করোনাভাইরাসের প্রকোপের কারণে ঘোষিত সাধারণ ছুটির মধ্যে আদালত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রোববার (২৬ এপ্রিল) প্রধান বিচারপতির সভাপতিত্বে ভিডিও কনফারেন্সে সুপ্রিম কোটের উভয় বিভাগের বিচারপতিদের ফুলকোর্ট সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে, সভায় ভার্চুয়াল আদালত ব্যবস্থা চালুর বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।

এর আগে সাধারণ ছুটির মেয়াদ বাড়তে থাকায় সুপ্রিম কোর্ট, ঢাকা ও চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির আবেদনে সীমিত পরিসরে আদালত খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। গত ২৩ এপ্রিল প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের সভাপতিত্বে আপিল বিভাগের বিচারপতিদের ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্তের পর আদালত খোলার বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. আলী আকবরের স্বাক্ষরে পৃথকভাবে কয়েকটি বিজ্ঞপ্তিও জারি করা হয়।

কিন্তু এই সিদ্ধান্তের পর অধিকাংশ আইনজীবীদের তীব্র সমালোচনার মুখে ঢাকা ও চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতি আদালত বন্ধ রাখার জন্য উল্টো আবেদন দেয়। এছাড়া সাধারণ ও সিনিয়র আইনজীবীদের পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। তারা আদালত কার্যক্রম বন্ধ রাখার দাবি জানান। এ প্রেক্ষাপটে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন আগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসলো।

গতকাল শনিবার নিম্ন আদালত খোলার সিদ্ধান্ত অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য স্থগিত করা হয়। আর হাইকোর্ট বিভাগের একটি বেঞ্চ খোলার সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হয় ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত। এ জন্য শনিবারই সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন থেকে পৃথক পৃথক বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। এ অবস্থায় করোনাভাইরাসের প্রকোপের মধ্যে স্বল্প পরিসরে আদালত খোলা রাখা হবে কি না সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিদের নিয়ে আজ ফুলকোর্ট সভা ডাকেন প্রধান বিচারপতি।

সেই সভায় সিদ্ধান্ত হয় আপাতত ৫ মে পর্যন্ত সারা দেশের আদালত বন্ধ থাকবে। সরকার সাধারণ ছুটির মেয়াদ বাড়ালে সেক্ষেত্রেও এই সিদ্ধান্ত বর্ধিত হবে। তবে ভার্চুয়াল আদালত ব্যবস্থা চালুর বিষয়ে হাইকোর্ট রুলস সংশোধনের জন্য একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ফুলকোর্ট সভা অনুষ্ঠিত হয়। রোববার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত এই সভায় সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতিরা অংশ নেন। এই সভায় বিচারপতিরা তাদের মতামত তুলে ধরেন। এরপরই আদালত কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।