নিজস্ব প্রতিবেদক

৩০ এপ্রিল, ২০১৮ ২৩:৩২

বজ্রপাতে সিলেটেসহ সারাদেশে একদিনেই ১৮জনের মৃত্যু

সারাদেশে সোমবারের বজ্রপাতের ঘটনায় অন্তত ১৮জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। যার মধ্যে সিলেট বিভাগের শ্রীমঙ্গল, কমলগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জের ৪জন রয়েছেন। আর সারা বাংলাদেশে বজ্রপাতে নিহত ১৭ জনের মধ্যে ১০ জনই কৃষক। এর আগে রোববার সারাদেশে ১৬জন মারা যান।

শ্রীমঙ্গল(মৌলভীবাজার): কালীঘাট ইউনিয়নের লাখাইছড়া চা বাগানে দুপুরে কাজ করা সময় বজ্রপাতে অজয় গোয়ালা (২০) নামের এক চা শ্রমিক মারা গেছেন। তিনি ওই বাগানের বাসিন্দা চা শ্রমিক দীপক গোয়ালার ছেলে।

হবিগঞ্জ: বানিয়াচংয়ে বজ্রপাতে সামছুল হক (৩০) নামের এক কৃষক মারা গেছেন। দুপুরে স্থানীয় সুটকী নদীর তীরবর্তী হাওরে বোরো ধান কাটার সময় এ ঘটনা ঘটে। সামছুল হক উপজেলা সদরের জাতুকর্ণপাড়া গ্রামের গাজী রহমানের ছেলে।

সুনামগঞ্জ: দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার জামখলা হাওরের সোনাডুবি বিলে জমিতে ধান কাটার সময় বজ্রপাতে মো. ইয়াহিয়া (৪২) নামের এক কৃষক মারা গেছেন। বেলা সাড়ে ১১টায় এই ঘটনা ঘটে।

কমলগঞ্জ(মৌলভীবাজার): মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে বজ্রপাতে প্রাণ গেলো তমিজ উদ্দিন (৩৫) এক ওমান প্রবাসীর। দেশে ছুটিতে এসেছেন কিছুদিন হল। সোমবার দুপুরে তিনি বাড়ির পাশে মাঠে গরু চরাতে নিয়ে যান। এসময় মাঝারি বৃষ্টিপাতের মধ্যে বজ্রপাত শিকার হন তিনি। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

রাজশাহী: পুঠিয়া, গোড়াদাগাড়ী ও মতিহার এলাকায় বজ্রপাতে ৩জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। সকালে বেগুনের জমিতে কীটনাশক প্রয়োগের সময় বজ্রপাতে পুঠিয়ার নওপাড়া গ্রামের কৃষক ইয়াকুব আলী, একই সময়ে মাঠে ধান কাটতে গিয়ে গোদাগাড়ীর আয়নাপুকুর গ্রামের কৃষক বাবলু এবং নগরীর মতিহার এলাকার ইটভাটা শ্রমিক মারা যান।

নারায়ণগঞ্জ: বজ্রপাতে প্রাণ হারিয়েছেন নারী, স্কুলশিক্ষার্থী ও কৃষকসহ ৫জন। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রূপগঞ্জের টাওরা, ভোলাব ও তেঁতলাব এলাকায় এবং সোনারগাঁর জামপুর ইউনিয়নের মুসারচর গ্রাম ও বন্দরের কলাগাছিয়ায় এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। জামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হামীম শিপলু জানান, দুপুরে কৃষি কাজ করতে মাঠে গিয়েছিলেন কৃষক ওবায়দুল হক। ঝড়-বৃষ্টি শুরু হবার পর তিনি মাঠেই অবস্থান করে কাজ করছিলেন। এ সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। ওবায়দুল মুসারচর গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে।

রূপগঞ্জ উপজেলায় বজ্রপাতে স্কুল শিক্ষার্থী ও ২জন কৃষক মারা গেছেন। এরা হলেন- তেঁতলাব এলাকার আব্দুর রব খানের বাড়ির ভাড়াটিয়া আব্দুল জলিল শেখের ছেলে স্কুলছাত্র ফরহাদ শেখ (১৩), টাওরা এলাকার নুরুল হকের ছেলে কৃষক রফিকুল ইসলাম (৩৫) ও ভোলাব এলাকার কামাল মোল্লার ছেলে হাসেম মোল্লা (১৫)। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রূপগঞ্জ থানার ওসি মনিরুজ্জামান মনির।

অপরদিকে বন্দরের কলাগাছিয়ার জাহাঙ্গীরনগরের স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার মা নূরজাহান বেগম (৬৮) বাড়ির আঙ্গিনায় বসা অবস্থায় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান। তিনি ওই এলাকার হাজী রহমত উল্ল্যাহ মিয়ার স্ত্রী।

জামালপুর: বজ্রপাতে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। ইসলামপুর উপজেলার চিনাডুলী গ্রামের বকুল (২৫) সকালে নৌ-পথে গুঠাইল বাজারে যাওয়ার সময় তার ওপর বজ্রপাত হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। বকুল দক্ষিণ চিনাডুলী গ্রামের আব্দুস ছাত্তারের ছেলে। অপরদিকে সরিষাবাড়ি উপজেলার শ্যামেরপাড়া গ্রামের আলিফ উদ্দিনের ছেলে কৃষক হাবিবুর রহমান (৩৫) সকালে মাঠে ধান কাটার সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান। সরিষাবাড়ি থানার ওসি রেজাউল ইসলাম খান বজ্রপাতে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পাবনা: পাকশীতে পদ্মা নদীর গাইড ব্যাংক এলাকায় ঝড়ে পড়া আম কুড়াতে গিয়ে নাজিম হোসেন (৩০) নামের এক ব্যক্তি বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান। তিনি উপজেলার হঠাৎপাড়া এলাকার দিনমজুর।

রাজবাড়ী: বালিয়াকান্দি উপজেলায় বজ্রপাতে মো. মতিন শেখ (৪৫) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। সকাল ৯টার দিকে ঘোড়ামারা ঝাউডাঙ্গী গ্রামে ক্ষেতে কৃষিকাজ করার সময় এ ঘটনা ঘটে। মতিন শেখ ওই গ্রামের মতো শেখের ছেলে।

চৌদ্দগ্রাম(কুমিল্লা): ধান কাটার সময় বজ্রপাতে ভুলু মিয়া নামের এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। উপজেলার শ্রীফলতলা গ্রামের ঢোলসমুদ্র জলাশয়ে দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। তিনি নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার ভাঙ্গাপাড়া গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত