সিলেটটুডে ডেস্ক

৩০ এপ্রিল, ২০১৬ ২৩:০৯

‘ধর্মীয় অবমাননা’র অভিযোগ প্রত্যাহার, তবু হত্যা

২০১২ সালে টাঙ্গাইলের হিন্দু দর্জি নিখিল চন্দ্র জোয়ারদারের বিরুদ্ধে ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগ তুলে পিটুনি দিয়ে পুলিশে দেয় এলাকাবাসী। এই অভিযোগে তিন মাস কারাগারে ছিলেন নিখিল। এরপর তাঁর বিরুদ্ধে ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।

শনিবার দুপুরে নিজ দোকানের সামনে নিখিল চন্দ্র জোরদারকে হত্যা করা হয়। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন আইএস এ হত্যার দায় স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছে সাইট ইন্টিলিজিন্স।

গোপালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অাব্দুল জলিল জানান, ৫৪ বছর বয়সী নিখিল চন্দ্রকে কয়েকজন লোক মোটরসাইকেলে এসে তাঁর দোকানের সামনেই কুপিয়ে হত্যা করে।

তাঁর বিরুদ্ধে ধর্মবিরোধী কথা বলার অভিযোগ ছিল জানালেও এই অভিযোগে ঠিক কি ছিল, তার বিস্তারিত পুলিশ জানাতে পারেনি।

নিহত নিখিল জোয়ারদারের স্ত্রী আরতি জোয়ারদার ছিলেন এই হত্যাকান্ডের প্রত্যক্ষদর্শী।

তিনি জানান, ঘটনার মাত্র পাঁচ মিনিট আগেই তিনি তাঁর স্বামীকে পানি দিয়ে এসেছিলেন।

একটু পরে গিয়েই দেখেন, দুজন লোক তাঁর স্বামীকে কুপিয়ে হত্যার পর চলে যাচ্ছে। তাদের গায়ের কাপড়ে লেগে ছিল রক্তের দাগ।

আরতি জোয়ারদার জানান, হত্যাকারীরা এসেছিল মোটর সাইকেলে।

নিহত নিখিল চন্দ্র জোয়ারদার যে টেইলরিং শপটা চালাতেন সেটা তাদের বাড়ির কাছেই।

গোপালপুর থানার পুলিশ কর্মকর্তা আসলাম খান জানিয়েছেন, যারা নিখিল চন্দ্র জোয়ারদারের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ দায়ের করে, তারা নিজেরাই পরে অভিযোগটি প্রত্যাহার করে নেয়।

কিন্তু সেই অভিযোগের বিস্তারিত পুলিশ জানাতে পারেনি।

তবে নিখিল চন্দ্র জোয়ারদারের কন্য লিপি চন্দ্র বন্যা বলেছেন, তার বাবা কখনোই ধর্ম বিরোধী কথা বলেন নি।

"স্থানীয় এক চা দোকানে কথাবার্তার এক পর্যায়ে তিনি 'হুজুরেরও দাড়ি আছে, ছাগলেরও দাড়ি আছে' বলে মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ করা হয়েছিল। কিন্তু এরকম কথা তিনি কখনোই বলেন নি।"

লিপি চন্দ্র বন্যা আরও জানান, তার বাবাকে মিথ্যে অভিযোগে পুলিশ গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। ২৪ দিন পর তিনি ছাড়া পান।
সূত্র : বিবিসি বাংলা

আপনার মন্তব্য

আলোচিত