সিলেটটুডে ডেস্ক

১৩ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:৪৬

‘মুসলিম’ হয়ে গিয়ে নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদ করবেন তারা

হর্ষ মন্দার ও শশীকান্ত সেন্থিল

ভারতে বিতর্কিত নাগরিকত্ব বিল পাসের পর সেখানে তুলকালাম কাণ্ড ঘটছে। চলমান এই প্রতিবাদে যোগ দিয়েছেন ইন্ডিয়ান অ্যাডমিনিস্টেটিভ সার্ভিসের (আইএএস) সদ্য সাবেক অফিসার থেকে শুরু করে দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। এরমধ্যে কয়েকজন আবার বিতর্কিত এই বিলের প্রতিবাদে নিজেকে ‘মুসলিম’ দাবি করবেন বলেও জানিয়েছেন।

ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, ইন্ডিয়ান অ্যাডমিনিস্টেটিভ সার্ভিসের (আইএএস) সাবেক কর্মকর্তা ধর্মান্তরিত হয়ে মুসলিম হয়ে যাবেন বলেও জানান। আনন্দবাজার লিখেছে- ‘আমিও মুসলিম হয়ে যাব’- বলছেন প্রাক্তন আইএএস হর্ষ মন্দার।

পত্রিকাটি আরও জানায়, সদ্য ইন্ডিয়ান অ্যাডমিনিস্টেটিভ সার্ভিসের (আইএএস) চাকরি ছেড়ে দেওয়া শশীকান্ত সেন্থিলের সিদ্ধান্ত, এনআরসি হলে তিনি কোনও নথি জমা দেবেন না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি দিয়ে তিনি জানিয়েছেন, ‘‘আমি নাগরিক নই বলে ঘোষণা করা হলে ডিটেনশন সেন্টারে যাব।’’

শশীকান্ত সেন্থিলের মত কাশ্মিরের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের পর আইএএস হিসেবে পদত্যাগ করেছিলেন কান্নন গোপীনাথন। নরেন্দ্র মোদি সরকারের নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল, এনআরসির বিরুদ্ধে মুসলিমদের উদ্দেশে প্রতিবাদের ডাক দিয়ে তিনি বলেছেন, বিলটা অমানবিক এবং অসাংবিধানিক। সরকারি নীতিতে আক্রান্ত হলে মুসলিমদের প্রতিবাদ করার অধিকার রয়েছে।

এদিকে, নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদে কেউ ডাক দিচ্ছেন ‘সত্যাগ্রহ’-র। কেউ ‘আইন অমান্য আন্দোলন’-এর। টুইটারে ‘সিএবি-এনআরসি সত্যাগ্রহ’, ‘নো টু সিএবি-এআরসি’ হ্যাশট্যাগ ছড়িয়ে পড়েছে। শুরুর দিকে রাজনৈতিক পর্যায়ে এই প্রতিবাদ হলেও দেশের ৬২৫ জন বিশিষ্ট নাগরিকও বিল প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের যুক্তি, বিলের সঙ্গে দেশের মুসলিমদের সম্পর্ক নেই। কিন্তু নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের ফলে মুসলিমরাই হেনস্থার শিকার হবেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গুজরাট দাঙ্গার পরে চাকরি ছেড়ে দেওয়া হর্ষ মন্দার বলেছেন, ‘‘নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ হওয়ার পরে আইন অমান্য করতে মুসলিম হিসেবে নাম নথিভুক্ত করাব। তারপর এনআরসিতে নথি জমা দিতে অস্বীকার করব। নথির অভাবে নাগরিকত্ব চলে যাওয়া মুসলিমদের যে শাস্তি হবে, ডিটেনশন সেন্টারে পাঠানো হবে, আমাকে সেই শাস্তি দিতে হবে বলে দাবি তুলব।’’

এদিকে, এই প্রতিবাদে যোগ দিয়েছেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ পাবলিক ফিনান্স অ্যান্ড পলিসি-র অর্থনীতিবিদ লেখা চক্রবর্তী। টুইটারে নিজেকে ‘মুসলিম’ ঘোষণা করে লেখা চক্রবর্তীর যুক্তি, ‘‘আমি মুসলিম। ভারতেই আমার জন্ম। আমি ফাতিহা (কোরানের নির্যাস) জানি। গায়ত্রীমন্ত্রও জানি। কারণ আমার জন্ম ভারতে।’’

জেএনইউয়ের ছাত্রনেতা উমর খালিদও জানিয়েছেন, নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ ও দেশে এনআরসি হলেও নথি জমা দেবেন না। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী করুণা নন্দী বলেন, ‘‘নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল ভারতের উপরে নীতিগত আঘাত। কিন্তু এনআরসি রোজকার জীবনে বিপজ্জনক।’’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত