১৩ জানুয়ারি, ২০২০ ২০:৩৮
পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফকে রাষ্ট্রদ্রোহের দায়ে বিশেষ আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের রায় লাহোরের হাই কোর্টে বাতিল হয়ে গেছে। মোশাররফকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া বিশেষ আদালতের গঠন প্রক্রিয়াকে 'অসাংবিধানিক' ঘোষণা করে সোমবার লাহোরের হাই কোর্ট রায় দেন।
এই রায়ের পর রাষ্ট্রপক্ষ ও মোশাররফের আইনজীবী- উভয় পক্ষই জানায়, হাই কোর্ট বিশেষ আদালত গঠনের প্রক্রিয়া অসাংবিধানিক ঘোষণা করায় এই আদালতের দেওয়ার রায় বাতিল হয়ে গেছে। খবর ডন নিউজ ও বিবিসির
উচ্চ মাত্রার রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় গত ১৭ ডিসেম্বর ইসলামাবাদের একটি বিশেষ আদালত দেশটির সাবেক সেনাশাসক পারভেজ মোশাররফকে মৃত্যুদণ্ড দেন।
১৯৯৯ সালে এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে পাকিস্তানের ক্ষমতা দখল করেন দেশটির তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল পারভেজ মোশাররফ। ২০০৭ সালের ৩ নভেম্বর অবৈধভাবে সংবিধান স্থগিত করে জরুরি অবস্থা জারি করেন তিনি। উদ্দেশ্য ছিল ক্ষমতার মেয়াদ বাড়ানো। এ জন্যই তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা হয়। পরে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের সরকার মোশাররফের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে এই মামলা দায়ের করে। মামলাটি ছয় বছর ঝুলে থাকার পর গত ১৭ ডিসেম্বর রায় ঘোষণা করেন আদালত।
রায়ের পর ওই আদালত গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে লাহোরের হাই কোর্টে আপিল করেন মোশাররফ। তার করা আপিলের শুনানি নিয়ে সোমবার আদেশ দেন লাহোরের হাইকোর্ট।
পারভেজ মোশাররফকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে বিশেষ আদালতের রায় ঘোষণার পর থেকেই এর সমালোচনা করে আসছিল পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। রায় ঘোষণার দু'দিন পর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়, যেখানে বলা হয়, মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার আগে মোশাররফের মৃত্যু হলে, তার লাশ সংসদ ভবনের সামনে তিন দিন ঝুলিয়ে রাখা উচিত।
পরে এক প্রতিক্রিয়ায় এই রায়কে 'মানবতা ও ধর্মবিরুদ্ধ' বলে উল্লেখ করে দেশটির সেনাবাহিনী। এতে দেশটির বিচার বিভাগ ও সেনাবাহিনীর দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে আসে। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সরকারও মোশাররফের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেয়। বর্তমানে দুবাইয়ে অবস্থান করছেন মোশাররফ।
আপনার মন্তব্য