সিলেটটুডে ডেস্ক

০৫ মে, ২০২২ ০০:০১

৩৩ মাস পর নির্বাচনী এলাকায় যাচ্ছেন ওবায়দুল কাদের

২০১৯ সালের ১৩ আগস্ট সবশেষ নিজের নির্বাচনী এলাকা নোয়াখালী গিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ওই সফরের ৩৩ মাস পর ফের নোয়াখালী যাচ্ছেন তিনি। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে নিজ নির্বাচনী এলাকা কোম্পানীগঞ্জে পৌঁছার কথা রয়েছে সরকারের প্রভাবশালী এই মন্ত্রীর।

মন্ত্রীর সফরসূচি সূত্রে জানা যায়, ঢাকার সরকারি বাসভবন থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে নোয়াখালীর উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন ওবায়দুল কাদের। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কোম্পানীগঞ্জের বড় রাজাপুর নিজ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছবেন তিনি। নিজ গ্রামে পৌঁছে প্রথমে বাবা-মার কবর জিয়ারতের পর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন সেতুমন্ত্রী। এরপর ছোটভাই বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের মির্জার আয়োজনে নিজ বাড়ির সামনে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক।

বিকালে কবিরহাট জিরো পয়েন্টে এলাকাবাসীর সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন ওবায়দুল কাদের। বিকাল ৪টার দিকে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গেও তিনি ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। পরে কবিরহাট জিরো পয়েন্টে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন ওবায়দুল কাদের।

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ ও কবিরহাট নিয়ে নোয়াখালী-৫ আসন গঠিত। এই সংসদীয় আসন ওবায়দুল কাদেরের নির্বাচনী এলাকা। করোনাভাইরাস পরিস্থিতি আর তার নিজের অসুস্থতার কারণে প্রায় তিন বছর নিজ এলাকায় যেতে পারেননি তিনি।

এদিকে, ওবায়দুল কাদেরের এ সফরকে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ মনে করছেন জেলার রাজনৈতিক সচেতন মহল। বিশেষ করে গত দেড় বছরে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগে অনেক চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে গেছে। দলের বিবদমান দুটি গ্রুপের দ্বিধাবিভক্তির রাজনীতি আরও প্রকট হয়েছে। তার এ সফরে দলের দ্বন্দ্ব নিরসনের আশা করছেন তারা। এরবাইরে সম্প্রতি নোয়াখালীর আরেক এমপি একরামুল করিম চৌধুরী ওবায়দুল কাদেরের আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এরআগে একটি নির্বাচনে একরামুল করিম চৌধুরী ওবায়দুল কাদেরের আসনে প্রার্থী হওয়ায় সে বার নির্বাচনে হেরে যান আওয়ামী লীগের বর্তমান এই সাধারণ সম্পাদক।

এছাড়া গত কয়েক বছর নানা ঘটনার কারণে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দকে সমালোচনায় পড়তে হয়েছে। আলোচনা সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের মির্জা। সেতুমন্ত্রীর এই ছোটভাইয়ের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে সংগঠনের ভেতর থেকেই। নির্বাচনী ব্যবস্থা, দুর্নীতি এবং নোয়াখালী অঞ্চলের আওয়ামী লীগের দ্বন্দ্ব-অসংগতি নিয়ে কাদের মির্জার বিভিন্ন সময়ে দেওয়া বক্তব্য সারা দেশে আলোচনার সৃষ্টি করে। তার অনেক খোলামেলা বক্তব্যই সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

কাদের মির্জার পারিবারিক ভুল বুঝাবুঝির কারণেই দ্বন্দ্বের সূত্রপাত। একপর্যায়ে উপজেলা এবং জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে এই বিরোধ। উভয় পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে একাধিকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসব সংঘর্ষে একজন সাংবাদিকসহ দুইজনের প্রাণহানিও হয়েছে। দুটি গ্রুপের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ৭২টি মামলা হয়। এসব মামলার আসামি হাজার খানেকের মতো এখনো বাড়িছাড়া।

ওবায়দুল কাদেরের সফরকে ঘিরে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে জানিয়ে নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম বলেছেন, সেতুমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে তার বাড়ির সামনে গার্ড অব অনার মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। এলাকায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত