সিলেটটুডে ডেস্ক

১০ আগস্ট, ২০২০ ২২:৪৪

জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ন্যায়বিচার চেয়ে যাবেন শিপ্রা: র‌্যাব

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) জিজ্ঞাসাবাদে শিপ্রা দেবনাথ বলেছেন, তিনি (শিপ্রা) জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ন্যায়বিচার চেয়ে যাবেন। সোমবার র‌্যাব সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ।

কক্সবাজারে পুলিশের চেকপোস্টে গুলিতে অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা সিনহা মো. রাশেদ খান নিহতের পর গ্রেপ্তার তার সহযোগী শিপ্রা দেবনাথ রোববার দুপুরে জামিন পান। আর সোমবার জামিনে মুক্তি পান সিনহার সহযোগী সাহেদুল ইসলাম সিফাত।

শিপ্রাকে উদ্ধৃত করে র‌্যাবের মুখপাত্র আশিক বিল্লাহ বলেন, 'তিনি (শিপ্রা) বলেছেন, তার সঙ্গে যে অন্যায় হয়েছে শেষ রক্তবিন্দু থাকা পর্যন্ত এর বিচার চান তিনি। তিনি জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ন্যায়বিচার চেয়ে যাবেন।'

আশিক বিল্লাহ জানান, সাহেদুল ইসলাম সিফাতের সঙ্গে র‌্যাব কথা বলবে। শিপ্রা ও সিফাতকে সব ধরনের নিরাপত্তা দেবে র‌্যাব।

এক প্রশ্নের জবাবে র‌্যাবের মুখপাত্র বলেন, 'আজ (সোমবার) থেকে মূল তিন অভিযুক্তকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার কথা ছিল। সেটি করা হচ্ছে না।'

সাবেক ওসি প্রদীপ, পরিদর্শক লিয়াকত আলী ও নন্দদুলাল রক্ষিতকে জিজ্ঞাসাবাদের আগে এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও সাক্ষী সিফাত ও শিপ্রার সঙ্গে বিস্তারিত কথা বলা প্রয়োজন বলে মনে করে র‌্যাবের তদন্ত দল। আশিক বিল্লাহ জানান, এর আগে পুলিশ সিনহা হত্যাকাণ্ডের পর টেকনাফ থানায় দুটি ও রামু থানায় একটিসহ যে তিনটি মামলা করেছিল, ওই মামলাগুলোও তদন্ত করবে র‌্যাব। এ ব্যাপারে আদালতের অনুমতি পেয়েছে তারা।

গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের মারিষবুনিয়া পাহাড়ে ভিডিওচিত্র ধারণ করে মেরিন ড্রাইভ দিয়ে রিসোর্টে ফেরার পথে শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা। এ সময় পুলিশ সিনহার সঙ্গে থাকা সিফাতকে আটক করে কারাগারে পাঠায়।

মেজর (অব.) সিনহা নিহত হওয়ার ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে দুটি মামলা হয়। একটি মামলা হয় টেকনাফ থানায়। এই মামলায় সরকারি কাজে বাধা ও গুলিতে নিহত হওয়ার অভিযোগ আনা হয়। সেই মামলার আসামি করা হয় সিফাতকে। আর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে রামু থানায় দায়ের করা মাদক মামলায় আসামি করা হয় শিপ্রা দেবনাথকে। চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে সিনহা নিহত হওয়ার সময় নীলিমা রিসোর্টে অবস্থান করছিলেন শিপ্রা।

এ ঘটনায় গত ৩ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ ঘটনার তদন্তে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে প্রধান করে চার সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত দল গঠন করে।

গত ৫ আগস্ট সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বাদী হয়ে কক্সবাজারের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পরিদর্শক লিয়াকত আলিকে প্রধান ও ওসি প্রদীপ কুমার দাসসহ ৯ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। ওইদিন রাতেই টেকনাফ থানায় মামলাটি নথিভুক্ত হয়। পরদিন ৬ আগস্ট সাসপেন্ড হওয়া ওসি প্রদীপ, পরিদর্শক লিয়াকতসহ মামলার সাত আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আদালত তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এই মামলা তদন্ত করার দায়িত্ব দেওয়া হয় র‌্যাবকে। আদালতে র‌্যাব প্রত্যেক আসামির বিরুদ্ধে ১০ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করলে বিচারক সাতদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এ ছাড়া অনুপস্থিত দুই আসামিকে পলাতক দেখিয়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত