সিলেটটুডে ডেস্ক

২১ ফেব্রুয়ারি , ২০১৬ ২০:৫০

ভাষা শহীদদের স্মরণে গণজাগরণ মঞ্চের ‘একুশের গান ও পঙক্তিমালা’

ভাষা আন্দোলনের অমর শহিদদের প্রতি নিবেদিত গান ও পঙক্তিমালায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করেছে গণজাগরণ মঞ্চ। শাহবাগ প্রজন্ম চত্বরে শহিদ দিবস উপলক্ষে গণজাগরণ মঞ্চ ঘোষিত দুইদিনের কর্মসূচীর শেষ দিনের অনুষ্ঠান শুরু হয় বিকাল চারটায়।

সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হয় “একুশের গান ও পঙক্তিমালা” শীর্ষক সাংস্কৃতিক আয়োজন। এরপর মহান ভাষা আন্দোলনের অমর শহিদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর মঞ্চে গান ও কবিতা আবৃত্তির মধ্য দিয়ে  বায়ান্নোর গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসকে স্মরণ করা হয়।

অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার। ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে তিনি বলেন, “যে অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার আত্মদান করেছিলেন তা আজো অর্জিত হয়নি। এখন পর্যন্ত সর্বস্তরে আমাদের মাতৃভাষা প্রবর্তনই করা হয়নি, আনুষ্ঠানিকতায় বন্দী হয়ে গেছে অমর একুশে ফেব্রুয়ারি। অথচ কথা ছিল সকলে তার মাতৃভাষায় কথা বলার ন্যায্য অধিকার পাবে। ভাষার জন্য রক্তদানের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের উত্তরাধিকারী হিসেবে সকল জনগোষ্ঠীর ভাষার অধিকার সংরক্ষণের দায়িত্ব আমাদের উপরেই বর্তায়”।

তিনি আরো বলেন, “সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে বাক স্বাধীনতার উপর নানা অপশক্তি যে আঘাত করছে তা উনিশশো বায়ান্নো সালের সেই রক্তিম অতীতকেই স্মরণ করিয়ে দেয়। আমাদের পূর্বসূরিরা যেমন বুকের তাজা রক্ত ঢেলে কথা বলার অধিকার প্রতিষ্ঠা করে গেছেন প্রয়োজনে আমাদের আবারো রক্ত দিয়ে কথা বলার অধিকার রক্ষা করতে হবে”।  

বাংলা ভাষা ও এদেশের লোকায়ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষায় সরকারকে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে ইমরান এইচ সরকার বলেন, “আমাদের সংস্কৃতিই আমাদের শেকড়। আমাদের স্বার্থেই এই সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। এর জন্য সবাইকেই এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের জারি, সারি, ভাটিয়ালি, যাত্রাপালা বাঁচিয়ে রাখতে যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা প্রদানের জন্য আমি সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই। একইসাথে সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রচলনের জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানাচ্ছি”।

ইমরান এইচ সরকার বলেন, “অমর একুশের চেতনা হচ্ছে মাথা নত না করে সকল অন্যায় ও অপশক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো। একদিন আমরা ভাষার দাবীতে রুখে দাঁড়িয়েছিলাম, এবার রুখে দাঁড়াতে হবে বৈষম্যহীন ও অসাম্প্রদায়িক মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য। কেবল তখনই অমর শহিদদের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা হবে”।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন সঙ্গীত ও আবৃত্তি শিল্পীরা অংশ নেন। এর মধ্যে ছিলেন রুবেল হোসেন, রবিউল ইসলাম শশী, ইন্দ্রাণী ঘটক, অনিন্দিতা আফরিন, জান্নাতুল ফেরদৌস লাকী, পশ্চিমবঙ্গের চলচ্চিত্রকার সৌমিত্র ঘোষ দস্তিদার, কণ্ঠশিল্পী রাজু বল, অসীম গিরি, ত্রিপুরার গণসংগীত শিল্পী শিবপ্রসাদ ধর , আবৃত্তি শিল্পী সুস্মিতা সেন প্রমুখ প্রমুখ।

এর আগে অমর একুশে ফেব্রুয়ারি, শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রথম প্রহরে শাহবাগ থেকে পদযাত্রা নিয়ে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে ভাষা শহিদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করে গণজাগরণ মঞ্চ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত