নরসিংদীর পলাশ উপজেলায় সেন্ট্রাল কলেজের ১৬ শিক্ষার্থীকে অ্যালুমিনিয়ামের পাইপ দিয়ে পিটিয়ে জখমের অভিযোগে অধ্যক্ষ আমীর হোসেন গাজীকে আটক করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় তাকে কলেজ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে এবং ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

গতকাল সোমবার দুপুর ১২টার দিকে কলেজের এক শ্রেণিকক্ষে এমন ঘটনা ঘটে। পরে অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠলে অধ্যক্ষকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মিলন কৃষ্ণ হালদার।

এই কর্মকর্তা বলেন, 'অধ্যক্ষের এমন কাণ্ডের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এ ছাড়া, এ খবর ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা সোমবার বিকেলে পলাশের খানেপুর এলাকায় বিক্ষোভ করেন।'

মিলন কৃষ্ণ হালদার আরও বলেন, 'এমন পরিস্থিতিতে অধ্যক্ষ আমীর হোসেন গাজীকে কলেজ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, 'সোমবার দিবাগত রাত ৮টার দিকে কলেজের অধ্যক্ষকে তার পণ্ডিতপাড়ার বাসা থেকে আটক করা হয়েছে। তাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পাওয়ার পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

মারধরে আহত শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোববার দ্বাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগে একটি ক্লাস হবে না এমন খবরে অধিকাংশ শিক্ষার্থী বাড়ি চলে যায়। পরদিন হঠাৎ শ্রেণিকক্ষে ঢুকে অধ্যক্ষ আমীর হোসেন গাজী অ্যালুমিনিয়ামের পাইপ দিয়ে বাড়ি চলে যাওয়া শিক্ষার্থীদের মারধর শুরু করেন। তিনি একে একে আদনান, সিজান, শাকিব, শিফাত, নয়ন, সোহেল, তাহসিন, আমিরুল, তাসফিক ও আশরাফুলসহ ১৬ শিক্ষার্থীকে ৩টি পাইপ দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেন।

আহত শিক্ষার্থী তাহসিন বলেন, 'অধ্যক্ষ ৩টি অ্যালুমিনিয়ামের পাইপ ও পানির বোতল নিয়ে ক্লাসে ঢুকেন। তিনি আমাদের পাইপ দিয়ে পিটিয়ে ক্লান্ত হলে সেই পানি পান করে আবার আমাদের পেটান। আমরা শিক্ষকের কাছ থেকে এমন আচরণ আশা করিনি।'

এদিকে, আটকের পর থানা হেফাজতে থাকা অভিযুক্ত অধ্যক্ষ আমীর হোসেন গাজী স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, 'আমি ছাত্রদের শাসন করেছি। এখন এটাকে ইস্যু বানিয়ে পরিবেশ ঘোলা করার চেষ্টা চলছে।'