ইউএনবি, ঢাকা

০৭ নভেম্বর, ২০২০ ১৩:৫২

সমবায় থেকে যেন প্রত্যেকে লাভবান হয়: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ফাইল ছবি)

সমবায় ব্যবস্থাকে টেকসই করতে সংশ্লিষ্টদের আন্তরিকতা ও দায়িত্ববোধ নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসাথে বহুমুখী গ্রাম সমবায় গড়ে তুলতে পারলে দেশে কোনো দারিদ্র্য থাকবে না বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সমবায় থেকে যেন প্রত্যেকে লাভবান হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ৪৯তম জাতীয় সমবায় দিবস এবং জাতীয় সমবায় পুরস্কার ২০১৯ প্রদান অনুষ্ঠানে শনিবার (৭ নভেম্বর) গণভবন থেকে যুক্ত হয়ে এ আহবান রাখেন প্রধানমন্ত্রী। এ বছরের দিবসের প্রতিপাদ্য হলো ‘বঙ্গবন্ধুর দর্শন, সমবায়ে উন্নয়ন’। এসময় সমবায় কর্মকাণ্ডে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর তাগিদ দেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

শেখ হাসিনা জানান, বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথে গ্রামীণ জনগোষ্ঠী ও অনগ্রসরদের উন্নয়নে সমবায়কে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। তাৎক্ষণিক লাভের আশা না করে, সবার কল্যাণকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করতে সমবায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। 'বঙ্গবন্ধুর দর্শন, সমবায়ে উন্নয়ন' এবার এই প্রতিপাদ্যে পালিত হচ্ছে জাতীয় সমবায় দিবস। আর পুরস্কার পেয়েছে ৯টি সমিতি ও একজন সমবায়ী।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন,  ‘বহুমাত্রিক পল্লী সমবায় প্রতিষ্ঠা করা গেলে দেশে কোনো দারিদ্র্য থাকবে না। এটা প্রমাণিত, আমরা যদি বহুমাত্রিক পল্লী সমবায় গড়ে তুলতে পারি তবে বাংলাদেশে দারিদ্র্য থাকবে না, দারিদ্র্য পুরোপুরি নির্মূল হবে এবং আমরা এটি করতে পারি।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘দেশকে দারিদ্রমুক্ত করতে সমবায় আন্দোলনের সাথে জড়িতদের বড় ভূমিকা রয়েছে। আপনারা সেই লক্ষ্যে কাজ চালিয়ে যাবেন, আমরা সেটাই চাই, আমরা ক্ষুধা ও দারিদ্র্য মুক্ত বাংলাদেশ চাই।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বিজয় ছিনিয়ে আনা দেশের মানুষ যত বাধাই আসুক না কেন সামনে এগিয়ে যাবে। প্রধানমন্ত্রী সমবায় আন্দোলনে জড়িত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের তাদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রির জন্য বিপণন ব্যবস্থার বিকাশ করতে হবে। যদি আমরা বিপণন ব্যবস্থার বিকাশ না করি তবে আমরা আমাদের পণ্যগুলো বিক্রি করতে সক্ষম হব না এবং এটি সকলের মধ্যে নিরুৎসাহ এনে দেবে, সুতরাং বিপণন ব্যবস্থার বিকাশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ,’ বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী সমবায়গুলোতে জড়িত সকলকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য অনুরোধ করেন যাতে মানুষ তাদের উত্সাহ না হারায়। ‘বিপণনের ব্যবস্থাটি বিশেষভাবে বিবেচনা করতে হবে এবং এটি করা উচিত,’ বলেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

সরকার জাতির পিতার নীতিতে বিশ্বাসী বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সমবায়ের মাধ্যমে দেশকে গড়ে তোলা যায়। এজন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে আন্তরিকতা এবং দায়িত্বের সাথে তাদের দায়িত্ব পালনের জন্য অনুরোধ করেন।

‘তাত্ক্ষণিকভাবে বড় মুনাফায় প্রবৃত্ত হবেন না, এটিকে (সমবায়) স্থায়ী এবং লাভজনক সংস্থায় পরিণত করুন যাতে সকল সদস্য তাদের লাভের অংশ পেতে পারে,’ তিনি বলেন।

প্রধানমন্ত্রী সমবায় আন্দোলনে আরও বেশি নারীর জড়িত থাকার বিষয়ে জোর দিয়ে বলেন, ‘যত বেশি নারী বিভিন্ন কার্যক্রমে জড়িত হবে তত বেশি দুর্নীতি নির্মূল হবে। দেশের অর্ধেক জনসংখ্যা নারী এবং তাদের এই সমবায় আন্দোলনে আরও বেশি করে অংশ নেয়া উচিত।’

বিজ্ঞাপন

দেশের সার্বিক উন্নয়নে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের বর্ণনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গ্রামাঞ্চলে বসবাসরত মানুষ যাতে সেখান থেকে তাদের জীবিকা নির্বাহ করতে পারে সেজন্য সরকার সব পদক্ষেপ নিচ্ছে। আমরা গ্রামাঞ্চলে সমস্ত নগর সুবিধার ব্যবস্থা করব যাতে সেখানে বসবাসরত মানুষ উন্নত ও সুন্দর জীবন পেতে পারে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণের জন্য সমবায়গুলো হাতিয়ার। বঙ্গবন্ধু সকল ক্ষেত্রে সমবায় ভিত্তিক উৎপাদন ও বিতরণ ব্যবস্থাপনার প্রসার ঘটাতে চেয়েছিলেন।’

অনুষ্ঠানে এলজিআরডি ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য এবং পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব মো. রেজাউল আহসান প্রমুখ বক্তব্য দেন। এর আগে এলজিআরডি ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে জাতীয় সমবায় পুরস্কার প্রদান করেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত