স্পোর্টস ডেস্ক

০২ অক্টোবর, ২০১৭ ০১:০৪

শেষ দিনে আকাশ আর ব্যাটসম্যানে চোখ বাংলাদেশের

পচেফস্ট্রুম টেস্টে সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। বাংলাদেশকে ৪২৪ রানের লক্ষ্য দিয়ে ইতোমধ্যেই নিয়ে নিয়েছে ৩ উইকেট। স্কোরবোর্ডে রান ওঠেছে মাত্র ৪৯। শেষ দিনে তাদের দরকার ৭ উইকেট, আর বাংলাদেশের জয়ের জন্যে ৩৭৫ রান অথবা কোনোমতে দিন শেষ করে নেওয়া।

৯০ ওভারে ৩৭৫ রান অসম্ভব প্রায়, তারচেয়ে বরং পুরো দিন ব্যাট করতে পারলে ড্র; এ ড্রটাও যে প্রাপ্তির অনেক। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার জন্যে দুঃসংবাদ হচ্ছে শেষ দিনে আছে  বৃষ্টির শঙ্কা, বাংলাদেশের জন্যে হয়ত সেটা সুসংবাদের বার্তাও। শেষ দিনে তাই ব্যাটসম্যান আর আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে বাংলাদেশের।

এ টেস্টে বৃষ্টি হানা দিয়েছে একাধিকবার। সবশেষ  চতুর্থ দিনের চা-বিরতির পরের বৃষ্টির কারণে খেলা আর গড়াতে পারে নি মাঠে। তা না হলে কে জানত জয়ের কাজটা আরও একটু এগিয়ে রাখতে পারত প্রোটিয়ারা।দ্বিতীয় ইনিংস খেলতে নেমে যেভাবে উইকেটের পতন হচ্ছিল বাংলাদেশের তাতে বৃষ্টি আশীর্বাদ হয়েই এল বাংলাদেশের জন্য। তবে প্রোটিয়া অধিনায়ক ফাফ ডু-প্লেসিস নিশ্চয়ই খুশি হতে পারেননি।

৪২৪ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ০ রানেই ২ উইকেট হারিয়েছিল বাংলাদেশ। আইসিসির নিয়মের কোপে পড়ে প্রথম ইনিংসে ওপেন করতে পারেননি ওপেনার তামিম ইকবাল। দ্বিতীয় ইনিংসে প্রিয় পজিশন ফিরে পেলেও ০ রানেই তাকে বোল্ড করেন মরকেল।

ওই ওভারেই ০ রানে এলবিডাব্লিউ হন বল হাতে ৩ উইকেট নেওয়া মুমিনুল হক! মুমিনুল রিভিউ নিলেই বেঁচে যেতেন। মরকেলের বলটি তার স্টাম্প মিস করেছিল। রিভিউ নিতে চেয়েও কেন যেন মত পাল্টালেন মুমিনুল!

দলীয় ৬ রানে অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের স্টাম্প উপড়ে দেন মরকেল। কিন্তু সেটি নো বল হওয়ায় ব্যক্তিগত ২ রানে জীবন পান মুশফিক। জীবন পেয়ে ইমরুলকে নিয়ে ৪৯ রানের জুটি গড়েন অধিনায়ক। চা বিরতির ঠিক আগে কেশব মহারাজের বলে কুইন্টন ডি ককের গ্লাভসবন্দী হন ৩২ রান করা ইমরুল। আবারও আকাশ ভেঙে নেমে আসে বৃষ্টি। আর খেলা শুরু করা সম্ভব হয়নি।

এর আগে ৬ উইকেটে ২৪৭ রানে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে প্রোটিয়ারা। জয়ের জন্য বাংলাদেশের সামনে টার্গেট দাঁড়ায় ৪২৪ রানের। পচেফস্ট্রুম টেস্টের চতুর্থ দিনের শুরুটা অন্য কিছুর ইঙ্গিত দিয়েছিল। শুরুতেই বিপজ্জনক হাশিম আমলাকে (২৮) কাটারে বোকা বানান মুস্তাফিজুর রহমান। অফ স্টাম্পের বাইরে বল মারার লোভ সামলাতে না পেরে লিটন দাসের গ্লাভসে ক্যাচ দেন আমলা! আগের দিন প্রায় একইভাবে অভিষিক্ত মারক্রামকে আউট করেছিলেন মুস্তাফিজ।

কিন্তু সময়ের সাথে সাথে যেন বোলিংয়ের ধার হারাতে থাকে বাংলাদেশ। লাঞ্চের আগে বড় জুটি গড়ে ফেলেন ইমরুলের হাতে জীবন পাওয়া বাভুমা এবং অধিনায়ক ডু-প্লেসিস। বাভুমার ক্যাচ ফেলায় অবশ্য ইমরুলের দায় দিয়ে লাভ নেই। পয়েন্ট হাঁকানো বাভুমার প্রচণ্ড গতির শটটি ক্যাচে পরিণত করতে গিয়ে আঙুলে আঘাত পান ইমরুল। শেষমেষ মাঠই ছাড়তে হয় তাকে!

৭৫ বলে ক্যারিয়ারের ৯ম হাফ সেঞ্চুরি করেন বাভুমা। অধিনায়ক ফাফ ডু-প্লেসিসের সঙ্গে তার জুটি হয়ে গিয়েছিল ১৪২ রানের। হাত চালিয়ে ব্যাটিং করে সেঞ্চুরির দিক এগিয়ে যাওয়া প্রোটিয়া ক্যাপ্টেনকে (৮১) এলবিডাব্লিউ করে এই জুটি ভাঙেন মুমিনুল। দলীয় ২১২ রানে প্রোটিয়াদের চতুর্থ উইকেট পতনের পরই আকাশ ভেঙে নেমে আসে বৃষ্টি। বৃষ্টির পর খেলা শুরু হলে আবারও আঘাত হানেন মুমিনুল।

তার বলে ৭১ রান করা টেম্বা বাভুমা খোঁচা মেরে ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে। অপূর্ব দক্ষতায় সেই বলটি গ্লাভসবন্দী করলেন লিটন দাস। প্রোটিয়াদের ৬ষ্ট উইকেটের পতন ঘটান এই মুমিনুল-লিটন জুটি। মুমিনুলের বলেই ৮ রান করা প্রোটিয়া উইকেটকিপার কুইন্টন ডি কককে দারুণ দ্রুততায় স্টাম্পিং করেন লিটন দাস।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত