৩০ জানুয়ারি, ২০২০ ১২:৫৯
জাতীয় সংসদে বুধবার রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাবের সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে মানিকগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম বিতর্কিত ইসলামী বক্তা মিজানুর রহমান আযহারীসহ কিছু বক্তার সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, এসব বক্তা একেক জায়গায় একেক রকম বক্তব্য দিয়ে মানুষদের বিভ্রান্ত করছে।
মমতাজ বেগম বলেন, ফেসবুক, ইউটিউব খুললে ওয়াজের নামে মিথ্যা আর অকথ্য ভাষা শোনা যাচ্ছে। এগুলো সরকারের নজরে আসা দরকার। বিভিন্ন ওয়াজ-মাহফিলে বক্তাদের ঘরে ঘরে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর জন্মের আহ্বান জানানোর বিষয়ে প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানোর দাবি জানান মমতাজ।
মমতাজ বলেন, ‘এই সরকার দেশকে ডিজিটালে রূপান্তরিত করে আমাদের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে। কিন্তু আমার মনে হয়, কিছু কিছু জায়গায় বেকায়দায় আছি। কারণ ইউটিউব, ফেসবুক খুললে কী যে একটা অবস্থা। কোরআনকে সামনে রেখে, আল্লাহ-রাসুলকে সামনে রেখে অশালীন ও অকথ্য ভাষায় আজকাল ওয়াজ করা হয়।’
মমতাজ বলেন, ‘এসব বক্তাদের ওয়াজ শুনতে গেলেই দেখি একজন আরেকজনকে গালিগালাজ করছেন। ভালো কথা ছাড়া, খারাপ কথাই সেখানে বেশি শোনা যায়। সরকারকে বিষয়টি আমলে নিতে হবে। আমাদের প্রশাসনকে এগুলো দেখতে হবে।’
মিজানুর রহমান আযহারীর নাম উল্লেখ না করে মমতাজ বেগম বলেন, ‘আমাদের ধর্মমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। তিনি একটি বক্তব্য দিয়েছেন। আমি তার সেই বক্তব্যের সঙ্গে সহমত জানিয়ে তা আর পুনরাবৃত্তি করব না। তবে আমি বলতে চাই– এ ধরনের বক্তা যারা আছেন, তারা সুবিধার জন্য একেক জায়গায় একে রকমের বক্তব্য দেয়।’
উদাহরণ দিয়ে মানিকগঞ্জের এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘এক জায়গায় তারা বলে– আল্লামা কোনো মানুষকে বলা যাবে না। আল্লামা একমাত্র আল্লাহকে বলা হবে। আবার আরেক জায়গায় বলে ঘরে ঘরে আল্লামা সাঈদীর জন্ম হোক। ওখানে আল্লামা বলতে আর কোনো ঝামেলা নেই তাদের। এসব বিষয়ে সরকারকে নজরদারি আরও বাড়াতে হবে।’
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার জামালপুরে মসজিদ নির্মাণ পরিদর্শনকালে আযহারীকে ‘জামায়াতের প্রোডাক্ট’ মন্তব্য করেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আবদুল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, বিভিন্ন ওয়াজ-মাহফিলে আযহারীসহ কিছু ধর্মীয় বক্তা অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে জামায়াতের প্রচারণা চালাচ্ছেন। ধর্ম প্রতিমন্ত্রী সেদিন আরও বলেন, 'জামায়াতের টাকা-পয়সায় তারা শিক্ষিত হয়ে এই মুহূর্তে প্রকাশ্যেই তারা জামায়াতের কথা বলতো। কিন্তু প্রকাশ্যে জামাতের কথা বলার রাজনৈতিক সুযোগ নাই বিধায় তারা খুব সূক্ষ্মভাবে যেসব কথাবার্তা বলে, আর যেসব ওয়াজ করে, হাদিস কোরআন সম্পর্কে যে সমস্ত ব্যাখ্যা দেয়, তার একটাও সত্য না। একটাও সত্য না বলাটা হয়তো একটু বেশিই হয়ে গেল। কিন্তু অধিকাংশই মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে তারা কিন্তু আজে বাজে কথাবার্তা বলে থাকে।'
আপনার মন্তব্য