সিলেটটুডে ডেস্ক

১৩ মার্চ, ২০১৮ ১৫:৪৯

ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলের সাথে সিলেট চেম্বারের মতবিনিময়

দি সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র উদ্যোগে আয়োজিত ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় সভায় বক্তারা বলেছেন, সিলেট অঞ্চল শিল্প স্থাপন ও বিনিয়োগের জন্য খুবই সম্ভাবনাময় স্থান। এখানে যারা বিনিয়োগ করবেন তারা লাভবান হবেন বলে বক্তারা অভিমত ব্যক্ত করেন। বক্তারা বলেন, সিলেটে ইকোনমিক জোন, আইটি পার্ক ও ট্যুরিজম সেক্টরে বিনিয়োগের বিপুল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

মঙ্গলবার (১৩ মার্চ) দুপুরে সিলেট চেম্বারের কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন সিলেট চেম্বারের সভাপতি খন্দকার সিপার আহমদ।

আলোচনায় অংশ নেন ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ) ডেলিগেশন টু বাংলাদেশের চার্জ দ্যা এফেয়ার্স কনস্টানটিনস ভার্ডাকিস, জার্মান এম্বেসীর ডেপুটি হেড অব মিশন মাইকেল শুলতেইস, ই.ইউ ডেলিগেশন টু বাংলাদেশের ট্রেড এডভাইজার আবু সৈয়দ বেলাল। উপস্থিত ছিলেন কনস্টানটিনস ভার্ডাকিস এর স্ত্রী মিস অ্যানা কনডোয়ান্নি।   

ইইউ ডেলিগেশন টু বাংলাদেশের চার্জ দ্যা এফেয়ার্স কনস্টানটিনস ভার্ডাকিস তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশের সাথে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সম্পর্ক খুবই চমৎকার। ইইউ বাংলাদেশের অন্যতম বাণিজ্যিক অংশীদার। প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ পণ্য বাংলাদেশ এবং ইইউ’র মধ্যে আমদানি-রপ্তানি হয়। বিশেষ করে বাংলাদেশ থেকে গার্মেন্টস প্রোডাক্ট ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে রপ্তানি হয়। কিন্তু ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সাথে বাংলাদেশের ব্যাপক বাণিজ্যিক বৈষম্য রয়েছে। এই বৈষম্য দূরীকরণে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে আমরা বাংলাদেশ সরকারের সাথেও আলোচনা করছি।

তিনি জানান, ২০১৬ সালে দ্বি-পাক্ষিক বাণিজ্য ছিল ১৯ বিলিয়ন ইউরো। এই রপ্তানি যাতে আরো বৃদ্ধি পায় সেই লক্ষ্যে নানা উদ্যোগ নিচ্ছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ খুবই সম্ভাবনার দেশ। এখানে বিনিয়োগের সমস্যা ও সম্ভাবনা এবং সরাসরি বিনিয়োগ করার জন্য আমরা আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশ ধীরে ধীরে উন্নতির দিকে এগুচ্ছে। এখানে মহিলাদের কর্মসংস্থান এবং নারীদের ক্ষমতায়ন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

জার্মান এম্বেসীর ডেপুটি হেড অব মিশন মাইকেল শুলতেইস বলেন, জার্মানি বাংলাদেশী পণ্যের অন্যতম বৃহত্তম বাজার। বাংলাদেশী পণ্যের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি বলেন, সিলেট অঞ্চল চায়ের জন্য বিখ্যাত। এখানে আইটি ও ট্যুরিজমের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এক্ষেত্রে কিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে সিলেট চেম্বারের সভাপতি খন্দকার সিপার আহমদ ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, সিলেট অঞ্চল শিল্প এবং বিনিয়োগের অন্যতম সম্ভাবনাময় এলাকা। তিনি সিলেটে স্থাপিতব্য বাংলাদেশের প্রথম শ্রীহট্ট ইকোনমিক জোন ও কোম্পানীগঞ্জ হাইটেক পার্কে সরাসরি বিনিয়োগ করার জন্য ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রতি আহবান জানান।

তিনি বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে বিনিয়োগকারীদের সবধরনের সুযোগ-সুবিধা দিতে সরকার প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া সিলেটের পার্শ্ববর্তী ভারতের সেভেন সিস্টারে পণ্য বিপণনের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। যে কারণে সিলেটে বিনিয়োগ করলে বিনিয়োগকারীরা লাভবান হবেন।

মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ব্যাংকের জিএম জীবন কৃষ্ণ রায়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্ডাস্ট্রিয়াল এন্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট এর প্রফেসর ড. ইঞ্জি. এম. ইকবাল, সিলেট চেম্বারের সহসভাপতি মো. এমদাদ হোসেন, এম. আহমেদ টি এন্ড ল্যান্ড্স কোম্পানির পরিচালক ও সিলেট চেম্বারের সাবেক পরিচালক তেহসিন চৌধুরী, সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকরামুল কবির, হোটেল স্টার প্যাসিফিকের ডাইরেক্টর সালেহীন এফ নাহিয়ান, বারাকা পাওয়ার লি. এর ডিএমডি ফাহিম আহমেদ চৌধুরী, হোটেল মেট্রো এর ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মিজানুর রহমান পায়েল, মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির বিজনেস ফেকালটির প্রভাষক জিয়াউর রহমান খান টিটু প্রমুখ। সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন সিলেট চেম্বারের পরিচালক মো. আব্দুর রহমান জামিল।

সভায় উপস্থিত ছিলেন সিলেট চেম্বারের পরিচালক মো. সাহিদুর রহমান, পিন্টু চক্রবর্তী, মুশফিক জায়গীরদার, আমিরুজ্জামান চৌধুরী, চন্দন সাহা, মুজিবুর রহমান মিন্টু, আলীম ইন্ডাস্ট্রিজ লি. এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলীমুল এহছান চৌধুরী, সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ, ওকাস সভাপতি খালেদ আহমদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিজিএম শামীমা নার্গিস প্রমুখ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত