সিলেটটুডে ডেস্ক

১৫ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:১৩

টিএসসিতে পুলিশের বিরুদ্ধে নারী নিপীড়নের অভিযোগ, পরে ক্ষমা প্রার্থনা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসি এলাকায় ঢাকা মহানগর পুলিশের কনস্টেবল রুহুল আমিন একজন ছাত্রীর সঙ্গে অসৌজন্যমূলক ব্যবহার করার পর ক্ষমা চেয়েছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয় টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের পাশে এ ঘটনা ঘটে।
 
নিপীড়নের শিকার ওই নারীর নাম হাবিবা জান্নাত। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান, প্রাণ পরিসংখ্যান ও তথ্য পরিসংখ্যান বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ফেডারেশনের সহ-সভাপতি।

তিনি  ঘটনার জন্য পুলিশ সদস্যের বিচার দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন। পরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসে বিষয়টি মীমাংসা করেন।
 
ঘটনার পর অভিযোগ পেয়ে রাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এম আমজাদ আলীর সঙ্গে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বৈঠক হয়। ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়সহ রমনা জোনের পুলিশ কর্মকর্তারা প্রক্টরের কার্যালয়ে যান। সেখানে মেয়েটির বন্ধু ও রাজনৈতিক সহকর্মী, ছাত্র সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে ঘটনার জন্য পুলিশ সদস্য রুহুল আমিন দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা চান।

জানা যায়, বৃহস্পতিবার পহেলা বৈশাখের সন্ধ্যায় দোয়েল চত্বরের দিক থেকে টিএসসির দিকে পুলিশের আইজির গাড়ি আসার সময় টিএসসিতে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য রুহুল আমিন রাজু ভাস্কর্যের পাশ থেকে লোকজনকে সরিয়ে দিচ্ছিলেন। এসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ফেডারেশনের সহ-সভাপতি হাবিবা জান্নাতকেও সরে যেতে বলেন। পরে জান্নাত ওই স্থান থেকে সরে যান। এরপর জান্নাত আবার একই স্থানে গিয়ে দাঁড়ান। তখন পুলিশের আরেকটি গাড়ি এলে তাকে সরে যেতে বলা হয়।

একপর্যায়ে ওই পুলিশ সদস্য তার গায়ে হাত দিয়ে সরিয়ে দেন। হাবিবা জান্নাত গায়ে হাত দেয়ার প্রতিবাদ করলে ওই পুলিশ তাকে আপত্তিকর ভাষায় গালি দেয়। এসময় বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতারা ওই পুলিশ সদস্যকে তার আচরণের জন্য ক্ষমা চাইতে বলে। পরে পুলিশের কর্মকর্তার পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে আইনি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানানো হয়।

এরপর জান্নাত ওই পুলিশ সদস্যের বিচার চেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন। পরে প্রক্টর অফিসে দীর্ঘ সময় বৈঠক করে বিষয়টি পুলিশ কর্মকর্তারা মীমাংসা করেন।
 
অভিযোগকারী হাবিবা জান্নাত বলেন, ‘আইজিপির গাড়ি আসলে আমাদেরকে সরে যেতে বলেন এবং আমার গায়ে হাত দেন। তারপর আমি প্রতিবাদ করলে পুলিশ সদস্য খারাপ ভাষায় গালি দেয়। পরে আমি প্রক্টরেরর কাছে লিখিত অভিযোগ করি।’
 
এ ব্যাপারে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় বলেন, ‘আমরা সতর্ক ছিলাম। যে অভিযোগ এসেছে সেটি কাঙ্ক্ষিত নয় । এজন্য আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাচ্ছি।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক এএম আমজাদ বলেন, ‘নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে গিয়ে পুলিশের সাথে ভুল বোঝাবুঝি হয়। পরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছাত্র নেতাদের সাথে বসে বিষয়টি সমাধান করেন। তবে পুলিশ গালি দিয়ে থাকলে তা অবশ্যই খারাপ হয়েছে।’

এদিকে এ ঘটনার পর একাধিক বাম সংগঠনের ছাত্রনেতারা মিছিল সহকারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের ভবন অভিমুখে যান।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত