সিলেটটুডে ডেস্ক

২৮ অক্টোবর, ২০১৯ ১৩:২৫

ড. ইউনূসকে হয়রানি না করার নির্দেশ হাই কোর্টের

নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত গ্রেপ্তার বা হয়রানি না করার নির্দেশ দিয়েছেন হাই কোর্ট। এ সময়ের মধ্যে সুবিধাজনক সময়ে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলেছেন আদালত।

সোমবার (২৮ অক্টোবর) এক আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাই কোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

উল্লেখ্য, ট্রেড ইউনিয়নের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগের মামলায় নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতের বিচারক রহিবুল ইসলাম।

এ আদেশে পরিপ্রেক্ষিতে হাই কোর্টে সময় চেয়ে ড. ইউনূসের পক্ষে আবেদন করা হয়।

আদালতে তার পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, তাকে সহযোগিতা করেন ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ।

ড. ইউনূসের মালিকানাধীন গ্রামীণ কমিউনিকেশন্স নামের একটি প্রতিষ্ঠানে ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করার অনুমতি না দেওয়ার অভিযোগে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়।

ওই মামলার শুনানি নিয়ে গত ১০ জুলাই ঢাকার আদালত প্রথমে সমন জারি করেন। এরপর ৮ অক্টোবর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সংশ্লিষ্ট আদালতে হাজির হতে বলা হয়। কিন্তু আট অক্টোবর পূজার বন্ধ থাকায় ৯ অক্টোবর বুধবার মামলাটির শুনানি হয়।

শুনানি শেষে দুইজনের জামিন মঞ্জুর করলেও ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, প্রতিষ্ঠানে ইউনিয়ন গঠন করায় চাকরিচ্যুতের অভিযোগে গ্রামীণ কমিউনিকেশনসের তিন কর্মচারী এমরানুল হক, শাহ্ আলম ও আব্দুস সালাম গত ৩ জুলাই ড. ইউনূসসহ তিন জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ে করেন।

ওই মামলার শুনানি নিয়ে গত ৯ অক্টোবর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালত প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজনীন সুলতানা ও উপ-মহাব্যবস্থাপক খন্দকার আবু আবেদীনকে জানিম দেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, মামলার বাদীরা গ্রামীণ কমিউনিকেশনসের স্থায়ী পদে এমআইএস অফিসার (কম্পিউটার অপারেটর) হিসেবে কাজে যোগদান করেন। শ্রমিক হিসেবে নিজেদের সংগঠিত হওয়া ও নিজেদের কল্যাণের জন্য ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। সে অনুযায়ী নিজেরাসহ অন্যান্য শ্রমিক সহকর্মীদের নিয়ে ‘গ্রামীণ কমিউনিকেশনস শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন’ (প্রস্তাবিত) নামে একটি ইউনিয়ন গঠন করেন এবং তা আইন অনুযায়ী রেজিস্ট্রেশনের জন্য আবেদন করেন। ইউনিয়ন গঠনের বিষয়টি জানতে পেরে মামলার আসামিরা তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করতে থাকেন। স্বাভাবিক দায়িত্ব পালনেও তারা বাধা দেয়।

বাদীর প্রতি এ রকম অন্যায় আচরণের প্রতিবাদ করায় প্রকাশ্যে নানা ধরনের হুমকি ও ভয়-ভীতি প্রদর্শন করতে থাকেন আসামিরা। আসামিদের নির্দেশে প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার বেআইনিভাবে বাদীদের প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক কাজ থেকে বিরত রাখেন এবং কোনো কারণ ছাড়াই বাদীদের চাকরি থেকে টার্মিনেট করেন।

বিষয়টি লিখিতভাবে শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালকে অবগত করেন বাদীরা। পরবর্তীতে কাজের বিষয় বহুবার যোগাযোগ ও অনুনয়-বিনয় করলেও তাদের (বাদীদের) প্রতিষ্ঠানে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। শুধুমাত্র ইউনিয়ন গঠন করার কারণে আসামিরা তাদের দায়িত্ব পালনে বাধা দিয়ে কাজ থেকে বিরত রাখেন এবং বেআইনিভাবে চাকরিচ্যূত করেন।

বেআইনিভাবে চাকরিচ্যূতির অভিযোগে গত ২৩ জুন বিবাদীদের বরাবর আইনি নোটিশ পাঠান তারা। তার কোনো জবাব না পেয়ে পরে মামলা দায়ের করেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত