স্পোর্টস ডেস্ক

১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ২০:৪১

ন্যু ক্যাম্প মানেই হিগুয়েইনের গোলখরা!

ইতালিয়ান লিগে তিন ম্যাচে এ পর্যন্ত দুই গোল করেছেন। সিরি ‘আ’তে এমন ফর্ম দেখে গঞ্জালো হিগুয়েইনের ওপর ভরসা করেই নেমেছিলেন জুভেন্টাস কোচ মাসিমিলিয়ানো অ্যালেগ্রি। চাপের ম্যাচে মূল স্ট্রাইকারের ওপরই তো ভরসা রাখতে হয়। কিন্তু ইতালিয়ান টেকনিশিয়ান নিশ্চয়ই জানতেন না, ন্যু ক্যাম্প মানেই হিগুয়েইনের গোলখরা!

বার্সেলোনার মাঠে এ পর্যন্ত ২১ ম্যাচে ৩ গোল করেছেন হিগুয়েইন। সবগুলো গোলই রিয়াল মাদ্রিদের জার্সিতে। তবে রিয়াল ও জুভেন্টাস মিলিয়ে ন্যু ক্যাম্পে সর্বশেষ ১২ ম্যাচেই গোল পাননি হিগুয়েইন। এর মধ্যে রিয়ালের হয়ে গোলশূন্য ছিলেন ১০ ম্যাচ, জুভেন্টাসের হয়ে ২ ম্যাচ। গত রাতেও গোলের সুযোগ নষ্ট করেছেন আর্জেন্টাইন এ স্ট্রাইকার, যেমনটা তাঁকে নিয়মিত করতে দেখা যায় আর্জেন্টিনার জার্সিতে, বড় ম্যাচে।

চ্যাম্পিয়নস লিগে এ ম্যাচের দুই অর্ধেই গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন হিগুয়েইন। কিন্তু বারবার ব্যর্থ হওয়ায় ৮৭ মিনিটে অ্যালেগ্রি তাঁকে তুলে নেন মাঠ থেকে। ‘অ্যাটাকিং থার্ডে’ আক্রমণের কোনো জায়গা তৈরি করা তো দূরের কথা, বরং বার্সার রক্ষণজালে হিগুয়েইন নিজেই বোতলবন্দী হয়ে ছিলেন। চ্যাম্পিয়নস লিগের বড় মঞ্চে হিগুয়েইন আবারও ব্যর্থ।

এটা অবশ্য নতুন কিছু নয়। গত আসরের ফাইনালের কথাই মনে করুন। কার্ডিফের সেই ম্যাচে প্রথমার্ধের শেষ দিকে গোলের কী দারুণ সুযোগটাই না নষ্ট করলেন! তাই দেখে ‘জুভ’দের হয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতা সাবেক মিডফিল্ডার অ্যাঞ্জেলো ডি লিভিও বলেছিলেন, ‘চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে জুভেন্টাসের সবচেয়ে “ফ্লপ” খেলোয়াড়টি হিগুয়েইন।’

২০০৯-১০ চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলো থেকে রিয়ালের ছিটকে পড়ার নেপথ্য কুশীলবও ছিলেন হিগুয়েইন। লিঁওর মাঠে প্রথম লেগ ০-১ গোলে হারের পর ফিরতি লেগে ঘরের মাঠে ১-১ গোলে ড্র করে ছিটকে পড়েছিল রিয়াল। সে ম্যাচে তিনি গোলরক্ষককে কাটিয়ে লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি ফাঁকা গোলপোস্টেও! রিয়াল ছাড়া নাপোলির জার্সিতেও এমন অবিশ্বাস্য কিছু মিসের নজির রয়েছে হিগুয়েইনের।

বার্সার মাঠে জুভেন্টাসের হারের পর কিছু সংবাদমাধ্যমে টেনে আনা হয় বড় মঞ্চের ফাইনালে হিগুয়েইনের অতীত ব্যর্থতার ইতিহাসকে। ক্লাব ও দেশের হয়ে এ পর্যন্ত ছয়টি বড় আসরের ফাইনালে উঠলেও হিগুয়েইন গোল পাননি! এর মধ্যে তাঁকে বেশি পোড়াবে গত বিশ্বকাপ ফাইনালের গোল মিস। প্রথমার্ধে সহজ সুযোগ নষ্ট করেছিলেন। এ ছাড়া কোপা আমেরিকায় চিলির বিপক্ষে টানা দুই ফাইনালে গোলের সুযোগ নষ্ট করা ছাড়াও লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি পেনাল্টি থেকেও!

তাই বলে দলবদলের বাজারে হিগুয়েইনের দাম কিন্তু কম নয়। গত বছর নাপোলি থেকে ৯ কোটি ইউরোয় কিনেছে জুভেন্টাস। ইতালিয়ান ক্লাব ফুটবলের ইতিহাসে এটাই সবচেয়ে ব্যয়বহুল ট্রান্সফার। চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের ভুলে যাওয়া স্বাদ পেতেই এমন খরচ করেছে জুভেন্টাস। কিন্তু ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় ৭৮ ম্যাচে ২৩ গোল করা একজন স্ট্রাইকারকে কেনা যে কিছুটা হলেও জুয়া ছিল, সেটা আবারও প্রমাণ করে দিচ্ছেন হিগুয়েইন।

জুভেন্টাসের জার্সি গায়ে চ্যাম্পিয়নস লিগে ১৩ ম্যাচে ৫ গোল হিগুয়েইনের। ৯ কোটি ইউরোর এই প্রতিদান!
সূত্র: মার্কা, গোল ডট কম, স্পোর্ত

আপনার মন্তব্য

আলোচিত