০৪ মার্চ, ২০১৬ ১৫:২৮
ঢাকার রামপুরায় দুই শিশু খুনের ঘটনায় তাদের বাবার করা মামলায় মাকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি পেয়েছে পুলিশ।
রামপুরা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মুস্তাফিজুর রহমান শুক্রবার (৪ মার্চ) দুপুরে দুই শিশুর মা মাহফুজা মালেক জেসমিনকে ঢাকার হাকিম আদালতে হাজির করে দশ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন।
অন্যদিকে আসামির পক্ষে মো. সাফায়েত আলী এর বিরোধিতা করে জামিনের আবেদন করেন।
শুনানি শেষে মহানগর হাকিম স্নিগ্ধা রানী চক্রবর্তী পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে মাহফুজাকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন।
আগের দিন র্যাবের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই নারী নিজেই তার সন্তানদের শ্বাসরোধে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।
এরপর বৃহস্পতিবার রাতে শিশু দুটির বাবা আমানুল্লাহ রামপুরা থানায় স্ত্রীর বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
শিশু দুটির জানাজা ও দাফনের পর বুধবার আমানুল্লাহ ও জেসমিনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে ঢাকায় নিয়ে এসেছিল র্যাব।
এরপর বৃহস্পতিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের মুখপাত্র মুফতি মাহমুদ খান বলেন, 'মানসিকভাবে সুস্থ' অবস্থায় হত্যার দায় স্বীকার করেন শিশু দুটির মা। ''ছেলেমেয়ের লেখাপড়া ও ভবিষ্যৎ নিয়ে তিনি দুশ্চিন্তায় ছিলেন। এর একপর্যায়ে ছেলেমেয়েকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন।''
মাহফুজার স্বীকারোক্তির বরাতে র্যাবের সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত ২৯ ফেব্রুয়ারি মেয়ে অরণী যখন গৃহ শিক্ষকের কাছে পড়ছিল, তার মা ও ভাই তখন শোবার ঘরে ঘুমাচ্ছিল। গৃহ শিক্ষক চলে যাওয়ার পর মাহফুজা তার মেয়েকেও ঘুমাতে ডাকেন।
“অরণী বিছানায় যাওয়ার পর মাহফুজা তার ওড়না দিয়ে পেঁচিয়ে মেয়ের শ্বাসরোধ করেন। এক পর্যায়ে ধস্তাধস্তিতে মেয়ে বিছানা থেকে পড়ে যায়। মেয়ের মৃত্যু হয়েছে নিশ্চিত হওয়ার পর ছেলেকেও একইভাবে ওড়না দিয়ে পেঁচিয়ে হত্যা করেন।”
মানসিকভাবে সুস্থ একজন মা লেখাপড়া নিয়ে দুশ্চিন্তা থেকে কেন নিজের হাতে দুই সন্তানকে হত্যা করতে যাবেন, সে প্রশ্নের সদুত্তর র্যাবের সংবাদ সম্মেলনে মেলেনি।
এ ঘটনায় দুই শিশুর বাবা পোশাক ব্যবসায়ী আমানুল্লাহর সংশ্লিষ্টতার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলেও জানিয়েছে র্যাব।
তবে মাহফুজার ভাই জাকির হোসেন সরকার র্যাবের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে বলেন, ''আমার বোন কাউকে হত্যা করতে পারে না। সে তার সন্তানদের অনেক ভালোবাসতো।''
এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করে তিনি বলেন, ''র্যাব বললেও আমার বোন তো নিজ মুখে সবার সামনে বলেনি যে সে তার সন্তানদের হত্যা করেছে।''
সম্পর্কে চাচাত ভাই-বোন আমানুল্লাহ-জেসমিন দম্পতির দুই সন্তানের মধ্যে বড় নুসরাত আমান অরণী (১৪) ভিকারুননিসা নূন স্কুলে পড়ত, ছোটটি আলভী আমান (৬) পড়ত হলি ক্রিসেন্ট স্কুলে।
আপনার মন্তব্য