সিলেটটুডে ডেস্ক

০১ নভেম্বর, ২০১৯ ১২:৫০

সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড রেখে সড়ক পরিবহন আইন আজ থেকে কার্যকর

সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে আজ শুক্রবার থেকে কার্যকর হয়েছে বহুল আলোচিত সড়ক পরিবহন ২০১৮। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে গেল বছরের ৮ অক্টোবর ‘সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮’ এর গেজেট জারি করা হয়। তবে নানা কারণে তা কার্যকর করতে সময় নেয় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ।

সড়ক পরিবহন আইনে শাস্তি-জরিমানার নতুন বিধান ক‌রে আইনে বলা হ‌য়ে‌ছে, বেপরোয়া গাড়ি চালিয়ে দুর্ঘটনার মাধ্যমে গুরুতর আহত কিংবা প্রাণহানি ঘটালে চালককে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে কিংবা অর্থদণ্ড পেতে হবে। তবে তদন্তে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হত্যাকাণ্ড প্রমাণ হলে সর্বোচ্চ সাজা হবে মৃত্যুদণ্ড। আর খুন না হলে ৩০৪ ধারা অনুযায়ী যাবজ্জীবন। লেন ভঙ্গ ও হেলমেট ব্যবহার না করায় অনধিক ১০ হাজার টাকা জরিমানা।

ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালানোয় ছয় মাসের জেল ও ২৫ হাজার টাকা বা উভয় দণ্ড। নিবন্ধন ছাড়া গাড়ি চালানোয় ছয় মাসের জেল বা ৫০ হাজার টাকা বা উভয় দণ্ড। ফিটনেসবিহীন গাড়ি চালানোয় ছয় মাসের জেল বা ২৫ হাজার টাকা বা উভয় দণ্ড।

নারী, শিশু, প্রতিবন্ধী ও বয়োজ্যেষ্ঠ যাত্রীর জন্য সংরক্ষিত আসনে অন্য কোনো যাত্রী বসলে এক মাসের কারাদণ্ড বা ৫ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড দেওয়া হবে।

মদপান করে বা নেশাজতীয় দ্রব্য খেয়ে গাড়ি চালালে, সহকারীকে দিয়ে গাড়ি চালালে, উল্টো দিকে গাড়ি চালালে, নির্ধারিত স্থান ছাড়া অন্য স্থানে গাড়ি থামিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি, চালকছাড়া মোটরসাইকেল একজনের বেশি সহযাত্রী উঠালে, মোটরসাইকেলের চালক ও সহযাত্রীর হেলমেট না থাকলে, ছাদে যাত্রী বা পণ্য বহন, সড়ক বা ফুটপাতে গাড়ি সারানোর নামে যানবাহন রেখে পথচারীদের চলাচলে বাধা সৃষ্টি, ফুটপাতের ওপর দিয়ে কোনো মোটরযান চলাচল করলে সর্বোচ্চ তিন মাস কারাদণ্ড বা ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড এর বিধান রাখা হয়ে‌ছে।

অষ্টম শ্রেণি পাস না করলে লাইসেন্স পাবেন না চালকরা। গাড়ি চালানোর সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার করা যাবে না। মোবাইল ফোন ব্যবহার করলে এক মাসের কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে।

আইনে সাধারণ চালকের বয়স আগের মতোই কমপক্ষে ১৮ বছর এবং পেশাদার চালকদের বয়স হতে হবে কমপক্ষে ২১ বছর। জাল ড্রাইভিং লাইসেন্স ব্যবহারের জন্য দুই বছরের কারাদণ্ড ও জরিমানা ৩ লাখ টাকা জরিমানা।

এর আগে, পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের বাধার মুখে এতদিন আইনটি বাস্তবায়ন করতে পারেনি সরকার। নতুন এ আইনের বিভিন্ন ধারা বাতিলের দাবিতে তারা আন্দোলন করে। তাদের আন্দোলনের মুখে আইনটি সংশোধন করা হতে পারে বলে গুঞ্জন উঠে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আইন‌টি সং‌শোধন করা হয়নি। সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আইনটি সংশোধনের বিষয়ে নাকচ করে দিলে অবশেষে আইনটি আলোর মুখে দেখে। তারই ধারাবাহিকতায় গত ৯ দিন আগেে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ থেকে আইনটি কার্যকরের আদেশ জারি করা হয়েছে।

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত আদেশে বলা হয়, সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮’ এর ধারা ১ এর উপ-ধারা (২) এ দেয়া ক্ষমতাবলে সরকার ১ নভেম্বর তারিখকে আইন কার্যকর হওয়ার তারিখ নির্ধারণ করল।

নতুন আইনে উল্লেখযোগ্য শাস্তি-জরিমানাগুলো হল-

 অবহেলায় গাড়ি চালানোতে গুরুতর আহত বা প্রাণহানিতে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর কারাদণ্ড বা অনধিক পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড।
 উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হত্যাকাণ্ড প্রমাণ হলে সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড।
 লেন ভঙ্গ ও হেলমেট ব্যবহার না করায় অনধিক ১০ হাজার টাকা জরিমানা।
 ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালানোয় ছয় মাসের জেল ও ২৫ হাজার টাকা বা উভয় দণ্ড ।
 নিবন্ধন ছাড়া গাড়ি চালানোয় ছয় মাসের জেল বা ৫০ হাজার টাকা বা উভয় দণ্ড।
 ফিটনেসবিহীন গাড়ি চালানোয় ছয় মাসের জেল বা ২৫ হাজার টাকা বা উভয় দণ্ড।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত