সিলেটটুডে ডেস্ক:

০৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ২৩:২৪

সরকারি প্রতিষ্ঠানে দালালের দৌরাত্ম্য বন্ধে র‌্যাবের অভিযান, আটক ৫০০

র‌্যাবের অভিযানে দালাল চক্র আটক। ছবি: ইত্তেফাক

সারাদেশে সরকারি প্রতিষ্ঠানে দালালের দৌরাত্ম্য বন্ধে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) একযোগে অভিযান পরিচালনা করেছে। অভিযানে সেবামূলক অন্তত ৫০টি সরকারি প্রতিষ্ঠানের সামন থেকে আটক ৫০০ দালালকে জেল-জরিমানা করা হয়।

রোববার সকাল থেকে র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও অন্যান্য সংস্থার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের সমন্বয়ে দেশব্যাপী অভিযান পরিচালিত হয়।

সরকারি বিভিন্ন সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ, সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ, সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ, রংপুর মেডিকেল কলেজ, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন, বিভিন্ন পাসপোর্ট অফিস ও বিআরটিএ অফিস।

অভিযান সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সম্প্রতি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্বাস্থ্যখাত, পরিবহনখাত, পাসপোর্ট অফিস, বিআরটিএসহ বিভিন্ন সেক্টরে দালাল চক্রের আধিপত্য নিয়ে বেশ কিছু সংবাদ প্রকাশিত হয়। এসব দালাল চক্রের অত্যাচারে সাধারণ মানুষ প্রত্যাশিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অনেক সময় সেবা পেতে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি টাকা খরচ করতে হচ্ছে। আবার অনেকেই বেশি অর্থ ব্যয় করেও প্রত্যাশিত সেবা পাচ্ছেন না। এর প্রেক্ষিতে, র‌্যাব দেশব্যাপী বিভিন্ন সেক্টরে দালাল চক্রের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। পরে রোববার দেশব্যাপী বিভিন্ন ধরনের দালাল চক্রের বিরুদ্ধে র‌্যাবের ১৫টি ব্যাটালিয়ন একযোগে অভিযান পরিচালনা করে। সারাদেশে ৬৮টি ভ্রাম্যমাণ আদালতে র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা ২৪৮ দালালকে ৯ লক্ষাধিক টাকা জরিমানা করেন। এছাড়া ২৪৯ দালালকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দালাল চক্রের সদস্যরা তাদের অপরাধের কথা স্বীকার করেছে।

এদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে অভিযান শেষে র‌্যাব ৩ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু সাংবাদিকদের বলেন, অভিযানে ৪০ জনের বেশি জনকে আটক করা হয়। পরে যাচাই-বাছাই শেষে স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে ৩০ জন দালালকে সাজা দেওয়া হয়। তাদের এক থেকে তিন মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই সংঘবদ্ধ দালালচক্র কৌশলে রোগীদের ভুল বুঝিয়ে নিম্নমানের হাসপাতাল ও ক্লিনিকে নিয়ে যায়। পরে রোগীরা সেখানে গিয়ে প্রতারিত হন।

অভিযানের বিষয়ে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, সম্প্রতি আমরা দেখেছি বিভিন্ন সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে দালালদের দৌরাত্ম অনেক বেড়ে গেছে। অনেক ভুক্তভোগী প্রতারিত হয়ে র‌্যাবের কাছে অভিযোগ করেছেন। র‌্যাব সাইবার মনিটরিং সেলের মাধ্যমেও আমরা বিভিন্ন সাইবার ওয়ার্ল্ডে দেখেছি এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক নেতিবাচক প্রচারণা রয়েছে। এছাড়া র‌্যাব সদর দপ্তর পরিচালিত ফেসবুক পেজ, র‌্যাব অনলাইন মিডিয়া সেল- এখানেও অনেক ভুক্তভোগী প্রতারিত হয়ে আমাদের কাছে অভিযোগ করেছেন।

তিনি আরও বলেন, এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে র‌্যাব একযোগে সারাদেশে দালালবিরোধী অভিযান পারিচালনা করেছে। প্রায় ৫০টি সরকারি সংস্থার সামনে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে দালালদের আটক করেছি। অভিযানে আমাদের সঙ্গে ছিল র‌্যাবের নির্বাহী মেজিস্ট্রেট, সিভিল প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট এবং বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত