সিলেটটুডে ডেস্ক

০৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ২৩:৩৮

উন্নয়নের কৃতিত্ব সাইফুর রহমানের: ফখরুল

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন বিএনপির অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের হাত ধরেই হয়েছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সাইফুর রহমান ‘কর্মময় জীবন’ তুলে ধরতে গিয়ে রোববার সন্ধ্যায় এক ভার্চুয়াল আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘সাইফুর রহমান সাহেবের ওপর দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আস্থা ছিল, জিয়াউর রহমানের সাহেবের একটা আস্থা ছিল, গোটা জাতির একটা আস্থা ছিলে। ১২ বার তিনি সংসদে বাজেট উপস্থাপন করেছেন। আজকের বাংলাদেশ রাতারাতি ভালো বাংলাদেশ হয়ে যায়নি।’

জিয়াউর রহমানের আমল থেকে বেগম খালেদা জিয়ার মেয়াদ পর্যন্ত বিএনপি যতবার ক্ষমতায় ছিল, সিংহভাগ সময়েই অর্থমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন সাইফুর রহমান।

ফখরুল বলেন, “জিয়াউর রহমান সাহেব মনে করেছিলেন যে, ‘আমি যদি এই মানুষটিকে (সাইফুর রহমান) আমার সঙ্গে পাই তাহলে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে, ব্যবসা-বাণিজ্যকে একটা নিয়ম শৃঙ্খলার মধ্যে নিয়ে এসে দেশটাকে আমরা সৃজনশীল অর্থনীতিতে পরিণত করতে সক্ষম হব। তিনি প্রমাণও করেছিলেন’।”

তিনি বলেন, ‘অর্থনীতিবিদদের সাথে যখন কথা বলা হয় তখন তারা একটা কথা বলেন যে, সাইফুর রহমান সাহেবের সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব একটা স্থিতিশীল সামষ্টিক অর্থনীতি। তারা যেটা বলেন, আমরা বন্ধু আছেন একজন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গর্ভনর সালাহউদ্দিন আহমেদ সাহেব, তিনি বলেন, তার (সাইফুর রহমান) সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব ছিল তিনি একটা স্টেবল মাইক্রো ইকোনমি উপহার দিয়েছিলেন বাংলাদেশে।

‘ওই সময়ে ব্যাংকিং সেক্টরে ডিসিপ্লিন ছিল, বিমা সেক্টরে ডিসিপ্লিন ছিল এবং শেয়ার মার্কেটে ডিসিপ্লিন ছিল।’

পোশাক শিল্পের বহুমুখীকরণে সাইফুর রহমানের চিন্তার কথা তুলে ধরে ফখরুল বলেন, ‘শুধুমাত্র গার্মেন্টসে উনি থাকতে চাননি। গার্মেন্টস শিল্পটাকে অনেক সময়ে ব্যঙ্গ করে বলতেন, তুমি শুধুমাত্র দর্জির একটা শিল্প বানাইবা। তিনি চাইতেন যে, এই শিল্প থেকে সারপ্লাস যে ক্যাপটালটা আসবে, সেই অর্থ দিয়ে বাংলাদেশে ভারী শিল্প তৈরি হবে। অর্থাৎ বাংলাদেশকে একটা ম্যানুফেকচারিং কান্ট্রি হিসেবে তৈরি করতে তিনি চেয়েছিলেন।’

১৯৯১ সালে ভ্যাট প্রবর্তনের বিষয়টি তুলে ধরে ফখরুল বলেন, ‘তিনি ভ্যাট প্রবর্তন করেছেন চরম বিরোধিতার মুখে, যার ফলশ্রুতিতে আজকে বাংলাদেশের রাজস্ব আহরণ অনেক অনেকগুণ বেড়ে গেছে।’

বয়স্কভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা এবং নারী শিক্ষার উন্নয়নের অবদানও সাইফুরকে দিয়েছেন ফখরুল।

সাইফুর রহমান দেশকে স্বনির্ভর করতে চেয়েছিলেন দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন,‘পার্থক্যটা এখানে যে, তিনি সাপ্লায়ার্স ক্রেডিট নিত চান নাই, তিনি ঋণের আবদ্ধ হতে চান নাই, ঋণ ডুবে মরতে চান নাই। যে কারণে অত্যন্ত শৃঙ্খলার মধ্যে ধীরে ধীরে আগে খুঁটিটাকে শক্ত করে দে্শের অর্থনীতিটাকে উঠাতে চেয়েছেন। সেজন্য স্লো যেতে চেয়েছেন।’

২০০৯ সালের ৫ সেপ্টেম্বর ঢাকা থেকে নিজের গ্রামের বাড়ি মৌলভীবাজার যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান সাইফুর রহমান। ১২তম মৃত্যুবার্ষিকীতে তাকে স্মরণে এই আলোচনার আয়োজন করে ‘সাইফুর রহমান স্মৃতি পরিষদ’।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাইফুর রহমান স্মৃতি পরিষদের সদস্য সচিব এম কাইয়ুম চৌধুরীর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, এজেডএম জাহিদ হোসেন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালও বক্তব্য রাখেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত