অর্থনীতিতে এবারের নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন এক বাঙালি অর্থনীতিবিদ। অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় নামের এই অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের পরে দ্বিতীয় বাঙালি হিসেবে অর্থনীতির ক্ষেত্রে এই সম্মানে ভূষিত হলেন। একই সঙ্গে নোবেল সম্মান পেলেন তার স্ত্রী এস্থার ডাফলোও। পুরস্কৃত হলেন অর্থনীতিবিদ মাইকেল ক্রেমারও।

নোবেল কমিটি জানিয়েছে, দারিদ্র দূরীকরণ নিয়ে গবেষণার জন্যেই পুরস্কার দেওয়া হল এই ত্রয়ীকে। এস্থার অর্থনীতিতে বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ নোবেল প্রাপক। বিশ্বের দ্বিতীয় মহিলা হিসেবে অর্থনীতিতে নোবেল পেলেন তিনি।

নোবেল কমিটির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘‘তাদের গবেষণা গোটা বিশ্বকে দারিদ্রের বিরুদ্ধে লড়ার নতুন হাতিয়ারের সন্ধান দিয়েছে। মাত্র দুই দশকে তাদের গবেষণা পদ্ধতি উন্নয়ন অর্থনীতির রূপরেখা বদলে দিয়েছে। এখন অর্থনীতির গবেষণায় এটি অন্যতম পাথেয় মডেল।’’

ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, এই মুহূর্তে ফোর্ড ফাউন্ডেশনের আন্তর্জাতিক অধ্যাপক হিসেবে এমআইটি-তে কর্মরত অভিজিৎ বিনায়ক। ২০১৩ সালে অভিজিৎ এবং এস্থার ডাফলো যুগ্মভাবে ‘আব্দুল লতিফ জামিল পভার্টি অ্যাকশান ল্যাব’ গড়ে তুলেছিলেন বিশ্বের দারিদ্র নিয়ে গবেষণার জন্যে। তাদের পরীক্ষামূলক গবেষণাকেই সম্মান জানাচ্ছে নোবেল কমিটি।

১৯৬১ সালে ভারতের মুম্বাইয়ে জন্ম অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তিনি প্রাথমিক পড়াশোনা সারেন সাউথ পয়েন্ট স্কুলে। ১৯৮১ সালে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক হন অভিজিৎ। সেই বছরই স্নাতকোত্তর পড়তে চলে যান জহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ে। হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে তার গবেষণার বিষয় ছিল ‘ইনফরমেশন ইকোনোমিক্স।’

অভিজিৎ জাতিসংঘেও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৫ পরবর্তী ডেভলপমেন্ট অ্যাজেন্ডা কর্মসূচিতে জাতিসংঘের সচিবের বিশিষ্ট প্রতিনিধি প্যনেলে ছিলেন তিনি। অর্থনীতি বিষয়ে বিনায়কের লেখা চারটি বই বিশ্বজুড়ে সমাদৃত। তার মধ্যে ‘পুওর ইকোনোমি’ বইটি গোল্ডম্যান স্যাকস বিজনেস বুক সম্মানে ভূষিত হয়।

অভিজিতের স্ত্রী এস্থার ডাফলোর জন্ম ১৯৭২ সালে প্যারিসে। গবেষণাও করেন এমআইটি থেকে। এস্থারের গবেষণার বিষয় ছিল, ‘দারিদ্র দূরীকরণে সামাজিক নীতি নির্ধারণ’। দীর্ঘদিন সহযোদ্ধা হিসেবে কাজ করেছেন অভিজিৎ-এস্থার।

এর আগে, অভিজিৎ ফিন্যান্সিয়াল টাইমস এবং ম্যাককিনসে বিজনেস বুক অব দ্য ইয়ার পুরষ্কার পেয়েছেন। অভিজিতের সাথে অপর নোবেল বিজয়ী এস্থার ডাফলোর সঙ্গে তিনি ২০১৫ সালে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।

এবার নোবেল পুরস্কারের ৯০ লাখ সুইডিশ ক্রোনার যৌথভাবে ভাগ করে নেবেন এই তিনজন। আগামী ১০ ডিসেম্বর সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে।