২৭ অক্টোবর, ২০২০ ১৮:২২
নিকুঞ্জ-রেণুকা দম্পত্তির সাথে তাদের মেয়ে অদিতি দাস
ঢাকায় একটি পত্রিকায় চাকরি করতেন সিলেটের সংস্কৃতিকর্মী অদিতি দাস। ক্যান্সার আক্রান্ত বাবার শুশ্রূষার জন্য চাকরি ছেড়ে চলতি মাসের শুরুতে সিলেট চলে আসেন তিনি। এরপর গত ৬ অক্টোবর করোনায় আক্রান্ত হন অদিতি দাসের মা রেণুকা চৌধুরী (৬৮)। পরে অদিতি নিজে এবং তার বাবারও করোনা ধরা পড়ে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার (২৬ অক্টোবর) মারা যান রেণুকা চৌধুরী। স্ত্রীর মৃত্যুর একদিন পর আজ মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) চলে গেলেন অদিতি দাসের বাবা নিকুঞ্জ বিহারী দাসও (৮২)।
নিকুঞ্জ বিহারী দাস সিলেটের ব্লু বার্ড স্কুলের গণিতের শিক্ষক ছিলেন। দীর্ঘদিন আগেই তিনি অবসর গ্রহণ করেন। সিলেটের নামকরা একটি বিদ্যালয়ে দীর্ঘকাল শিক্ষকতার কারণে নিজের শিক্ষার্থী ছাড়াও সিলেটের অনেকের কাছেই তিনি 'নিকুঞ্জ স্যার' হিসেবেই পরিচিত। তার স্ত্রী রেণুকা চৌধুরীও স্কুল শিক্ষক ছিলেন।
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে নগরের দাড়িয়াপাড়া এলাকার বাসায় মারা যান নিকুঞ্জ দাস। এরপর দুপুরে সিলেটের চালিবন্দর মহাশ্মশান ঘাটে তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠিত হয়। এরআগে গতকাল সোমবার ভোরে সিলেটের শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নিকুঞ্জ দাসের স্ত্রী রেণুকা চৌধুরী। করোনা আক্রান্ত স্বামী-স্ত্রী দুজনেই এই হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তাদের মূল বাড়ি সুনামগঞ্জের শাল্লায়।
নিকুঞ্জ-রেণুকা দম্পত্তির এক ছেলে ও এক মেয়ে। ছেলে ভারতে থাকেন। মেয়ে অদিতি দাসও করোনায় আক্রান্ত। তবু বাবা-মায়ের চিকিৎসা থেকে সৎকার- সবকিছু সামাল দিতে হচ্ছে তাকে।
অন্য সবাই যখন দুর্গাপূজার উৎসবে মেতেছেন তখন অদিতি হাসপাতালে বাবা-মাকে নিয়ে নিয়ে ছুটোছুটি করছেন। বিজয়া দশমীর প্রতিমা বিসর্জনের দিন মায়ের মৃতদেহ সৎকার করতে হচ্ছে তাকে। এর পরদিনই আবার বাবার লাশ নিয়ে শ্মশানঘাটে।
শোক : সংস্কৃতিকর্মী-সাংবাদিক অদিতি দাসের বাবা নিকুঞ্জ বিহারী দাস ও মা রেণুকা চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেট। নাট্য পরিষদের সভাপতি মিশফাক আহমদ মিশু ও সাধারণ সম্পাদক রজতকান্তি গুপ্ত সাক্ষরিত এক শোকবার্তায় তারা প্রয়াতদের আত্মার শান্তি ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
আপনার মন্তব্য