সিলেটটুডে ডেস্ক

২৫ ডিসেম্বর, ২০১৯ ১১:৪৮

ভিপি নূরের ওপর হামলায় ছাত্রলীগ জড়িত থাকলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা: লেখক

ভিপি নুরুল হক নূর ও লেখক ভট্টাচার্য

ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেছেন, ডাকসু কার্যালয়ে ভিপি নূরের ওপর হামলার ঘটনায় ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও আমি নিজে তদন্ত করছি। এ ঘটনায় ছাত্রলীগের কেউ জড়িত রয়েছেন বলে প্রমাণিত হলে দ্রুত সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সোমবার একটি বেসরকারি টেলিভিশনে ভিপি নূরের ওপর হামলা ঘটনা বিষয়ে জানতে চাইলে এ কথা বলেন লেখক ভট্টাচার্য।

এ সময় ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক দাবি করেন, কারণ ছাড়াই ছাত্রলীগকে এই ঘটনার সঙ্গে জড়ানো হচ্ছে। এখানে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণ নেই। তবে কারা এর সঙ্গে জড়িত প্রশ্নে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ ও ছাত্রলীগের কিছু অতি উৎসাহী এই ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে। আমরা তদন্ত করছি। প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ডাকসু ভিপির ওপর এমন হামলা বেদনাদায়ক ও অনাকাঙ্ক্ষিত বলে মন্তব্য করেন লেখক।

লেখক ভট্টাচার্য আরও বলেন, ডাকসুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে অনেকেই ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে। ফলে নেতাকর্মীদেরকে এদের বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।

এ ঘটনাকে পুঁজি করে কেউ যদি ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করতে চায় তাদেরকে ছাড় দেয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন এই ছাত্রলীগ নেতা।

প্রসঙ্গত গত ২২ ডিসেম্বর দুপুর পৌনে ১টার দিকে ডাকসু ভবনের মূল ফটক বন্ধ করে কক্ষের বাতি নিভিয়ে ভিপি নূর ও তার সহযোগীদের ওপর লাঠিসোটা নিয়ে হামলা করে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের তিন নেতাকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। তারা হলেন - মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের একাংশের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক ইয়াসির আরাফাত তূর্য ও মেহেদী হাসান শান্ত।

সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে মামলা হয়েছে। ভুক্তভোগীরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে না আসায় পুলিশই মামলা করেছে। মামলায় আটজনের নাম উল্লেখসহ ৪৩ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার আট আসামি হলেন- মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল, সাধারণ সম্পাদক আল মামুন, ঢাবি শাখার সভাপতি এএসএম সনেট, সাধারণ সম্পাদক ইয়াসির আরাফাত তূর্য, এ এফ রহমান হল শাখা মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক ইমরান সরকার, কবি জসিমউদ্দীন হল শাখার সাধারণ সম্পাদক ইয়াদ আল রিয়াদ (হল থেকে অস্থায়ী বহিষ্কৃত), জিয়া হল শাখা মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তৌহিদুল ইসলাম মাহিম এবং মাহবুব হাসান নিলয়।

পুলিশের এই মামলার পর ভিপি নূর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনসহ ৩৭ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৪০-৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভিপি নূরলের পক্ষে রাজধানীর শাহবাগ থানায় মামলাটি দায়ের করেন ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন।

মামলায় ভিপি নূরল যাদের নাম উল্লেখ করেছেন, তারা হলেন- সনজিত চন্দ্র দাস, সাদ্দাম হোসেন, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের একাংশের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল ও সাধারণ সম্পাদক আল মামুন, বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনেট মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক ইয়াসির আরাফাত তূর্য, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন বিন সাত্তার, মাস্টারদা' সূর্যসেন হল সংসদের ভিপি মারিয়াম জাহান খান, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ তুনান, স্যার এ এফ রহমান হল সংসদের ভিপি আবদুল আলীম খান, জিএস আব্দুর রহিম সরকার ও সাহিত্য সম্পাদক তানজিল ইমরান তালাশ, বিজয় একাত্তর হল সংসদের এজিএস আবু ইউনূস, ডাকসুর সদস্য রকিবুল ইসলাম ঐতিহ্য ও মাহমুদুল হাসান, ডাকসুর স্বাধীনতাসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক সাদ বিন কাদের চৌধুরী, বিজয় একাত্তর হল শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি রবিউল হাসান রানা, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের শিক্ষা ও পাঠচক্রবিষয়ক উপসম্পাদক নিয়ামত উল্লাহ তপন, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল সংসদের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) হাসিবুল হোসেন শান্ত, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক সিফাতুজ্জামান খান, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল সংসদের জিএস মেহেদী হাসান মিজান, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফেরদৌস আলম, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুল হাসান বাবু, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, ছাত্রলীগ নেতা ইবনুল হাসান উজ্জ্বল ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক স্কুলছাত্রবিষয়ক উপসম্পাদক খাজা খায়ের সুজন।

নূরলের মামলায় আরও আসামি করা হয়েছে সলিমুল্লাহ মুসলিম হল (এসএম হল) শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিলন খান, কবি জসীমউদদীন হল শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইমরান আহমেদ, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক হৃদয় হাসান সোহাগ, ছাত্রলীগ নেতা মো. উজ্জ্বল, আরিফুল ইসলাম, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেত্রী ফাতিমা রিপা, মঞ্চের একাংশের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম ও আইনুল ইসলাম মাহবুব, নেতা মেহেদী হাসান নিবিড়, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল সংসদের জিএস মেহেদী হাসান শান্ত এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি জীবন রায়কে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত