সিলেটটুডে ডেস্ক

০৫ এপ্রিল, ২০২১ ১৭:০৩

চোরার মায়ের বড় গলা: মামুনুল প্রসঙ্গে কাদের

পীর আউলিয়ার দেশে ধর্মকে অধর্ম চর্চার হাতিয়ারে পরিণত হতে দেয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। হেফাজতে ইসলাম নেতা মামুনুল হকের রিসোর্টকান্ডের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী সংসদে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা তথ্যনির্ভর বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন।

নিজ বাসভবনে সোমবার সকালে এক নিয়মিত ব্রিফিংয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, লজ্জাজনক ঘটনার পর তথাকথিত নেতাদের জনসমক্ষে ক্ষমা চাওয়ার কথা থাকলেও দেখা যাচ্ছে চোরার মায়ের বড় গলা।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এ দেশ পীর আউলিয়া ও ওলামায়ে কেরামের দেশ, এখানে ধর্মকে অধর্ম চর্চার হাতিয়ারে পরিণত করতে খোদ ইসলামপ্রিয় জনগণই দেবে না।’

তিনি বলেন, ‘হেফাজত নেতার নৈতিক অবনমনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছেন তা তথ্যনির্ভর এবং প্রকৃত সত্য উদঘাটন। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে ধর্মব্যবসায়ীদের মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে।’

হেফাজতে ইসলাম নেতা মামুনুল হক গত শনিবার এক নারীকে নিয়ে সোনারগাঁয়ের রয়্যাল রিসোর্টে যাওয়ার পর স্থানীয় লোকজন তাকে ঘেরাও করে। তবে মামুনুল ওই নারীকে নিজের দ্বিতীয় স্ত্রী বলে দাবি করেছেন।

এ ঘটনার সমালোচনা করে রোববার সংসদে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি মুফতিকে বেশি কিছু বলতে চাই না। গতকালকেই আপনারা দেখেছেন। এরা একদিকে ইসলামের নাম, ধর্মের নাম, পবিত্রতার নাম এত কিছু বলে যত অপবিত্র কাজ করে ধরা পড়ে সোনারগাঁয়ে একটি রিসোর্টে।’

মামুনুল যে নারীকে নিয়ে গিয়েছিলেন, তিনি পারলারের কর্মী জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এদিকে বউ হিসেবে পরিচয় দেয়, আবার নিজের বউয়ের কাছে বলে যে, অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আমি এটি বলে ফেলেছি।’

তিনি বলেন, ‘যারা ইসলাম ধর্মে বিশ্বাস করে, এ রকম মিথ্যা কথা, অসত্য কথা কি তারা বলতে পারে? তারা তো বলতে পারে না। তাইলে এরা কী ধর্ম পালন করে আর মানুষকে কী ধর্ম শেখাবে?’

সোমবারের ব্রিফিংয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যে ধর্মব্যবসায়ীদের আঁতে ঘা লেগেছে। জনগণ ভেবেছে এ লজ্জাজনক ঘটনার পর তথাকথিত নেতারা জনসমক্ষে ক্ষমা চাইবেন, কিন্তু দেখা যাচ্ছে চোরার মায়ের বড় গলা।

‘তাদের একজন নেতার সোনারগাঁয়ের একটি রিসোর্টে অনৈতিক ঘটনার পর তাদের ফোনালাপসহ অন্যান্য বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল এবং একজন সুন্দরী মহিলাকে নিজের দ্বিতীয় স্ত্রী বলে পরিচয় দেয়া এখন আর গোপন নয়।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এসব অনৈতিক ঘটনার সমর্থনে দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের যে তাণ্ডবলীলা চলছে, তাতে এই উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর স্বরূপ উন্মোচিত হয়েছে।

এই উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকিস্বরূপ, মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে টার্গেট করেই তারা তাদের পুরোনো পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে চায়।

এ সময় ধর্মীয় এই অপশক্তিকে প্রতিহত ও পরাজিত করার জন্য দেশপ্রেমিক জনগণকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান কাদের।

তিনি বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে যারা তাণ্ডব চালিয়েছিল তাদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ শুরু হয়েছে। শেখ হাসিনা সরকারের সঙ্গে দেশের জনগণ রয়েছে, সুতরাং যারা পেছন থেকে উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীকে উসকানি দিচ্ছে এবং অর্থায়ন করছে তাদের মুখোশও উন্মোচন করা হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত