সিলেটটুডে ডেস্ক:

০৫ নভেম্বর, ২০২১ ২৩:৫০

সেতুমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া নেই পরিবহন মালিকদের

ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়ার প্রতিবাদে সারাদেশের ন্যায় পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট চলছে। পাশাপাশি পণ্য পরিবহনও বন্ধ রয়েছে। এসবে জনভোগান্তির কথা বিবেচনা করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের ধর্মঘট প্রত্যাহারের আহ্বান জানান। সেই আহ্বানের সাড়া না দিয়ে সন্ধ্যায় পরিবহন মালিক সমিতি বলেছে, ভাড়া না বাড়ালে গাড়ি চলবে না।

শুক্রবার সকাল থেকে ধর্মঘটের কারণে বিপাকে পড়েন সাধারণ মানুষ। জরুরি পণ্য পরিবহন, জরুরি চিকিৎসা সেবার কাজে ঘর থেকে বের হওয়া মানুষ গণপরিবহন বন্ধ থাকায় বিকল্প পরিবহনের খোঁজে দিশেহারা হয়ে পড়েন।

এছাড়া শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সাত কলেজের বাণিজ্য বিভাগের ভর্তি পরীক্ষা এবং সরকারি ২৬টি প্রতিষ্ঠানের চাকরি পরীক্ষা ছিল। এজন্য ঢাকার বাইরে থেকে অনেক শিক্ষার্থী রাজধানীতে এসেছেন। গণপরিবহন না চলায় বিপাকে পড়েন তারাও।

এসব জনদুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের ধর্মঘট প্রত্যাহারের আহ্বান জানান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্য বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে পরিবহন মালিক শ্রমিকরা আজ (শুক্রবার) থেকে পরিবহন ধর্মঘটের যে ডাক দিয়েছেন, তাতে পরীক্ষার্থী এবং জনগণের দুর্ভোগের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এ ধর্মঘট প্রত্যাহারের আহ্বান জানাচ্ছি।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আগামী ৭ নভেম্বর রোববার বিআরটিএ'র ভাড়া পুনঃনির্ধারণ কমিটির বৈঠক হবে। সেখানে সংশ্লিষ্ট স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে বাস্তবভিত্তিক মূল্য সমন্বয়ের মাধ্যম জনগণের উপর বাড়তি চাপ সহনীয় পর্যায়ে রাখার চেষ্টা করা হবে।’

মন্ত্রীর এই আহ্বানের প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্ল্যাহ বলেন, ‘সমিতি ধর্মঘট ডাকেনি। ডিজেলের দাম বাড়ায় বাস চালালে লোকসান হচ্ছে। সাধারণ মালিকরা বাস চালাচ্ছে না। ভাড়া না বাড়ালে লোকসান দূর হবে না। তাই ভাড়া না বাড়ালে বাস চলবে না।’

এর আগে বৃহস্পতিবার বাসের ভাড়া পুনর্নির্ধারণ করতে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষকে (বিআরটিএ) চিঠি দিয়েছিল বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি। চিঠিতে বলা হয়, ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীসহ দূরপাল্লার রুটে গত আট বছর ধরে বাস ভাড়া বাড়ানো হয়নি। অথচ এই সময়ে গাড়ির চেসিজের মূল্য, টায়ার-টিউব, খুচরা যন্ত্রাংশসহ সব ধরনের কর ও ফি বাড়ানো হয়েছে। এতে গাড়ি পরিচালনায় খরচ অনেক বেড়েছে। এ ছাড়া করোনার সময় পরিবহন মালিকরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ইতিমধ্যে অনেক মালিক দেউলিয়া হয়ে পড়েছেন।

চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, বাস ভাড়া বাড়ানোর জন্য মালিক সমিতি বারবার আবেদন করেছে। কিন্তু এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি সরকার। এর মধ্যে ৩ নভেম্বর রাতে জ্বালানি মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন দিয়ে অস্বাভাবিকভাবে ডিজেলের দাম লিটারপ্রতি ১৫ টাকা বাড়ানো হয়েছে।

অন্যদিকে বাংলাদেশ ট্রাক কাভার্ড ভ্যা্ন ট্যাংকার ল‌রি মা‌লিক শ্রমিক সমন্বয় প‌রিষদের আহ্বায়ক রুস্তম আলী খানও শুক্রবার সন্ধ্যায় একই ধরনের কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘মন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। যতক্ষণ পর্যন্ত ডিজেলের দাম না কমবে ততক্ষণ গাড়ি চালানো সম্ভব না। সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত এই ব্যাপারে আলোচনার কোনো আহ্বান নেই।’

এদিকে বিআরটিএ-এর চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার জানিয়েছেন, রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পরিবহন মালিক শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত