সিলেটটুডে ডেস্ক

২৪ নভেম্বর, ২০২২ ১৪:৩০

মেজর জিয়ার পরিকল্পনায় জঙ্গি ছিনতাই, সমন্বয়ক ছিলেন মেহেদী

নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সামরিক শাখার কমান্ডার সৈয়দ জিয়াউল হক ওরফে মেজর জিয়ার পরিকল্পনায় আদালত প্রাঙ্গণ থেকে দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। আর জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় মোটা অংকের টাকা এনেছিলেন গ্রেপ্তার মেহেদী। পালিয়ে যাওয়ার সময় জঙ্গিরা সেই টাকা নিয়ে যান।

বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে সিটিটিসির প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান এসব কথা বলেন।

আসাদুজ্জামান বলেন, ‘সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় গ্রেপ্তার মেহেদী ঘটনার দিন আদালতে মোটা অংকের টাকা নিয়ে আসেন। তিনি আগে থেকেই পরিকল্পনা করেছিলেন ছিনিয়ে নেওয়ার পর জঙ্গিদের হাতে টাকা দেবেন।’

জাগৃতি প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ফয়সল আরেফীন দীপন হত্যা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আদালতে আনার পর গত রোববার দুপুর ১২টার দিকে পুলিশের চোখেমুখে গ্যাস স্প্রে করে পালান নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের দুই সদস্য। দীপন হত্যার দায়ে তাদের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছিল।

ঘটনার পর সিটিটিসি ইউনিটের প্রধান মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘কোর্টে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। কয়েকজন জঙ্গি সদস্যের হাজিরা ছিল। কোর্ট থেকে হাজতখানায় নেওয়ার পথে অন্য সহযোগীদের সহযোগিতায় দুই জঙ্গি পালিয়ে গেছে। দুজনই আনসার আল ইসলামের সদস্য। তাদের গ্রেফতারে কাজ করছে ডিএমপি, ডিবি, সিটিটিসিসহ পুলিশের অন্যান্য ইউনিট।’

ওই ঘটনায় ২০ জনকে আসামি করে সন্ত্রাস দমন আইনে কোতোয়ালি থানায় মামলা হয়েছে। মামলার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মেহেদীকে গ্রেফতার করে। তার সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে আজ সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয় সিটিটিসির পক্ষ থেকে। সেখানে কথা বলেন ইউনিটটির প্রধান মো. আসাদুজ্জামান।

সিটিটিসি প্রধান আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার মেহেদী জানায় আনসার-আল-ইসলামের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের নির্দেশে ঢাকার সিএমএম আদালত প্রাঙ্গণ থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জঙ্গিদের ছিনিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়। মেহেদী আদালতে জঙ্গি আসামিদের বিচারাধীন মামলায় নিয়মিত হাজিরা দেওয়ার সময় অন্য আসামিদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন এবং তাদেরকে সংগঠনের পরিকল্পনার কথা জানাতেন। সংগঠনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ২০ নভেম্বর মেহেদী ঢাকার সিএমএম আদালত প্রাঙ্গণ থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জঙ্গি আসামিদের ছিনতাইয়ের ঘটনায় সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে পলায়নে সহযোগিতা করেন।’

আসাদুজ্জামান বলেন, ‘দুই জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার আদেশ দিয়েছিলেন সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত মেজর জিয়া। আর দুই জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযানের সমন্বয়ের দায়িত্বে ছিলেন মেহেদী।’

আসাদুজ্জামান আরও বলেন, ‘জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনায় গ্রেফতার মেহেদী প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মেহেদী নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার-আল-ইসলামের শীর্ষ নেতা বরখাস্তকৃত মেজর জিয়ার সঙ্গে সমন্বয়ের পর সংগঠনের আসকরি শাখার সদস্যদের রিক্রুট করেন।’

তাদের মধ্যে ছিনতাইকৃত মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জঙ্গি আসামি মইনুল হাসান শামিম ওরফে সিফাত ওরফে সামির ওরফে ইমরান এবং মামলার এজাহার নামীয় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জঙ্গি আসামি মোজাম্মেল হোসেন ওরফে সাইমন যার সাংগঠনিক নাম শাহরিয়ার, সংগঠনের শীর্ষস্থানীয় নেতা এবং বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার আসামিদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করতেন মেহেদী।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত