সিলেটটুডে ডেস্ক

০৭ জানুয়ারি, ২০১৬ ০০:১৭

বাংলাদেশে আইএস নেই : কূটনৈতিক কোরের ডিন

“বাংলাদেশে ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিগোষ্ঠীর অস্তিত্ব নেই; দুই বিদেশি নাগরিক হত্যায় আইএস জড়িত নয় বলেই মিশর মনে করে। বিদেশি নাগরিক হত্যা অন্য কোনো পক্ষের কাজ”।

কূটনৈতিক কোরের ডিন ও ঢাকায় নিযুক্ত মিশরের রাষ্ট্রদূত মাহমুদ এজ্জাত বুধবার (৬ জানুয়ারি) ঢাকায় সংবাদ মাধ্যমে কর্মরত কূটনৈতিক প্রতিবেদকদের সংগঠন ডিক্যাব সদস্যদের সঙ্গে মত বিনিময়কালে এসব কথা বলেন তিনি।

গুলশানের মিশরীয় দূতাবাস কার্যালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে কূটনৈতিক কোরের ডিন নির্বাচিত হওয়ায় মিশরের রাষ্ট্রদূতকে অভিনন্দন জানান ডিক্যাব সভাপতি আঙুর নাহার মন্টি এবং সাধারণ সম্পাদক পান্থ রহমান। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা করেন মিশরের রাষ্ট্রদূত।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকর করা নিয়ে পাকিস্তানের ঔদ্ধত্যপূর্ণ মন্তব্য বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোনো দেশেরই অন্য কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়।

১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় মিশর বাংলাদেশে গণহত্যার প্রতিবাদ করেছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশকে যেসব দেশ প্রথমেই স্বীকৃতি দেয় মিশর তার অন্যতম। যে কারণে ১৯৭২ সালেই মিশর ঢাকায় কূটনৈতিক মিশন চালু করে। বাংলাদেশ ও মিশর দুদেশই গণতান্ত্রিক রীতি এবং শান্তি ও স্থিতিশীলতার নীতিতে বিশ্বাস করে। দুদেশের মধ্যে সম্পর্ক নিবিড়।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কূটনৈতিক কোরের এ ডিন বলেন, বাংলাদেশে আইএস আছে বলে মিশর মনে করে না। বাংলাদেশের মানুষ ধর্মপ্রাণ হলেও উগ্রপন্থায় বিশ্বাস করে না। এ কারণে এখানে আইএস এর মত উগ্রপন্থী শক্তি অবস্থান তৈরি করতে পারবে না, এটা স্বাভাবিক যুক্তিতেই বলা যায়।

দুই বিদেশি নাগরিক হত্যায় আইএস জড়িত থাকার দাবি কথা উঠলেও বাস্তবে আইএস এসব হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বলে মনে করেন না মিশরের রাষ্ট্রদূত। তার মতে, দুই বিদেশি হত্যার পেছনে অন্য কোনো পক্ষ থাকতে পারে। ঢাকার 'ডিপ্লোম্যাটিক জোন' এবং বিদেশি নাগরিকদের নিরাপত্তায় সরকারের গৃহীত ব্যবস্থারও প্রশংসা করেন তিনি।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে মাহমুদ এজ্জাত বলেন, ১৯৭১ সালে যে গণহত্যা হয়েছিল তার সঙ্গে জড়িতদের বিচার করার অধিকার বাংলাদেশের আছে। এটা তো সাধারণভাবেই গ্রহণযোগ্য যে একটি স্বাধীন দেশের বিচার ব্যবস্থা সে দেশে সংঘটিত অপরাধের বিচার করবে এবং অপরাধীদের শাস্তি দেবে। অতএব কোনো দেশেরই আর একটি দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়। একটি দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অন্য দেশের হস্তক্ষেপ মিশর কোনো ভাবেই সমর্থন করে না।

সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন সন্ত্রাসবিরোধী জোট সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই জোট সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে সমন্বিত লড়াইয়ের একটি প্লাটফর্ম। বাংলাদেশের এই জোটে যোগ দেওয়া প্রশংসনীয় এবং শান্তির প্রতি দৃঢ় অঙ্গীকারেরই প্রতিফলন।

সৌদি আরব ও ইরানের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করা সম্পর্কে মিশরের রাষ্ট্রদূত বলেন, ইরানে সৌদি দূতাবাসে হামলার ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং ভিয়েনা কনভেনশনের সরাসরি লঙ্ঘন। মিশর এর নিন্দা জানিয়েছে।

একজন শিয়া নেতার বিচার এবং মৃত্যুদণ্ডের রায় কার্যকর করা নিয়ে ঘটনার সূত্রপাত উল্লেখ করে তিনি বলেন, সৌদি আরবের অধিকার রয়েছে দেশের অভ্যন্তরে কারও অপরাধের জন্য বিচার করার। এক্ষেত্রে ইরান সংক্ষুব্ধ হলে যৌক্তিকভাবে গ্রহণযোগ্য উপায়েই প্রতিবাদ জানানো উচিত ছিল। যেভাবে সৌদি দূতাবাসে সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়েছে তা কোনো ভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত