সিলেটটুডে ডেস্ক

০৯ এপ্রিল, ২০১৯ ১১:২১

মাদ্রাসাছাত্রীকে এখনই সিঙ্গাপুরে নেওয়া সম্ভব না: ডা. সামন্ত লাল

ফেনীতে আগুনে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার শিকার সেই মাদ্রাসাছাত্রীকে এই মুহূর্তে সিঙ্গাপুরে নেওয়া সম্ভব না বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন।

মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) সকালে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে ওই ছাত্রীর বিষয়ে ভিডিও কনফারেন্স শেষে সাংবাদিকদের একথা জানান তিনি। সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘মেয়েটির শারীরিক যে অবস্থা তাতে পাঁচ ঘণ্টা ফ্লাই করা খুবই রিস্কি বলে মনে করছেন সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকরা। মেয়েটির যেসব সমস্যা আছে, সেগুলো স্থিতিশীল হলে তখন তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া যাবে। আমরা এই বিষয়টি তার পরিবারকেও জানিয়েছি, তারাও একমত পোষণ করেছে।’

ডা. সেন বলেন, ‘‘সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউ’র কনসালটেন্ট আমাদের সব কাগজপত্র চেক করেছেন। তারা আমাদের বলেছেন ‘তোমরা এখন পাঠিও না।’ তারা আমাদের চিকিৎসার সঙ্গে একমত। এছাড়া, তারা আরও কিছু সাজেশন দিয়েছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা একটু পরেই মেয়েটিকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাবো। মোট কথা আমরা প্রতিনিয়ত সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসা পদ্ধতির মধ্যে থাকবো। বিকালেও তাদের সঙ্গে আমাদের কথা হবে।’

প্রসঙ্গত, গত শনিবার (৬ এপ্রিল) সকাল ৯টার দিকে আলিম পর্যায়ের আরবি প্রথম পত্র পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে যায় ওই ছাত্রী। এরপর কৌশলে তাকে পাশের ভবনের ছাদে ডেকে নেওয়া হয়। সেখানে বোরকা পরিহিত ৪/৫ ব্যক্তি ওই ছাত্রীর শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে তার শরীরের ৮৫ শতাংশ পুড়ে যায়। পরে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে তার স্বজনরা প্রথমে সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে ফেনী সদর হাসপাতালে পাঠান। সেখান প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়। বর্তমানে ওই ছাত্রী লাইফ সাপোর্টে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

আগুনে দগ্ধ ওই ছাত্রীর বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান জানান, শনিবার সকালে তার বোনের আরবি প্রথম পত্রের পরীক্ষা ছিল। তাকে পরীক্ষাকেন্দ্রে নিয়ে যান তিনি। তবে কেন্দ্রের প্রধান ফটকে নোমানকে আটকে দেন নিরাপত্তাকর্মী মোস্তফা। এরপর তার বোন একাই হেঁটে কেন্দ্রে প্রবেশ করে। এসময় নোমান কেন্দ্রে থেকে একটু দূরে চলে আসেন। এর ১৫-২০ মিনিট পরই মোবাইলে তিনি তার বোনের অগ্নিদগ্ধের খবর পান। ফের কেন্দ্রে ছুটে গিয়ে বোনকে দগ্ধ অবস্থায় দেখতে পান তিনি। উল্লেখ্য, ভুক্তভোগী মাদ্রাসাছাত্রী সোনাগাজী পৌরসভার উত্তর চরছান্দিয়া গ্রামের মাওলানা একেএম মানিকের মেয়ে।

অভিযোগ আছে, সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলা এর আগে ওই ছাত্রীকে যৌন নিপীড়ন করে। এ কারণে গত ২৭ মার্চ অধ্যক্ষকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় মেয়েটির মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী থানায় মামলা করেন।ওই মামলায় অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলা বর্তমানে ফেনী কারাগারে আছেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত