথা ছিল। এর মধ্যে মতৈক্য না হওয়ায় সব মিলিয়ে তিনবার সময় বাড়ানো হলো।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত