সিলেটটুডে ডেস্ক

০৫ আগস্ট, ২০১৭ ০০:৪৬

সংসদে শ্রমিকবান্ধব সদস্যের অভাব রয়েছে: মেনন

জাতীয় সংসদে শ্রমিকবান্ধব সংসদ সদস্যের অভাব রয়েছে উল্লেখ করে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী এবং বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন মেনন বলেছেন, শ্রমিকদের দাবি আদায়ের পক্ষে দাঁড়াতে পারে, সংসদে এমন পাঁচজনকেও তিনি দেখেন না।

শুক্রবার (৪ আগস্ট) বিকেলে চট্টগ্রাম নগরের জে এম সেন হলে আয়োজিত চট্টগ্রাম জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে দেওয়া বক্তৃতায় রাশেদ খান মেনন এমন্তব্য করেন।

মেনন বলেন, আপনারা বলবেন আমরা তো শ্রমিক, পার্লামেন্টে তো আমাদের লোক নেই। কেন লোক নেই? কেন আমাকে একা দাঁড়িয়ে কথা বলতে হয়? মন্ত্রী হয়েও আমি পার্লামেন্টে শ্রমিকের জন্য কথা বলতে পারি, অন্যরা পারেন না। যদি আমার পাশে আর পাঁচজন পাওয়া যেত, তাহলে উচ্চকণ্ঠে শ্রমিকদের দাবি আদায়ের পক্ষে সংসদে কথা বলতে পারতাম। শ্রমিকদের দাবি মেনে নেওয়ার ব্যাপারে সেই আওয়াজ তুলতে পারছি না।

শ্রমিকেরা অবহেলিত উল্লেখ করে রাশেদ খান মেনন বলেন, সরকারি পে-কমিশন বাস্তবায়িত হয়ে আরেকটি পে-কমিশনের সময় চলে আসছে। অথচ শ্রমিকের জন্য এখনো মজুরি কমিশন হয়নি। সরকার পাট খাতকে আবার সচল করতে নানা পদক্ষেপ নিলেও শ্রমিকদের দিকে মনযোগ দিচ্ছে না। পাটের অভাবে চলতে পারে না পাটকলগুলো। কিন্তু গত বছরের পাটও গুদামে রয়ে গেছে। কৃষক বড় আশা করেছিল তারা পাটের দাম পাবে। কিন্তু এবারের মৌসুমের শুরুতেও পাটের দাম নিম্নমুখী।

মন্ত্রী বলেন, যাদের টাকা আছে, পার্লামেন্ট এখন তাদের। ওই পার্লামেন্টে আজকে শ্রমিক-কৃষকের জায়গা নাই। আজকে আমাদেরকে অবশ্যই অবশ্যই এই পার্লামেন্ট সম্পর্কে ভাবতে হবে। এই পার্লামেন্টে যাতে শ্রমিক-কৃষকদের জায়গা হয়, সে ব্যবস্থা করত হবে।

সংসদে নিজেদের অবস্থান সংহত করতে হলে শ্রমিকদের ‘নিজেদের স্বার্থের’ দলকে, সংগঠনকে চিনতে হবে বলে মন্তব্য করেন মেনন।

তিনি বলেন, ভুল জায়গায় ভোট দেবেন না, মার্কা দেখে চক্ষু চড়কগাছ করবেন না।

দেশের মাটিতে প্রবাসী শ্রমিকদের হয়রানির বিষয়টিও তুলে ধরেন মেনন। বলেন, থাইল্যান্ড যাওয়ার জন্য, মালয়েশিয়া, ইউরোপ যাওয়ার জন্য যারা ভূমধ্যসাগর, ভারত মহাসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে শয়ে শয়ে মরে, হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে, তাদের রেমিট্যান্সে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ শক্তিশালী হয়, তারা যখন বিমানবন্দরে নামে, তখন তার ভাগ্যে কী ঘটে সেটা বিমানমন্ত্রী হিসেবে আমি ছাড়া আর কেউ ভালো জানে না।

প্রবাসীদের কল্যাণে মন্ত্রণালয় থাকলেও তারা যখন দেশে ফিরে আসেন, তখন তাদের যে সম্মান পাওয়ার কথা, সেটা তারা পান না বলেও আক্ষেপ করেন মেনন। পার্লামেন্টে নানা আইন পাস হলেও প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য একটি আইনের খসড়া তিন বছর ধরে আটকে থাকায় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের এই মন্ত্রী সংসদের বাইরে থাকা বিএনপিরও সমালোচনা করেন। নির্বাচন এলেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়ে যায় মন্তব্য করে তিনি বলেন, কোনো ষড়যন্ত্রই সামনের নির্বাচনকে বানচাল করতে পারবে না।

“বিএনপি নির্বাচনে তার পরিণতি জানে বলে নির্বাচন বানচাল করতে নানা গান গাইতে শুরু করেছে। সহায়ক সরকার দাও, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড দাও, সেনাবাহিনী দাও- এসব তারই অংশ।”

ওয়ার্কার্স পার্টিকে শক্তিশালী করতে দলের নেতাকর্মীদের কাজ করারও আহবান জানান মেনন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ওয়ার্কার্স পার্টির চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি অ্যাডভোকেট আবু হানিফ। সঞ্চালনায় ছিলেন ওয়ার্কার্স পার্টি চট্টগ্রাম অঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শরীফ চৌহান। অন্যদের মধ্যে জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আমিরুল হক আমির, ফয়েজ আহমদ, সামশুল আলম, দিদারুল আলম চৌধুরী ও জসিম উদ্দিন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত