সিলেটটুডে ডেস্ক

২৩ জুন, ২০১৯ ১৮:৩৭

ভারতে বিটিভি ও বেতার সম্প্রচারের সব আয়োজন সম্পন্ন: তথ্যমন্ত্রী

বাংলাদেশের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন চ্যানেল বিটিভি ও ও বাংলাদেশ বেতারের ভারতে প্রচারের সব আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। রোববার (২৩ জুন) সচিবালয়ের সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, "আওয়ামী লীগের সত্তরতম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই দিনে একটি শুভ সংবাদ আপনাদের দিতে চাই। বাংলাদেশের টেলিভিশন ভারতে দেখা যায় না। এ নিয়ে আমাদের দেশে মানুষের মধ্যে অসন্তোষ ছিল। এখন খুব সহসাই ভারতে বাংলাদেশ টেলিভিশন দেখা যাবে।"

এর প্রেক্ষাপট তুলে ধরে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, "আপনারা জানেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে তাঁর ঢাকা সফরকালে এ বিষয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেন। সেই ধারাবাহিকতায় গত ৭ মে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও ভারতের সম্প্রচার কর্তৃপক্ষ প্রসার ভারতীর মধ্যে কর্মসম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর হয়। এরপর ভারতের নতুন সরকার গঠন হলে নতুন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী প্রকাশ জাভাদকার এ মাসের ১৯ তারিখে সেদেশের রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেল দূরদর্শনের মাধ্যমে বিটিভি সম্প্রচারের চূড়ান্ত অনুমোদন দেন। এর মাধ্যমে ভারতে বাংলাদেশ টেলিভিশন সম্প্রচারের সব আয়োজন শেষ হয়েছে। এখন কারিগরি দিকগুলো ঠিকঠাক করে আমরা খুব সহসা ভারতে বাংলাদেশ টেলিভিশন প্রদর্শনের দিনক্ষণ ঠিক করব। আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে শুরু হবে এ যাত্রা।"

বাংলাদেশের একটি কারিগরি দল আগামী ২৫ জুন ভারতে যাবে এবং ২৭ জুন পর্যন্ত সেখানে থাকবে। তারা আসার পর আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব, বলেন তথ্যমন্ত্রী।

তিনি জানান, "এ ছাড়াও প্রসার ভারতীর সঙ্গে বাংলাদেশ বেতারের একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। সেই চুক্তির আলোকে ভারতে বাংলাদেশ বেতারও শোনা যাবে। এতে ভারতে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতারের দ্বার উন্মোচন হলো।"

ভারতে বাংলাদেশের বেসরকারি টেলিভিশনের সম্প্রচার হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, "আপাতত বাংলাদেশ টেলিভিশন দেখা যাবে। বেসরকারি টেলিভিশনের ক্ষেত্রে সরকারিভাবে কোনো বাধা নেই। সেখানে যারা কেবল অপারেটর তাদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় বাণিজ্যিকভাবে সেখানে এ প্রদর্শন লাভজনক নয় বরং অলাভজনক। সে নিয়েও আমাদের কথাবার্তা চলছে।"

এর আগে বক্তব্যের শুরুতে আওয়ামী লীগের সত্তরতম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গণমাধ্যমকর্মীসহ দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, "১৯৪৯ সালের এ দিনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ দিনেই ১৭৫৭ সালে বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজদ্দৌলার পতন হয়েছিল। আবার এ দিনেই আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বাংলাদেশকে মুক্ত করার জন্য। বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে যে দিন আবার আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে সেদিনও ছিল ২৩ জুন।"

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছিল উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, "প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ইতিহাস বাংলাদেশের ইতিহাস। আওয়ামী লীগের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই এই বাঙালি জাতির সব অর্জন সম্ভব হয়েছিল। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের দাবিতে বাংলাদেশে ছাত্র-জনতা জীবন দিয়েছিল। কিন্তু সেই দাবি প্রতিষ্ঠিত হয়নি। ১৯৫৬ সালে আওয়ামী লীগ নেতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী সরকার গঠন করার পর বাংলাকে রাষ্ট্র ভাষা করা হয়, ২১ ফেব্রুয়ারি সরকারিভাবে পালন করা শুরু হয়, শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়।"

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, "২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালনে কানাডার প্রবাসী দুজন বাঙালির উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে প্রস্তাব ও মন্ত্রীকে জাতিসংঘে পাঠিয়েছিলেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই এই অর্জন- সমগ্র পৃথিবীতে আজকের ২১ ফেব্রুয়ারি পালিত হয়। আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো গানটি বিভিন্ন দেশে বাংলা এবং সে দেশের ভাষাতে গাওয়া হয়। বাঙালি জাতির জন্য এ এক অনন্য মর্যাদা।"

"বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে আর জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত থেকে মধ্য আয়ের দেশে, খাদ্যঘাটতি থেকে  খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশে উন্নীত হয়েছে" উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, "শেখ হাসিনার নেতৃত্বে, আওয়ামী লীগ সরকারের নেতৃত্বে বাংলাদেশ পৃথিবীর সামনে উন্নয়নের রোল মডেল।"

দিনটি উপলক্ষে গণমাধ্যমে কোনো বিশেষ প্রচার ব্যবস্থার নির্দেশনা আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, "বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ইতিহাস হচ্ছে বাংলাদেশের ইতিহাস। এ দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে যারা ক্রোড়পত্র ও সম্পাদকীয় ছাপিয়েছেন, তাদের ধন্যবাদ জানাই।"

তথ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবদের মধ্যে মো. মিজান-উল-আলম ও নূরুল করিম এবং তথ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান তথ্য কর্মকর্তা ফায়জুল হকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত