সিলেটটুডে ডেস্ক

২৩ জুন, ২০২১ ১৮:৩৯

পরীমনিকে ধর্ষণ-হত্যাচেষ্টা: নাসির-অমি ৫ দিনের রিমান্ডে

অভিনেত্রী পরীমনিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে গ্রেপ্তার ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তুহিন সিদ্দিকী অমিকে ৫ দিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।

ঢাকার মুখ্য বিচারিক আদালতের (সিজেএম) হাকিম রাজিব হাসান বুধবার বিকেলে এ আদেশ দেন।

এর আগে মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা সাভার থানার পরিদর্শক কামাল হোসেন (নিরস্ত্র) আসামিদের আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের হেফাজতে পেতে আবেদন করেন। এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক এ আদেশ দেন।

গত ১৫ জুন নাসির-অমিকে ডিবি পুলিশের করা মাদক মামলায় ৭ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। ঢাকার মুখ্য মহানগর আদালতের (সিএমএম) হাকিম নিভানা খায়ের জেসী এ আদেশ দিয়েছিলেন।

এর আগে গত ১৪ জুন দুপুরে রাজধানীর উত্তরা-১ নম্বর সেক্টরের-১২ নম্বর রোডের ১৮ নম্বর বাসায় অভিযান চালিয়ে ৩ নারীসহ গ্রেপ্তার করা হয় নাসির ও অমিকে।

গ্রেপ্তারের সময় ওই বাসায় অভিযানকালে চার বোতল বিদেশি মদ, আট বোতল তরল সোডা, তিন ক্যান তরল সোডা ও এক হাজার পিচ ইয়াবা নামক ট্যাবলেট জব্দ করা হয়।

ওইদিন দিবাগত রাতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ডিবি পুলিশের মামলাটি বিমানবন্দর থানায় মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়।

এর আগে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ১৪ জুন দুপুরের দিকে সাভার থানায় নাসির উদ্দিনসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন পরীমনি।

এতে নাসির উদ্দিনকে এক নম্বর ও তার বন্ধু অমিকে দুই নম্বর আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হলেও অজ্ঞাত আসামি করা হয় আরও চারজনকে।

মামলার এজাহারে পরীমনি জানান, গত ৮ জুন রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিনি বনানীর বাসা থেকে কস্টিউম ডিজাইনার জিমি, অমি ও বনিসহ দুটি গাড়িতে উত্তরার দিকে যান।

‘পথিমধ্যে অমি বলে বেড়িবাঁধে ঢাকা বোট ক্লাব লিমিটেডে তার ২ মিনিটের কাজ আছে। অমির কথামতো আমরা ঢাকা বোট ক্লাবের সামনে রাত ১২টা ২০ মিনিটের দিকে গাড়ি দাঁড় করাই।

কিন্তু বোট ক্লাব বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অমি কোনো এক ব্যক্তির সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলে। তখন ঢাকা বোট ক্লাবের সিকিউরিটি গার্ডরা গেট খুলে দেয়। তখন অমি ভেতরে যায় এবং অমি অনুরোধ করে এখানের পরিবেশ অনেক সুন্দর, তোমরা নামলে নামতে পারো।’

এজাহারে পরী বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমার ছোট বোন বনির প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিলে আমরা ঢাকা বোট ক্লাবে প্রবেশ করে বারের কাছের টয়লেট ব্যবহার করি। টয়লেট হতে বের হতেই ১নং বিবাদী নাসির উদ্দিন মাহমুদ আমাদেরকে ডেকে বারের ভেতরে বসার অনুরোধ করেন এবং কফি খাওয়ার প্রস্তাব দেন। আমরা বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চাইলে অমিসহ ১নং আসামি মদ্যপান করার জন্য জোর করেন। আমি মদ্যপান করতে না চাইলে ১নং আসামি জোর করে আমার মুখের মধ্যে মদের বোতল প্রবেশ করিয়ে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করে। এতে আমার সামনের দাঁতে ও ঠোঁটে আঘাত পাই।

‘১নং আসামি আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং আমার শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে স্পর্শ করে ও আমাকে জোর করে ধর্ষণের চেষ্টা করে। ১নং আসামি উত্তেজিত হয়ে টেবিলে রাখা গ্লাস ও মদের বোতল ভাঙচুর করে আমার গায়ে ছুড়ে মারেন। তখন আমার কস্টিউম ডিজাইনার জিমি ১নং আসামিকে বাধা দিতে চাইলে তাকেও মারধর করে নীলাফোলা জখম করে। আমি প্রথমে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল দিতে গেলে আমার ব্যবহৃত ফোনটি টান মেরে ফেলে দেয়। পুনরায় ফোনটি উঠিয়ে কল দিতে চাইলে আবারও ফোনটি টেনে ফেলে দেয়।’

এজাহারে পরী আরও বলেন, ২নং আসামি (অমি) সহ অজ্ঞাতনামা চারজন আসামি ১নং আসামিকে ঘটনা ঘটাতে সহায়তা করে। আমি অজ্ঞাতনামা আসামিদের দেখলে শনাক্ত করতে পারব। প্রকাশ থাকে যে, ২নং আসামি অমি পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আমাকে আমার বর্তমান বাসা থেকে ঢাকা বোট ক্লাবে নিয়ে যায় এবং ২নং আসামিসহ অজ্ঞাতনামা ৪ জন আসামির সহায়তায় ১নং আসামি নাসির উদ্দিন মাহমুদ আমার শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে স্পর্শ করে এবং জোরপূর্বক আমাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে।

‘আমার সঙ্গীদের সহায়তায় ধর্ষকের হাত থেকে রক্ষা পাই। রাত অনুমান ৩টায় আমি আমার গাড়িযোগে প্রায় অচেতন অবস্থায় আমার সঙ্গীদের সঙ্গে ফিরে আসি। উল্লেখ্য যে, আসামিরা বিভিন্ন মাধ্যমে আমাকে বিভিন্ন প্রকার ভীতি ও হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত