সিলেটটুডে ডেস্ক

০৬ আগস্ট, ২০২০ ১৯:৪৮

জামিন নাকচের পর ওসি প্রদীপসহ সাত আসামি কারাগারে

চেকপোস্টে গুলিতে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান নিহত হওয়ার ঘটনায় তার বোনের করা মামলায় টেকনাফ থানা থেকে প্রত্যাহার হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলিসহ সাত আসামির জামিন আবেদন নাকচ করে তাদের কারাগারে পাঠানো আদেশ দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (৬ আগস্ট) বিকেলে কক্সবাজার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে সাত আসামি আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করলে বিচারক মো. হেলাল উদ্দিন তা নাকচ করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এর আগে প্রদীপ কুমার দাশকে নিয়ে পুলিশ বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে কক্সবাজার আদালত প্রাঙ্গণে পৌঁছায়। এরপর তাকে কোর্ট হাজতের একটি কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে বিকেল সাড়ে ৫টায় অন্যান্য আসামিদের সঙ্গে আদালতে তোলা হয় তাকে। এরও আগে পরিদর্শক লিয়াকতসহ ছয়জনকে আদালতে নেওয়া হয়।

এ সময় পুরো এলাকায় ছিল ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সাংবাদিকসহ বিপুল সংখ্যক মানুষ আদালত প্রাঙ্গণে ভিড় করেন।

ওসি প্রদীপ কুমার ছাড়া মামলার অন্য আসামিরা হলেন- টেকনাফের শামলাপুর তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলী, এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কনস্টেবল কামাল হোসেন, কনস্টেবল আবদুল্লাহ আল মামুন, এএসআই লিটন মিয়া, এএসআই টুটুল ও কনস্টেবল মো. মোস্তফা। এদের মধ্যে এএসআই টুটুল ও কনস্টেবল মোস্তফা আদালতে হাজির হননি।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমান জানান, প্রদীপ কুমার দাশ চট্টগ্রামের দামপাড়া বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতালে এসেছিলেন। সেখান থেকে তাকে পুলিশ হেফাজতে কক্সবাজারে নেওয়া হচ্ছে। তিনি বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করবেন।

গত ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর এলাকায় চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান।

ঘটনার পর কক্সবাজার পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, রাশেদ তার পরিচয় দিয়ে 'তল্লাশিতে বাধা দেন'। পরে 'পিস্তল বের করলে' চেকপোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ তাকে গুলি করে। তবে পুলিশের এমন ভাষ্য নিয়ে শুরু থেকেই প্রশ্ন ওঠে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহত সাবেক সেনা কর্মকর্তার এক সঙ্গীর বক্তব্যের সঙ্গে পুলিশের ভাষ্যের কিছুটা অমিল রয়েছে বলে একটি সূত্র জানায়। এমন প্রেক্ষাপটে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখতে উচ্চ পর্যায়ের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এ ঘটনায় বুধবার সকালে টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ পুলিশের ৯ সদস্যের বিরুদ্ধে কক্সবাজারের আদালতে মামলা করেন সিনহা রাশেদের বোন শারমিন শাহরিয়া।

মামলা হওয়ার পর টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশকে প্রত্যাহার করা হয়। তার পরিবর্তে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে থানার দ্বিতীয় কর্মকর্তা এ বি এম দোহাকে। আদালতের নির্দেশে বুধবার রাতেই মামলাটি টেকনাফ থানায় নথিভুক্ত হয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত