সিলেটটুডে ডেস্ক

০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৩:০২

বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক: সিলেটের একটিসহ কয়েকটি আসনে প্রার্থী বদলের আলোচনা

আসছে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া বিতর্কিত ও সমালোচিত প্রার্থী বদলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। গত সোমবার রাতে দলটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

সভায় সিলেট-৬, নেত্রকোনা-৫, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪, জামালপুর-২, কুষ্টিয়া-৪, সিরাজগঞ্জ-৩, চট্টগ্রাম-১২ ও ১৩ ছাড়াও অন্তত ৩০ আসনে প্রার্থী বদলের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এসব আসনে যাদের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে নৈতিক স্খলন, বয়োবৃদ্ধ, বিতর্কিত ও সমালোচিত বলে স্থায়ী কমিটির নেতারা অভিযোগ করেন।

গত ৩ নভেম্বর ২৩৭ আসনে বিএনপি সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণার পর থেকে অর্ধশতাধিক আসনে শুরু হয় ‘মনোনয়ন বিদ্রোহ’। বাকি যে ৬৩ আসনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা হয়নি, সেখানেও চলছে নানা যোগ-বিয়োগ।

এদিকে নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণার ব্যাপারে বড় পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে বিএনপি। এ জন্য ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ নামে একটি কর্মসূচিও হাতে নিয়েছে দলটি। এতে জেন-জি প্রজন্ম থেকে শুরু করে সমাজের প্রত্যেক শ্রেণিকে এ কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করতে আগেই ছয়দিনের কর্মসূচির ঘোষণা করা হয়েছে, যা ৭ ডিসেম্বর শুরু হয়ে ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে। স্থায়ী কমিটির সভায় এ বিষয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে।

জানা গেছে, বাসযোগ্য, আধুনিক ও নিরাপদ বাংলাদেশ গড়তে নানা পরিকল্পনা রয়েছে বিএনপির। এর অংশ হিসেবে সাত বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে দলটি। এগুলো হলো– জলবায়ু ও পরিবেশ রক্ষা, শিক্ষা ও দক্ষ জনশক্তি তৈরি, স্বাস্থ্য, কৃষি, নারী, ক্রীড়া ও ধর্ম। এসব বিষয়ে ক্ষমতায় গেলে বিএনপি কী করবে; তা প্রতিশ্রুতি আকারে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে লিফলেটের মাধ্যমে তুলে ধরা হবে। দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সমন্বয়ে একাধিক টিম দ্রুতই মাঠে নামছে। ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ কর্মসূচির বিষয়ে নেতাকর্মীকে নানা দিকনির্দেশনা দেওয়া হবে।

স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী উপস্থিত ছিলেন। সমকালকে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত দেশ গড়ার পরিকল্পনা শীর্ষক ঘোষিত কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়া বৈঠকে সমসাময়িক রাজনৈতিক পরিস্থিতি, নির্বাচনের প্রস্তুতিসহ নানা বিষয়ে কথা হয়েছে।

সূত্র জানায়, আগামী নির্বাচনে ‘জেন-জি’ প্রজন্মকে গুরুত্ব দিয়ে তাদের চাহিদা সামনে রেখে প্রচার-প্রচারণায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হবে।

বৈঠক সূত্র জানায়, বৈঠকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অসুস্থতা, তাঁর চিকিৎসাসহ নানা বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন নেতারা। সেখানে নেতারা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন কয়েক বছর ধরেই গুরুতর অসুস্থ। বিশেষ করে কারাজীবনে তাঁর সঙ্গে আওয়ামী লীগ সরকারের নির্যাতন ভয়াবহ আকার ধারণ করে। সে সময় সরকারের অসহযোগিতায় ঠিকমতো চিকিৎসাও সম্ভব হয়নি।

কয়েক দিন ধরে তিনি অসুস্থ ছিলেন। এ অবস্থায় ২১ নভেম্বর সশস্ত্র বাহিনী দিবসে ওই রকম জনাকীর্ণ পরিবেশে তাঁকে নেওয়া ঠিক হয়নি। সেখান থেকেই তিনি সংক্রমিত হতে পারেন বলে স্থায়ী কমিটির নেতারা মনে করেন।

বৈঠকে তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়েও আলোচনা করেন নেতারা। সভায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ ও ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।

সূত্র: সমকাল

আপনার মন্তব্য

আলোচিত