২২ জুন, ২০২১ ১৬:০৭
ঢাকায় ৭১ শতাংশ মানুষের শরীরে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত পরবর্তী অ্যান্টিবডির উপস্থিতি পাওয়া গেছে। চট্টগ্রাম শহরের ক্ষেত্রে এই হার ৫৫ শতাংশ। ঢাকা-চট্টগ্রামে বস্তি ও বস্তির বাইরে করোনা সংক্রমণ নিয়ে মঙ্গলবার অনলাইনে প্রকাশিত আইসিডিডিআরবির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, বয়স্ক ও তরুণদের সেরোপজিটিভিটির (অ্যান্টিবডির সাহায্যে কোভিডকে নিষ্ক্রিয় করার ক্ষমতা) হার প্রায় সমান।
নারীদের মধ্যে সেরোপজিটিভিটির হার ৭০.৬ শতাংশ, যা পুরুষদের (৬৬ শতাংশ) তুলনায় বেশি। যেসব অংশগ্রহণকারীর (মোট ২২০৯) মধ্যে সেরোপজিটিভিটি পাওয়া গেছে তাদের মধ্যে শুধু ৩৫.৫ শতাংশের ক্ষেত্রে করোনার মৃদু উপসর্গ দেখা দিয়েছিল।
গবেষণাটি করেছেন আইসিডিডিআরবির ডা. রুবহানা রাকিব ও ড. আবদুর রাজ্জাক।
গবেষণাটি ঢাকা ও চট্টগ্রামের বস্তি এবং বস্তিসংলগ্ন এলাকায় বসবাসকারী ৩ হাজার ২২০ জনের মধ্যে একটি আন্তবিভাগীয় গবেষণা হিসেবে পরিচালনা করা হয়।
করোনার উপসর্গ এবং উপসর্গহীন ব্যক্তিদের নিয়ে গবেষণাটি করা হয়েছে। এটি ২০২০ সালের অক্টোবর থেকে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি সময়ের মধ্যে করা হয়।
গবেষণায় ৩ হাজার ২২০ জন অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে চট্টগ্রামের তুলনায় ঢাকায় সেরোপজিটিভিটির হার বেশি। ঢাকায় যেটি ৭১ শতাংশ, চট্টগ্রামে তা ৫৫ শতাংশ। বয়স্ক ও তরুণদের সেরোপজিটিভিটির হার প্রায় সমান। এর মধ্যে আবার নারীদের সেরোপজিটিভিটির হার ৭০.৬ শতাংশ। আর পুরুষদের ৬৬ শতাংশ। এতে দেখা যায় পুরুষদের তুলনায় নারীদের বেশি।
গবেষণায় আরও বলা হয়, স্বল্প শিক্ষিত, অধিক ওজন, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস রয়েছে যাদের, তাদের মধ্যে অধিক মাত্রায় সেরোপ্রিভেলেন্স (রক্তে কোভিড উপস্থিতির হার) দেখা গিয়েছে।
বারবার হাত ধোয়ার প্রবণতা, নাক-মুখ কম স্পর্শ করা, বিসিজি টিকা নেয়া এবং মাঝারি ধরনের শারীরিক পরিশ্রম করা ব্যাক্তিদের মধ্যে কম মাত্রার সেরোপ্রিভেলেন্স দেখা গেছে।
সেরোনেগেটিভ ব্যক্তিদের তুলনায় সেরোপজিটিভ ব্যক্তিদের মধ্যে সেরাম জিঙ্কের মাত্রা বেশি দেখা গেছে। এটাই হয়তো গবেষণায় অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিদের মধ্যে রোগের মৃদু লক্ষণের সাথে সম্পৃক্ত।
গবেষণায় ভিটামিন-ডির অপর্যাপ্ততার সঙ্গে সেরোপজিটিভিটির কোনো প্রভাব দেখা যায়নি; বরং গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ভিটামিন-ডির উচ্চমাত্রার ঘাটতি দেখা গেছে।
গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন ডা. রুবহানা রাকিব। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘শহরগুলাতে শনাক্তের পরিমাণ বেশি। ভিটামিন ডি আমাদের দেশে বড় সমস্যা। এ ঘাটতি পূরণ করতে হবে।
‘বস্তিবাসীর মধ্যে ৭২ শতাংশ অ্যান্টিবডি। আর বস্তির বাইরে মানুষের মধ্যে ৬২ শতাংশ অ্যান্টিবডি দেখেছি।’
ওয়েবিনারে চেয়ারপারসন হিসেবে বক্তব্য দেন ডা. তাহমিদ আহমেদ। তিনি বলেন, ‘গবেষণায় এসেছে, যাদের শিক্ষা বেশি তাদের সেরোপজিটিভিটি কম ছিল। যত শিক্ষা তত হয়তো তারা প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নিতে পেরেছেন।’
তিনি বলেন, যাদের আয় কম, তাদের তুলনায় যাদের আয় বেশি তাদের মধ্যে করোনার অ্যান্টিবডি পাওয়ার আশঙ্কা দেড় গুণ বেশি ছিল। ফলে যাদের আয় বেশি তারা দেড়গুণ বেশি ঝুঁকিতে আছেন।
আপনার মন্তব্য