সিলেটটুডে ডেস্ক

২৫ এপ্রিল, ২০১৬ ১৫:৩০

বিচারক অপসারণ সংসদের হাতে রেখে আইনের খসড়া অনুমোদন

'বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট বিচারক তদন্ত আইন ২০১৬' এর খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এই আইনের মাধ্যমে বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা আবারও ফিরে পেলো জাতীয় সংসদ।

সোমবার (২৫ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে ‘বাংলাদেশ ‍সুপ্রিম কোর্ট বিচারক (তদন্ত) আইন’ এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন পায়।

বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, “সংবিধানের দায়বদ্ধতা থেকে এ আইন করা হচ্ছে। মূলত বিচারপতিদের অসদাচরণ ও অসামর্থ্যের বিষয়টি আইনে রাখা হয়েছে।”

তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এলে তার তদন্ত হবে এ আইনের মাধ্যমে।

তদন্তে কোনো বিচারকের অসদাচরণ বা অসামর্থ্য প্রমাণিত হলে তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হবে। এরপর সংসদের দুই তৃতীয়াংশ সদস্যের ভোটে যে  সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে, সেটি যাবে রাষ্ট্রপতির কাছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “রাজনীতি বিদ্বেষপ্রসূত কোনো বিষয় নয়। বিচারক হয়েও যদি অবিচারকসুলভ কাজ করেন, তার তদন্ত হবে।”

কোনো বিচারকের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ করলে খসড়া আইনে দুই বছরের জেল ও ৫ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে বলেও জানান সচিব।

“বিচারপতিদের যেন কোনো অসম্মান না হয়- সেই সুরক্ষা আইনে নিশ্চিত করা হয়েছে।”

তিনি বলেন, “বিচারপতিদের সাথে আলোচনার সুযোগ রয়েছে, এরপর চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য আইনটি মন্ত্রিসভায় আসবে।”

বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে দিতে ২০১৪ সালের ১৮ অগাস্ট সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাবে সায় দেয় মন্ত্রিসভা। এরপর ১৭ সেপ্টেম্বর সংবিধানের ষোড়শ সংশোধন বিল সংসদে পাস হয়।

এর ফলে ‘অসদাচরণ ও অসামর্থ্যের’ অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিচারকের অপসারণ ক্ষমতা সংসদের হাতে যায়, যে ক্ষমতা স্বাধীনতার পর চার বছর পর্যন্ত আইন প্রণেতাদের হাতে ছিল। উচ্চ আদালতের অপসারণ প্রক্রিয়া কী  হবে, তা ঠিক করে আইন কমিশন গত মার্চে নতুন এই আইনের খসড়া তৈরি করে।

১৯৭২ সালে সংবিধান প্রণয়নের সময় উচ্চ আদালতের বিচারকদের পদের মেয়াদ নির্ধারণ ও তাদের অভিশংসনের ক্ষমতা সংসদের হাতে ছিল। ১৯৭৫ সালে সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনের মাধ্যমে বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির হাতে ন্যস্ত হয়।

২০১২ সালে তৎকালীন স্পিকার ও বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের একটি রুলিংকে কেন্দ্র করে কয়েকজন সংসদ সদস্য হাই কোর্টের একজন বিচারপতিকে অপসারণের দাবি তোলেন। সে সময়ই বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে আনার দাবি জোরালো হয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত