সিলেটটুডে ডেস্ক

২৫ এপ্রিল, ২০১৭ ১৭:৫৩

জুলহাজ-তনয় হত্যার ১ বছর : এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে খুনিরা

জুলহাজ মান্নান ও মাহবুব তনয়

যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএইডের কর্মকর্তা ও সমকামীদের অধিকার বিষয়ক ম্যাগাজিন 'রূপবান' এর সম্পাদক জুলহাজ মান্নান ও তার বন্ধু নাট্যকর্মী মাহবুব তনয় হত্যার আজ এক বছর। এই এক বছরেও ধরা পড়েনি খুনিরা, তদন্তে হয়নি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি।

মামলার তদন্ত সংস্থা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ দাবি করেছিল, পাঁচ খুনিকে তারা শনাক্ত করেছেন তারা। কিন্তু এখনও গ্রেপ্তার করা যায়নি খুনিদের।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ডিবি দক্ষিণ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত উপ-কমিশনার মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ জানান, মামলার তদন্তে অগ্রগতি হয়েছে। আমরা পাঁচ খুনিকে শনাক্ত করেছি। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

এ মামলায় দু'জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এদের মধ্যে একজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছে।

এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় হত্যা ও অস্ত্র আইনে মামলা হয়েছে দু'টি। মামলা দুটির মধ্যে হত্যা মামলাটি তদন্ত করছেন ডিবির ইন্সপেক্টর বাহাউদ্দিন ফারুকী আর অস্ত্র মামলার তদন্ত করছেন ডিবির পুলিশ পরিদর্শক নুরুল আফসার। গত ৯ এপ্রিল হত্যা মামলার প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল। কিন্তু পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল না করায় আদালত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নতুন দিন নির্ধারণ করেন ৮ মে।

তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলে বার বার সময় নিচ্ছেন তদন্ত কর্মকর্তারা। হত্যা মামলায় প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ২৭ বার এবং অস্ত্র মামলায় প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ২৬ বার সময় নিয়েছেন তারা।

এদিকে, নিহত জুলহাজ ও মাহবুবের পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন, এই এক বছরে মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তাদের সঙ্গে যোগাযোগও করেননি।

জুলহাজ ও তনয় হত্যাকাণ্ডের পরদিন আল-কায়েদার পক্ষ থেকে ও আনসার আল ইসলাম-৫ এর নামে এই হত্যার দায় স্বীকার করা হয়। এরপর গোয়েন্দা পুলিশ গত বছরের ১৫ মে কুষ্টিয়া থেকে শরীফুল ইসলাম শিহাব নামে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। পরে গত ১৭ অক্টোবর সায়েদাবাদ এলাকা থেকে রশিদুন্নবী ভুঁইয়া টিপু ওরফে রায়হান ওরফে রাসেলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গোয়েন্দারা জানান, অন্যান্য ব্লগার-প্রকাশক হত্যাকাণ্ডের মতো জুলহাজ-তনয় হত্যাকাণ্ডের নির্দেশনাও এসেছে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সামরিক শাখার প্রধান সেনাবাহিনী থেকে বহিষ্কৃত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক। আর জিয়ার নির্দেশে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের স্লিপার সেলগুলি পরিচালনা করতো সেলিম ও শরীফুল।

গত বছরের ২০ জুন ঢাকার খিলগাঁওয়ে পুলিশের সঙ্গে 'বন্দুকযুদ্ধে' নিহত হয় শরীফুল। আর সেলিম পলাতক আছে। গত বছরের ১৮ আগস্ট সেলিমকে ধরিয়ে দিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে ৫ লাখ টাকা পুরষ্কার ঘোষণা করা হয়। ওই ঘোষণায় বলা হয় সেলিম ওরফে ইকবাল ওরফে মামুন ওরফে হাদি-২ এর উচ্চতা ৫ ফুট ১০ ইঞ্চি, গায়ের রং শ্যামলা এবং সে চশমা পরে।

২০১৬ সালের ২৫ এপ্রিল কলাবাগানের লেক সার্কাস রোডের বাড়িতে ইউএসএইড কর্মকর্তা জুলহাস মান্নান ও তার বন্ধু নাট্যকর্মী মাহবুব তনয়কে কুপিয়ে হত্যা করে জঙ্গিরা। পরে ওই ঘটনায় জুলহাসের বড় ভাই মিনহাজ মান্নান ইমন বাদী হয়ে কলাবাগান থানায় একটি মামলা করেন। আর কলাবাগান থানার এসআই মোহাম্মদ শামীম একটি অস্ত্র মামলা দায়ের করেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত