নিউজ ডেস্ক

০৫ এপ্রিল, ২০১৬ ১০:৫৬

আত্মসমর্পণ করতে আদালতে খালেদা

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় নাশকতার মামলায় বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে আদালতে পৌঁছেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে পৌঁছেন তিনি। এর আগে সকাল সোয়া ৯টার দিকে গুলশানের বাসভবন ফিরোজা থেকে আদালতের উদ্দেশ্যে রওনা হন তিনি।

আইনজীবীরা জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার প্রথমে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত ভবনের দ্বিতীয় তলার আদালত কক্ষে যাবেন। সেখানে গ্রেফতারি পরোয়ানা সংক্রান্ত মামলায় আত্মসমর্পণ করে তিনি আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন আবেদন করবেন।

এরপর ওই ভবনের ৬ তলায় অবস্থিত ঢাকার তিন নম্বর বিশেষ আদালতে গ্যাটকো দুর্নীতি মামলায় আত্মসমর্পন করে জামিন চাইবেন। সর্বশেষ ঢাকা সিএমএম আদালতে হাজির হয়ে আরও ৩টি মামলায় জামিন চাইবেন তিনি।

খালেদা জিয়ার  অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া বলেন, 'খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকায় আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে তিনি আজ  আত্মসমর্পণ করছেন।

খালেদা জিয়া তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তার বয়স এখন ৭০। তাই সব দিক বিবেচনায় আদালত তার জামিন মঞ্জুর করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তার এই আইনজীবী।

৩০ মার্চ যাত্রাবাড়ীতে বাসে পেট্রলবোমা মেরে মানুষ হত্যার ঘটনায় করা বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসনসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লার আদালত।

একই সঙ্গে পরোয়ানাভুক্ত আসামিরা গ্রেফতার হয়েছেন কিনা, তা পুলিশকে ২৭ এপ্রিল জানাতে বলেছেন আদালত।


এ মামলায় খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করা হয়েছে।

পরোয়ানাভুক্ত উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বরকত উল্লাহ বুলু, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার মাহবুব হোসেন, চেয়ারপারসনের প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান সোহেল, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, সাবেক ছাত্রদল সভাপতি আজিজুল বারী হেলাল, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, বিএনপি নেতা এমএ কাইয়ুম, লতিফ, বাদল, সালাউদ্দিন আহম্মেদ, নবীউল্লাহ নবী।

এছাড়া মামলার চার্জশিটভুক্ত ৩৮ আসামির মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এমকে আনোয়ার, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব আমান উল্লাহ আমানসহ ছয়জন জামিনে এবং চারজন কারাগারে রয়েছেন।

২০১৫ সালের ৬ মে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপ-পরিদর্শক বশির উদ্দিন ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

মামলায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে পৃথক অভিযোগপত্র দেয়া হয়। এতে খালেদা জিয়াসহ ৩১ জনকে পলাতক দেখানো হয়। এ মামলায় ৮১ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। অভিযোগপত্রে হুকুমের আসামি হিসেবে খালেদা জিয়াকে এক নম্বরে রাখা হয়।

২০১৫ সালের ২৩ জানুয়ারি সরকারবিরোধী আন্দোলনে যাত্রাবাড়ী কাঠেরপুল এলাকায় গ্লোরী পরিবহনের যাত্রীবাহী বাসে পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করা হয়। এতে বাসের ২৯ যাত্রী দগ্ধ হন। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হলে ১ ফেব্রুয়ারি নূর আলম (৬০) নামে এক যাত্রী মারা যান।

ঘটনার পরদিন ২৪ জানুয়ারি খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করে দুটি মামলা করে যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশ। দুই মামলাতেই খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করা হয়। এর মধ্যে একটি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হল। মামলায় পেট্রলবোমা নিক্ষেপের পরিকল্পনাকারী হিসেবে বিএনপির ৫০ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়।

প্রসঙ্গত, এ দুই মামলা ছাড়াও গুলশান থানার নাশকতার একটি মামলা, গ্যাটকো দুর্নীতি মামলা এবং মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে ‘বিতর্কিত’ বক্তব্য দেয়ায় রাষ্ট্রদ্রোহের একটি মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আদালতের সমন রয়েছে। এসব মামলায়ও তিনি হাজির হতে পারেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত