সিলেটটুডে ডেস্ক

১৪ জানুয়ারি, ২০১৬ ২২:০০

মাদ্রাসা ছাত্রদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া তাণ্ডব ঘটনায় ৮ মামলা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এক মাদ্রাসা ছাত্রের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সহপাঠীদের শহরজুড়ে দিনভর তাণ্ডবের ঘটনায় আটটি মামলা হয়েছে। আট মামলায় অজ্ঞাতনামা ৬ হাজারের বেশি লোককে আসামি করা হয়েছে।

মঙ্গলবারের ওই ঘটনায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় করা সাত মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় অন্তত পাঁচ হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে বলে জানান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মফিজুল ইসলাম ভুঁইয়া।

এর আগে সেদিন রেলস্টেশনে হামলার ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয় ১২শ’ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন স্টেশন মাস্টার মহিদুর রহমান।

তবে মাদ্রাসা ছাত্র মাসুদুর রহমান নিহত হওয়ার ঘটনায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি বলে জানান তিনি। মোট ৮ মামলা করা হলেও এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয় নি জানিয়েছেন এ পুলিশ কর্মকর্তা।

সোমবার বিকালে শহরের জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসার এক ছাত্র মোবাইল ফোনসেট কেনার জন্য জেলা পরিষদ মার্কেটে গেলে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে তাকে চড় মারেন এক দোকানি। এ খবর পেয়ে ওই মাদ্রাসার অর্ধশতাধিক ছাত্র দোকানটি ভাঙচুর করে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে শুরু হয় সংঘর্ষ।  এতে আহত মাদ্রাসাছাত্র মাসুদুর রহমান মঙ্গলবার ভোরে মারা যান।

এরপর মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শহরজুড়ে তাণ্ডব চালায় মাদ্রাসাছাত্ররা। এতে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ও ভাংচুর করা হয়। ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ সংগীতাঙ্গন ভাংচুরের পাশাপাশি সুর সম্রাটের স্মৃতিবিজড়িত বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রও পুড়িয়ে দেয় মাদ্রাসাছাত্ররা। তারা জেলা শিল্পকলা একাডেমি, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমপ্লেক্সের ব্যাংক এশিয়া,  প্রশিকা মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্রেও ভাংচুর চালায়।

সেদিন রেলস্টেশন ভাংচুর এবং লাইন থেকে স্লিপার তুলে নেওয়ায় ঢাকার সঙ্গে চট্টগ্রাম ও সিলেটের ট্রেন চলাচল সাত ঘণ্টা বন্ধ ছিল। পরে সন্ধ্যার দিকে রেল যোগাযোগ পুনঃচালু হয়।

পুলিশ কর্মকর্তা মফিজুল সংবাদমাধ্যমকে বলেন, সদর হাসপাতাল ভাংচুরের ঘটনায় হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক (ভারপ্রাপ্ত) রানা নুরুস শামস বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ৭০০ থেকে ৮০০ জনকে, ইন্ডাস্ট্রিয়াল স্কুল ভাংচুরের ঘটনায় প্রধান শিক্ষক চমন সিকান্দার জুলকার নাঈন বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ৮০০ থেকে ৯০০ জনকে, প্রশিকা কার্যালয় ভাংচুরের ঘটনায় ম্যানেজার হুমায়ূন কবির বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ৭০০ থেকে ৮০০ জনকে আসামি করেছেন।

এছাড়া হালদারপাড়া এলাকায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাংচুরের ঘটনায় ব্যবসায়ী ফেরদৌস বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ৩০০ থেকে ৪০০ জনকে এবং তিতাস সাহিত্য সংস্কৃতি পরিষদের কার্যালয় ভাংচুরের ঘটনায় সংগঠনের সম্পাদক বাছির দুলাল বাদী হয়ে ৮০০ থেকে ৯০০ জনকে আসামি করেছেন।

আলাউদ্দিন সংগীতাঙ্গনের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মান্নান সরকার বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় তিন শতাধিক লোককে আসামি করে এবং শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্মৃতি পাঠাগারের সাধারণ সম্পাদক আবদুন নুর বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ৮০০ থেকে ৯০০ জনকে আসামি করে আরেকটি মামলা করেছেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত