সিলেটটুডে ডেস্ক

২৯ আগস্ট, ২০১৮ ১৫:৫১

নদী হত্যায় প্রাক্তন শ্বশুরবাড়ির লোকজনই দায়ী, দাবি পরিবারের

বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ‘আনন্দ টিভি’ ও দৈনিক জাগ্রতবাংলা নামে একটি অনলাইন পোর্টালের প্রকাশক ও সম্পাদক সুবর্ণা আক্তার নদী (৩২) হত্যায় পরিবারের পক্ষ থেকে তার প্রাক্তন স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির স্বজনদের সরাসরি দায়ী করা হচ্ছে। এদিকে নদী মৃত্যুর আগেই তার মা ও মেয়েকে সাবেক স্বামী রাজীব ও রাজীবের সহকারী মিলনসহ কয়েকজন হামলাকারীর নাম বলে গেছেন বলেও দাবি করছেন সুবর্ণার মা মর্জিনা বেগম।

বুধবার (২৯ আগস্ট) সকালে সুবর্ণার মা মর্জিনা বেগম বলেন, মেয়ে মৃত্যুর আগে হাসপাতালে হামলাকারীদের নাম আমাদের জানিয়ে গেছে। রাজীব ও তার সহকারী মিলনসহ কয়েকজন মিলে তাকে কুপিয়েছে। আমার মেয়ে তাদের চিনেছিল। র‌্যাব ও পুলিশকে আমি সব তথ্য জানিয়েছি। আমি তাদের ফাঁসি চাই। নিহত সুবর্ণার মেয়ে জান্নাতও (৯) একই তথ্য পুলিশকে জানিয়েছে।

এরইমধ্যে এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সুবর্ণার প্রাক্তন শ্বশুর ও ইড্রাল ফার্মাসিটিক্যালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল হোসেনকে আটকের কথা শোনা গেলেও তা স্বীকার করেনি জেলা পুলিশ প্রশাসন। তবে পুলিশ বলছে, তারা পেশাগত এবং পারিবারিক বিরোধসহ নানান দিক খতিয়ে দেখছে।

পুলিশের ভাষ্য, তাদের হাতে এ হত্যাকাণ্ডের পেছনে কয়েকটি কারণ থাকলেও স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির সাথে মামলা নিয়ে চলমান বিরোধকেই অন্যতম কারণ বলে মনে করছে তারা। তাই হত্যাকাণ্ডের তদন্তে সে বিষয়টিকেই অগ্রাধিকার দিয়ে এগোবে পুলিশ। তবে তদন্ত করতে গিয়ে অন্য কেনো বিষয় বেরিয়ে আসলে বা ঘটনা নতুন দিকে মোড় নিলেও বিষয়টি খতিয়ে দেখবে তারা।

পুলিশ জানিয়েছে, সুবর্ণা যে দুটি মামলা করেছিলেন তাতে স্বামী ও শ্বশুরকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে করা যৌতুক মামলা আদালতে বিচারাধীন।

পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস বলেন, নদী হত্যায় ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে। মা মর্জিনা বেগম বাদী হয়ে হত্যা মামলাটি করবেন। নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। আমরা সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। তবে খুব শিগগির আমরা মূল হোতাদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করতে পারব।

প্রসঙ্গত, স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আবুল হোসেনের ছেলে রাজীবের সঙ্গে তিন-চার বছর আগে বিয়ে হয়েছিল সুবর্ণার। বছরখানেক আগে তাদের ছাড়াছাড়ি হয়। রাজীবের বিরুদ্ধে গত বছর একটি যৌতুক মামলা করেছিলেন সুবর্ণা। মামলা নং-সিআর ২৯৭/১৭ (পাবনা)। মঙ্গলবার ওই মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ছিল। এইদিন সাক্ষ্য দেন সুবর্ণার বড় বোন চম্পা বেগম। সাক্ষ্য রাজীবের বিপক্ষে যাওয়ায় তাদের সঙ্গে আদালত প্রাঙ্গণে বাকবিতণ্ডা হয়। তারপর সুবর্ণা তার অফিসে যায় এবং রাতে কাজ শেষে বাড়ির গেটে ঢোকামাত্রই ৩/৪ জন দুর্বৃত্ত এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ফেলে রেখে চলে যায়। এ সময় স্থানীয়দের সহযোগিতায় সুবর্ণাকে উদ্ধার করে তার মা পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত