সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

২৮ এপ্রিল, ২০১৮ ০২:৫২

‘সমাজব্যবস্থাকে উন্নত করতে জ্ঞানচর্চার বিকল্প নেই’

সিলেটের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মুরারিচাঁদ (এমসি) কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর হাসান ওয়ায়েজ বলেছেন, বাংলাদেশকে জ্ঞান বিজ্ঞানে এগিয়ে যেতে হবে। সমাজকে উন্নত করতে হলে জ্ঞানচর্চার বিকল্প নেই। মানুষের ব্যক্তি জীবনকে সুন্দর ও মার্জিত করলে সামাজিক-রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক দিক দিয়ে রাষ্ট্র সুন্দর ও মার্জিত হবে এবং দ্রুত উন্নতি লাভ করবে। তাই আমাদেরকে জ্ঞান বিজ্ঞানচর্চা ও শিক্ষা ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, সমাজের আলোকিত মানুষগুলোকে স্মরণে নিয়ে তাদের দেখানো পথে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। এরকম একজন আলোকিত মানুষ ছিলেন প্রফেসর আব্দুল হালিম। মুরারিচাঁদ (এমসি) কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ শিক্ষাবিদ প্রফেসর আব্দুল হালিম স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

শুক্রবার বিকালে সিলেট জেলা পরিষদ মিলনায়তনে প্রফেসর আব্দুল হালিম স্মরণসভার আয়োজন করে দর্শন অনুশীলন বাংলাদেশ নামের একটি সংগঠন।
 
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর আব্দুল আজিজ। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, জ্ঞানের সমাদর আমরা দিনে দিনে কমিয়ে দিচ্ছি। তাই প্রয়াত এই প্রবীণ ও প্রাজ্ঞা জ্ঞানপুরুষকে নিয়ে কেউ কিছু লিখছে না। আমার প্রচন্ড ইচ্ছে হয় এসব ব্যক্তিদের নিয়ে লেখালেখি করি। কিন্তু আজকাল লিখতে তেমন পারি না, আর লিখলেও বেশিরভাগ সময় নিজের লেখা নিজে বুঝতে পারি না। তবে আমাদের উচিত এবং দায়িত্ব আমাদের এই প্রাজ্ঞজনদের নিয়ে লেখালেখি করা, বড় পরিসরে তাদের স্মরণ করা।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন এমসি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ আবু নাসের আলী আশরাফ মাহবুব আহমদ, প্রফেসর ধীরেশ চন্দ্র সরকার, দর্শন বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর প্রশান্ত কুমার সাহা, শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর আব্দুল কুদ্দুছ, এমসি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর নিতাই চন্দ্র চন্দ, সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মুহা. হায়াতুল ইসলাম আকঞ্জি, মদন মোহন কলেজের অধ্যক্ষ ড. আবুল ফতেহ ফাত্তাহ, সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর কাজী আতাউর রহমান।

দর্শন অনুশীলন সমিতির সভাপতি ও রাগীব-রাবেয়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. আব্দুল ওয়াহিদ সারোয়ারের সভাপতিত্বে আরও স্মৃতিচারণমুলক বক্তব্য রাখেন শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ, এমসি কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মো. সালেহ আহমদ, দর্শন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর আজাদ আতিকুর রহমান, সিটি কর্পোরেশনের সচিব বদরুল হক প্রমুখ।

উল্লেখ্য, প্রফেসর আব্দুল হালিম ১৯৪২ সালে ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার হাতুড়াবাড়ি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৫ সালে এমসি কলেজের দর্শন বিভাগে প্রভাষক পদে যোগদানের মধ্যদিয়ে তাঁর কর্মজীবন শুরু হয়। এ কলেজের দর্শন বিভাগের চেয়ারম্যান ছাড়াও কলেজের উপাধ্যক্ষ এবং অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন।
এছাড়াও প্রফেসর আব্দুল হালিম জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিসিপ্লিনারী কমিটির সদস্য এবং পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয় বিশেষজ্ঞ হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর প্রচেষ্টায় এমসি কলেজে দর্শন বিষয়ে সম্মান কোর্স চালু হয়। তিনি নিজ গ্রামে একটি হাসপাতাল ও একটি ডাকঘর স্থাপন করেন। বাংলা একাডেমী থেকে অধ্যাপক আব্দুল হালিমের ৪টি বই প্রকাশিত হয়েছে। দর্শন বিষয়ে তাঁর প্রকাশিত কয়েকটি বই অনার্স ও মাস্টার্স লেভেলে পড়ানো হয়। তিনি ৭৫ বছর বয়সে ৩১ জানুয়ারি মঙ্গলবার সকাল ৮টায় ধানমন্ডির নিজের ফ্ল্যাটে মৃত্যুবরণ করেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত