নিউজ ডেস্ক

২১ নভেম্বর, ২০১৫ ১৮:০৭

দেশে ফিরলেন খালেদা জিয়া

দুই মাসের বেশি সময় যুক্তরাজ্যে থাকার পর দেশে ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। শনিবার বিকাল ৫টা ১০ মিনিটে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি।

খালেদা জিয়ার সঙ্গে একই বিমানে বিএনপির উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং আবদুল আউয়াল মিন্টুর ছেলে তাবিথ আউয়ালও ফিরেছেন।

গত ১৫ সেপ্টেম্বর চিকিৎসার জন্য লন্ডনে গিয়েছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন। সেখানে বড় ছেলে তারেক রহমানসহ তার পরিবার এবং প্রয়াত ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী ও মেয়েদের নিয়ে ঈদ উদযাপন করেন তিনি।

বিএনপির অন্যতম নীতি-নির্ধারক সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের তোড়জোড়ের মধ্যে ফিরলেন খালেদা।

যুদ্ধাপরাধে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত সালাউদ্দিন কাদেরের সঙ্গে বিএনপির জোটসঙ্গী জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকরের প্রস্তুতিও চলছে।

শনিবার খালেদা জিয়ার দেশে ফেরা নিয়ে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও আশপাশের এলাকায় বাড়তি নিরাপত্তা দেখা যায়।

দুপুর থেকে বিমানবন্দরের মূল প্রবেশ পথে ছিল বিপুল সংখ্যক আনসার ও এপিবিএন সদস্য। এছাড়া বিমানবন্দর থেকে মহাখালীর সড়কে সতর্ক অবস্থায় দেখা গেছে পুলিশ সদস্যদের। যেসব গাড়ি বিমানবন্দরে প্রবেশ করে, সেগুলো থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়ে।

এপিবিএন এর এসপি রাশেদুল ইসলাম বলেন, নিরাপত্তার স্বার্থে বিমানবন্দরের প্রবেশ পথে গাড়ি থামিয়ে তল্লাশির পাশাপাশি জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

এদিকে খালেদা জিয়ার দেশে ফেরাকে কেন্দ্র করে দুপুর থেকে বিমানবন্দরের পাশের ফুটপাতে জড়ো হতে শুরু করেন বিএনপি সমর্থকরা।

খালেদা জিয়াকে বিমানবন্দরের বাইরে মওদুদ আহমদ, খায়রুল কবীর খোকন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, আবদুল্লাহ আল নোমান, সেলিমা রহমান, ওসমান ফারুক, খন্দকার মাহবুব হোসেন, আহমেদ আজম খান, মোহাম্মদ শাহজাহান, মাহবুব উদ্দিন খোকন, ফজলুল হক মিলন, গোলাম আকবর খন্দকার, আসাদুজ্জামান রিপন, জয়নুল আবদিন ফারুকসহ বিএনপির সিনিয়র নেতারা অভ্যর্থনা জানান।

সেখানে আরও ছিলেন সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, সানাউল্লাহ মিয়া, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, আবদুল লতিফ জনি, শামীমুর রহমান শামীম, আবদুস সালাম আজাদ, শাহজাদা মিয়া, নুরে আরা সাফা, শিরিন সুলতানা, রাবেয়া সিরাজ, নিলোফার চৌধুরী মনি, শাম্মী আখতার, অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল আবদুল মজিদ, মাহবুব আল আমীন ডিউ, শায়রুল কবীর খান, শামসুদ্দিন দিদারসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।

মওদুদ আহমদ অভিযোগ করে সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘ আমাদের নেত্রীকে অভ্যর্থনা জানাতে আজ হাজার হাজার নেতা-কর্মী বিমানবন্দরের বাইরে উপস্থিত হয়েছে। আমাদের কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। এ থেকে প্রমাণ হয়ে দেশে গণতন্ত্র নেই।”

খালেদা দেশে ফিরবেন না বলে আওয়ামী লীগ নেতা ও মন্ত্রীদের বক্তব্যের মধ্যে গত বৃহস্পতিবার তার ফেরার খবর দেয় বিএনপি।

এর আগে দলের মুখপাত্র আসাদুজ্জামান রিপন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “দেশের ক্রান্তিকাল ও রাজনীতির সঙ্কট বিবেচনা করেই আমাদের দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া চিকিৎসা অসমাপ্ত রেখে দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।”

গত ১৫ সেপ্টেম্বর চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা। সেখানে তিনি চোখ ও বাতের চিকিৎসা নিচ্ছিলেন বলে বিএনপি নেতারা বলে আসছেন।

লন্ডনে পারিবারিক পরিমণ্ডলে সময় কাটানোর পাশাপাশি বিএনপির আয়োজনে দুটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে বক্তব্য রাখেন খালেদা।

তার লন্ডনে অবস্থানের মধ্যেই বাংলাদেশে দুই বিদেশি নাগরিক খুন হয়েছেন এবং তল্লাশি চৌকিতে হামলা চালিয়ে হত্যা করা হয়েছে দুই পুলিশকে; যেসব ঘটনার জন্য বিএনপি নেত্রীকেই দায়ী করে আসছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরাসরিই বলেছেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ‘বানচালের উদ্দেশ্যে’ বিদেশে বসে খালেদা বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার ‘ষড়যন্ত্র’ করছেন। অন্যদিকে বিএনপি বলছে, সরকার নিরাপত্তা দিতে ‘ব্যর্থ হয়ে’ এখন তাদের ওপর ‘দায় চাপাচ্ছে’।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত