সিলেটটুডে ডেস্ক

১৩ জানুয়ারি, ২০১৬ ১৪:২৪

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মাদ্রাসা ছাত্রদের তাণ্ডব ছিল বিনা বাধায়

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গতকাল মঙ্গলবার দিনভর মাদ্রাসা ছাত্রদের সহিংস বিক্ষোভের পর আজ বুধবার সেখানে একেবারে উল্টো চিত্র বিরাজ করছে।

স্থানীয় সংবাদদাতার বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, গতকাল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার পরও গভীর রাত পর্যন্ত শহরজুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছিল। কিন্তু আজ সকাল থেকেই শহরে পরিস্থিতি একেবারে স্বাভাবিক।

শুধুমাত্র আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যাপক উপস্থিতি এবং যেসব স্থানে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে সে স্থান না দেখলে বোঝারই উপায় নেই গতকাল সেখানে এত বড় তাণ্ডব হয়ে গেছে।

বিবিসি আরও জানিয়েছে, মঙ্গলবারের সহিংসতার শিকার রেলস্টেশন, ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ সঙ্গীত বিদ্যালয়, আওয়ামীলীগ কার্যালয় ইত্যাদি ঘটনাস্থলগুলো অবিকল পড়ে রয়েছে। সেসব জায়গায় এখনো কেউ হাত দেয়নি।

এ নিয়ে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত থানায় কোনও মামলাও হয়নি বলে জানাচ্ছেন সংবাদদাতারা।

গতকালের এই সহিংসতায় বিকেল পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কার্যত কোনও বাধা দেয়নি বলেও অভিযোগ রয়েছে।

এর কারণ সম্পর্কে বিবিসি বাংলাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের স্থানীয় সংসদ সদস্য উবাইদুল মুক্তাদির চৌধুরী বলেন, "প্রশাসন বড় ধরণের শক্ত অবস্থানে যায়নি এজন্য যে আর কোন হতাহতের ঘটনা ঘটুক এটা প্রশাসন চাইছিল না।"

"আমরাও চাইনি। আমরা আমাদের যেসব কর্মী আছে তাদেরকে মবিলাইজ করতে পারতাম। কিন্তু আমরা অনেক চিন্তাভাবনা করে দেখেছি যে এটাকে আমরা পলিটিকালি নিয়ে যাব না।"

"দোকানদারদের সাথে একটা ঘটনা ঘটে জানমালের ক্ষতি হয়ে গেছে। কিভাবে হয়েছে এটা আমরা জানিনা, একটা মৃত্যু ঘটেছে। কিন্তু আরো যাতে মৃত্যু না হয় সেটা এড়ানোর চেষ্টা করেছিলাম।"

এই মনোভাবকে তারা নমনীয় মনে করে তারা তাণ্ডব চালিয়েছে বলে উল্লেখ করেন ক্ষমতাসীন দলের এই এমপি।

উল্লেখ করা যেতে পারে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে একটি কওমি মাদ্রাসার পাশে বাজারে মোবাইল ফোন কেনা নিয়ে বাক-বিতণ্ডা থেকে মাদ্রাসাটির ছাত্রদের সাথে ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষ হয় গত সোমবার। সংঘর্ষে পুলিশ এবং সরকার দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগও জড়িয়ে পড়েছিল।

পরে সংঘর্ষে আহত এক মাদ্রাসা ছাত্রের মৃত্যু হলে মঙ্গলবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন মাদ্রাসা থেকে শত শত ছাত্র লাঠিসোটা নিয়ে শহরটিতে বিক্ষোভ মিছিল বের করে।

বিক্ষোভকারি মাদ্রাসার ছাত্ররা রেল লাইন এবং সড়ক অবরোধ করে অন্যান্য জায়গার সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে অগ্নিসংযোগ, হামলা, ভাংচুর চালায়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত