নিজস্ব প্রতিবেদক

০৩ ফেব্রুয়ারি , ২০১৭ ১৭:৫৫

গণজাগরণের ৪ বছর পূর্তিতে শাহবাগে কর্মসূচি রোববার

যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে গড়ে ওঠা গণআন্দোলন গণজাগরণের ৪ বছর পূর্তিতে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে গণজাগরণ মঞ্চ।

গণজাগরণ মঞ্চের পক্ষ থেকে প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ২০১৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে প্রতিবাদের দীপ্র মশাল হাতে নিয়ে চতুর্থ বর্ষপূর্তির মাহেন্দ্রক্ষণে এসে দাঁড়িয়েছে গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলন। শাহবাগের জনসমুদ্র থেকে এই আন্দোলন আজ ছড়িয়ে গেছে বিশ্বময়। গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলন সেই ইতিহাসেরই গর্বিত উত্তরাধিকার, যে ইতিহাস হাজার বছরের বাঙালির হার না মানার দৃঢ় সংগ্রামের চিরন্তন ইতিহাস, যে ইতিহাস মহাকাব্যিক মুক্তিযুদ্ধের বীরত্বের ইতিহাস। গণজাগরণ মঞ্চ যে মিলনের মোহনায় এনে দাঁড় করিয়েছে এদেশের সর্বস্তরের মানুষকে, মুক্তির চিরন্তন আকাঙ্ক্ষার যে শপথে লক্ষ লক্ষ মানুষের শোণিতধারায় বাজিয়েছে যে মহাসঙ্গীত, সেই সঙ্গীতের সুরে বিশ্ব অবাক বিস্ময়ে তাকিয়েছে ভূগোলকের এই ক্ষুদ্র অথচ আত্মমর্যাদায় সূর্যপ্রতীম এই জনপদটির দিকে।

ইতিহাসের কলঙ্কমোচনের আকাঙ্ক্ষার শাহবাগ মুক্তির চেতনার যে ফল্গুধারা বইয়ে দিয়েছে, তাতে অবশ্যম্ভাবীভাবে ধুয়ে যাবে পৃথিবীর ইতিহাসের নিকৃষ্টতম কিছু জীব, যারা ঘৃণ্যতম গণহত্যার খলনায়ক হিসেবে আমাদের জাতীয় লজ্জার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিলো। কাদের মোল্লা থেকে শুরু করে কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধীদের ঔদ্ধত্যের জবাব দিয়েছে শাহবাগ, মুক্তিকামী বাঙালির হাতে তুলে দিয়েছে বিজয়ের স্মারক। গণমানুষের ঐক্যের শক্তি নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথে দৃপ্ত শপথে এগিয়ে চলছে গণজাগরণ মঞ্চ।

সকল মানুষের সমান অধিকার, সকল মত-পথের মানুষের মাথা উঁচু করে বাঁচবার অধিকার, বৈষম্যহীন দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ, যে বাংলাদেশ গড়ার পবিত্র প্রত্যয়ে প্রাণ দিয়েছেন এদেশের ত্রিশ লক্ষ মুক্তিকামী মানুষ, সেই শত বছরের সোনার বাংলার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে গণজাগরণ মঞ্চ তার আন্দোলন চালিয়ে যাবে। আর এই আন্দোলনের চালিকাশক্তি হচ্ছে এদেশের সর্বস্তরের সাধারণ শান্তিপ্রিয় মানুষ, যারা জন্মভূমির প্রয়োজনে প্রাণ দিয়েছে বারবার।

আমরা বর্তমানে এমন এক সময়ের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে, যখন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম স্তম্ভ অসাম্প্রদায়িকতার মূলে বারবার আঘাত করে যাচ্ছে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি। পাঠ্যপুস্তক সাম্প্রদায়িকীকরণের মাধ্যমে কলুষিত করা হচ্ছে শিক্ষাঙ্গন, অত্যন্ত সচেতনভাবে শিক্ষার্থীদের মনে মৌলবাদের বিষবাষ্প প্রবেশ করিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রশাসন এবং সরকারের প্রত্যেক স্তরে স্তরে সাম্প্রদায়িকতা বিস্তারের নীলনকশা বাস্তবায়িত হচ্ছে। রাষ্ট্রীয় শক্তি প্রয়োগ করে প্রগতিশীল এবং মুক্তিকামী মানুষের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে।

শিক্ষাঙ্গন থেকে শুরু করে রাষ্ট্রের প্রতিটি কাঠামোতে পাকিস্তানীকরনের এই অপতৎপরতার বিরুদ্ধে গণজাগরণ মঞ্চ সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে লড়াই চালিয়ে যাবে।

গণজাগরণ দিবস উপলক্ষে কর্মসূচি:

৫ ফেব্রুয়ারি:
দুপুর ২:০০ থেকে বিকাল ৩টা: চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা 'রঙ তুলিতে স্বপ্নের বাংলাদেশ'
বিকাল ৩টা: গণজাগরণ দিবসের র‍্যালি 'জাগরণ যাত্রা'
বিকাল ৩:৩০টা: 'সাম্প্রদায়িক আগ্রাসন, উগ্র মৌলবাদ, '৭২ এর সংবিধান; কোন পথে বাংলাদেশ?' শীর্ষক আলোচনা সভা
সন্ধ্যা ৬টা: সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান

যুদ্ধাপরাধীমুক্ত, জামায়াত-শিবিরমুক্ত মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষার বৈষম্যহীন দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে সপরিবারে, সবান্ধবে কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকার আহ্বান জানিয়েছে গণজাগরণ মঞ্চ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত