২৭ জুন, ২০২১ ১৭:৫৪
করোনার সেকেন্ড ওয়েভে সংক্রমণ এবং মৃত্যু বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে এই রোগের বিস্তার মোকাবিলায় সবার সহযোগিতা কামনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, আবার যেহেতু মানুষ ব্যাপকভাবে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে এবং মৃতের সংখ্যা বেড়ে গেছে। তাই, সবাই একটু সাবধানে থাকবেন। নিজেকে এবং পরিবারকে নিরাপদে রাখবেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে নিজেকে এবং অপরকে সুরক্ষিত রাখবেন- সেটা আমার অনুরোধ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই অবস্থা (করোনা) আমরা মোকাবিলা করতে পারব। ইনশাআল্লাহ, সে বিশ্বাস আমাদের রয়েছে। এক্ষেত্রে সবার সহযোগিতা আমরা চাই।
রোববার ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার ১৪২৪’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। পাশাপাশি তিনি দেশের ১শ’ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প গড়ে তোলার মাধ্যমে দেশের রপ্তানি খাতকে সমৃদ্ধ করণে সংশ্লিষ্টদেরকে গুরুত্ব প্রদানের আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে কৃষি মন্ত্রণালয় আয়োজিত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকালে করোনার সেকেন্ড ওয়েভ শুরু হওয়ায় সবাইকে সতর্ক থেকে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণে তার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।
তার সরকার সারা দেশে ১শ’টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই ১শ’টি অর্থনৈতিক অঞ্চলে আমরা গুরুত্ব দিতে চাই কৃষি পণ্য বা খাদ্যপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পকে। কেননা এই করোনাকালে আমরা যদি উৎপাদন অব্যাহত রাখতে পারি তাহলে নিজেদের চাহিদা যেমন মেটাতে পারব তেমনি অন্যকেও সহযোগিতা করতে পারব। আর রপ্তানির ক্ষেত্রেও আমাদের পণ্য বৃদ্ধি করতে পারব।
তিনি বলেন, ফল-মূল, শাক-সবজি, মাছ, মাংস, ডিম, দুধ- সবকিছুই আমরা উৎপাদন বাড়িয়ে এটাকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন করে সেগুলো আমরা বিদেশে রপ্তানি করতে পারি। কাজেই প্রক্রিয়াজাতকে গুরুত্ব দিতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এই ১শ’টি বিশেষ অঞ্চলে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি সেখানে যেন কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প গড়ে ওঠে, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প গড়ে ওঠে। যা আমরা বিদেশেও রপ্তানি করতে পারব।
তিনি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সেদিকে লক্ষ্য রেখে কাজ করার বিশেষ অনুরোধও জানান।
বাংলাদেশ আর পিছিয়ে নয় এগিয়ে যাবে- এমন দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী দেশের জনগণের প্রতি তার কৃতজ্ঞতা পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, ২০০৮ সালের পর থেকে টানা তৃতীয়বার ক্ষমতায় থাকতে পারায় আমরা হাতে সময় পাওয়ায় গবেষণায় যেমন উন্নতি হয়েছে তেমনি দেশকে উন্নয়নের পথে নিয়ে যেতে পেরেছি। কেননা জাতির পিতা আমাদেরকে এই স্বাধীন দেশ এনে দেওয়ার সময় এদেশের দুখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চেয়েছিলেন। সে চেষ্টা তার সরকার অব্যাহত রেখেছে।
কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম স্বাগত বক্তব্য দেন এবং পুরস্কার বিজয়ীদের সাইটেশন পাঠ করেন। এ ছাড়া পুরস্কার বিজয়ীদের পক্ষে নিজস্ব অনুভূতি ব্যক্ত করে বক্তব্য দেন মায়া রানী বাউল।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক ‘বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কার ১৪২৪’ প্রদান করেন। যারমধ্যে রয়েছে ৫টি স্বর্ণপদক, ৯টি রৌপ্য পদক এবং ১৮টি ব্রোঞ্জ পদক। কৃষিক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ৩২ ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের মাঝে এই পদক বিতরণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে কৃষি মন্ত্রণালয়ের কার্যাবলী সম্পর্কিত একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি পরিবেশিত হয় এবং প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর বাণী নিয়ে ‘বাণী চির সবুজ’ এবং ‘চিরঞ্জীব’ নামে দুটি স্মারক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন।
আপনার মন্তব্য