সিলেটটুডে ডেস্ক

০৩ আগস্ট, ২০১৭ ১৯:২৫

প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি পেলে বিরোধীদলীয় মন্ত্রীদের পদত্যাগ: এরশাদ

বিরোধী দলে থেকেও জাতীয় পার্টির নেতাদের মন্ত্রিসভায় থাকাকে ‘লজ্জাজনক’ আখ্যা দিয়ে ভবিষ্যতে এ লজ্জা থেকে মুক্তি পাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। এজন্যে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমতির জন্যেও অপেক্ষা করছেন বলে জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) রাজধানীর বনানীতে পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব মন্তব্য করেন। সংবাদ সম্মেলনে এরশাদ দেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের সমালোচনা করেন।

মন্ত্রিসভা থেকে জাতীয় পার্টির মন্ত্রীরা এবং তিনি নিজে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত থেকে পদত্যাগ করবেন কি না—সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে এরশাদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী অনুমতি দিলে আমরা সময়মতো পদত্যাগ করব।’ দেশের এমন অবস্থায় জাতীয় পার্টি কি চায় সরকার পদত্যাগ করুক—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তা চাই না। এতে সাংবিধানিক শূন্যতা তৈরি হবে।’

এরশাদ বলেন, “আমরাই বিরোধী দল। যদিও আমরা সরকারে আছি, আমাদের তিনজন মন্ত্রী ক্ষমতায় আছে… এটা আমাদের জন্য লজ্জার ব্যাপার। “আশা করি এই লজ্জার হাত থেকে একদিন আমরা মুক্তি পাব”, যোগ করেন তিনি।

বর্তমানে আওয়ামী লীগ সরকারের মধ্যে রয়েছেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির তিনজন মন্ত্রী। পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বর্তমান সরকারের পানিসম্পদমন্ত্রী; এছাড়া মুজিবুল হক চুন্নু শ্রম মন্ত্রণালয় এবং মশিউর রহমান রাঙ্গা পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মান্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে আছেন। দশম জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ। আর এরশাদ নিজে আছেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূতের দায়িত্বে।

সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরী তাদের মিত্রবাহিনীতে আছেন উল্লেখ করে এরশাদ বলেন, “সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরী সাহেবকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ইফতারের দাওয়াত করেছিলেন, তার অর্থ তিনি সরকারের বিরুদ্ধে নন; না হলে আর কাউকে তো তিনি আমন্ত্রণ করেননি। সেই অনুষ্ঠানে তিনি আমার পাশে বসেছিলেন। এর মধ্যে দিয়ে কি প্রতীয়মান হয় না যে তিনি মিত্রবাহিনীতে আছেন?”

দেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ বিশেষ দূত বলেন, “দেশে এখন মহাক্রান্তিকাল; ক্ষমতার তুফান বইছে। বগুড়ায় সম্প্রতি যে ঘটনা ঘটল- পত্রপত্রিকা খুললেই দেখা যায় নারীর প্রতি সহিংসতার মহোৎসব চলছে। বাংলাদেশ নারীদের জন্য অভিশপ্ত হয়ে উঠছে। এর কারণ বিচারহীনতা।”

তিনি বলেন, প্রতিদিন নারী ধর্ষণের কথা পত্রিকায় আসছে। ঢাকা তিতুমীর কলেজের ছাত্র সিদ্দিকুর রহমান চোখ হারাতে বসেছেন। জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় থাকাকালে দেশের এমন পরিস্থিতি ছিল না।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, “পাহাড় সরকারি সম্পত্তি। এই পাহাড় যারা কাটল, তাদের সরকার দেখল না কেন? অষ্টআশির বন্যায় কেউ অনাহারে মারা যায়নি। আর এখন ৫০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি হচ্ছে। ১০ টাকা কেজি চালের কথা শুনেছিলাম। সেই চাল নিয়ে কী চালবাজি হয়েছে তা সবাই জানেন। সুশাসন আজ সঙ্কটে।”

এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব কি না, তা জানতে চাইলে এরশাদ বলেন, এখন পর্যন্ত এই কমিশনের পরীক্ষা হয়নি। ভবিষ্যতে বোঝা যাবে।

অন্যদের মধ্যে জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ, জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, অবসরপ্রাপ্ত মেজর খালেদ আক্তার সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত