টাইব্রেকারে ৬-৫ গোলে ইতালিকে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠেছে জার্মানি।

নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলায় দুই দলের খেলা ১-১ গোলের সমতায় শেষ হলে অতিরিক্ত ৩০ মিনিটেও গোল না হওয়ায় ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। এবং সেখান থেকে জয় করায়ত্ত করে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানি।

টাইব্রেকারে ইতালির হয়ে গোল করেন লরেঞ্জো ইনসিনিয়ে ও আন্দ্রেয়া বারজাগলি। ব্যর্থ হন সিমোনে জাজা, গ্রাজিয়ানো পেল্লে ও লিওনার্দো বোনুচ্চি। জাজা নেমেছিলেন শুধু টাইব্রেকারের জন্যই। এর আগে নির্ধারিত সময়ে পেনাল্টি থেকে গোল করে সমতা এনেছিলেন বোনুচ্চি।  

জার্মানির হয়ে টাইব্রেকারে জালে বল পাঠান টনি ক্রুস ও ইউলিয়ান ড্রাক্সলার। ব্যর্থ হন টমান মুলার, মেসুত ওজিল ও বাস্তিয়ান শোয়াইনস্টাইগার। শোয়াইনস্টাইগার গোলে পেলে তখনই সেমি-ফাইনালে পৌছে যেত জার্মানি।

পরের তিন শটে গোল করেন ইতালির এমানুয়েল জাক্কেরিনি, মার্কো পারলো মাত্তিয়া দে শিলিও। কিন্তু মাত্তেও দারমেইনের শট ফিরিয়ে দেন নয়ার।

টানা চার শটে গোল করেন ম্যাট হামেলস, জশুয়া কিমিচ, জেরোম বোয়াটেং ও ইয়াোনাস হেক্টরে। হেক্টরের শট অল্পের জন্য ফেরাতে পারেননি জানলুইজি বুফ্ফন। বল তাকে ফাঁকি দিয়ে জালে জড়লে উল্লাসে মাতে জার্মানরা।

এর আগে শনিবার বোর্দোয় সামি খেদিরার চোটে ষোড়শ মিনিটে মাঠে আসেন শোয়াইনস্টাইগার। ২৭তম মিনিটে মুলারের ক্রসে তার হেড জালেও জড়ায়। কিন্তু হেড করার আগে তিনি দে শিলিওকে ফাউল করায় বাতিল হয়ে যায় গোল।   

শুরুর সতর্ক ফুটবলের পর প্রথমার্ধের শেষ দিকে দারুণ জমে উঠে খেলা।

৪২তম মিনিটে দুটি সুযোগ হাতছাড়া করে জার্মানি। প্রথমে কিমিচের দুর্দান্ত ক্রসে হেড লক্ষ্যে রাখতে পারেননি মারিও গোমেজ। এরপর ডি বক্সে দুর্বল শট নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করেন মুলার।
 
দুই মিনিট পর সুযোগ হাতছাড়া করে ইতালিও। জাক্কেরিনি নিজে শট না নিয়ে স্তেফাও স্তুরারোকে বল বাড়ান; নয়ারকে পরাস্ত করতে পারেননি ইউভেন্তুসের এই মিডফিল্ডার।
 
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে আলেসান্দ্রো ফ্লোরেঞ্জির নৈপুণ্যে বেঁচে যায় ইতালি। ৫৪তম মিনিটে গোমেজের কাছ থেকে বল পেয়ে এক ঝটকায় দুই জনকে সরিয়ে সুবর্ণ সুযোগ পেয়ে যান মুলার। প্রথমার্ধের মতো ভুল করেননি, বুলেট শটে জাল খুঁজে নিচ্ছিলেন তিনি। অসহায়ের মতো দাঁড়িয়ে বলের জালে যাওয়া দেখছিলেন জানলুইজি বুফ্ফন। কিন্তু ছুটে এসে দারুণ স্লাইডে কর্নারের বিনিময়ে সে যাত্রা দলকে বাঁচান ফ্লোরেঞ্জি।
 
৬৫তম মিনিটে এগিয়ে যায় জার্মানি। গোমেজের ডিফেন্স চেরা পাস ডি বক্সে খুঁজে পায় হেক্টরকে। তার শট ইতালির একজনের গায়ে লাগলে বল পেয়ে যান ওজিল, সুযোগ হাতছাড়া করেননি আর্সেনালের এই মিডফিল্ডার।
 
এরপর ম্যাচের ৭৮ মিনিটে ইতালির লিওনার্দো বোনুচ্চি পেনাল্টি থেকে গোল করে ম্যাচে ফিরিয়ে আনেন ইতালিকে। ডি বক্সে বোয়াটেংয়ের হাতে বল লাগলে পেনাল্টি পায় ইতালি। পেশাদার এটাই বোনাচিওর প্রথম পেনাল্টি। ইতালির প্রথম ডিফেন্ডার হিসেবে বড় কোনো টুর্নামেন্টে গোল করলেন তিনি।

ম্যাচে পরিষ্কার আধিপত্য ছিল জার্মানির। বলকে তারা তাদের দখলে রাখে ৬২%, অপরদিকে ইতালির এ হার ছিল ৩৮। ম্যাচে জার্মানি নিজেদের মধ্যে বল আদানপ্রদান করেছে মোট ৮৩৩ বার, অন্যদিকে ইতালির এ সংখ্যা ছিল ৫২০।

ম্যাচ শুরুর আগে ঢাকার গুলশানে জঙ্গি সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহতদের স্মরণে এক মিনিটের নীরবতা পালন করা হয়, কালো ব্যাজ নিয়ে মাঠে নামে ইতালি।