নিজস্ব প্রতিবেদক

২৮ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:৩১

রাজন হত্যা: ‘কামরুলসহ সকল অভিযুক্তদের নির্দোষ প্রমাণে সক্ষম হয়েছি’

সিলেটে শিশু সামিউল আলম রাজন হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হবে ৮ নভেম্বর।

মঙ্গলবার রায়ের তারিখ ঘোষণার পর আসামীপক্ষের আইনজীবী জানিয়েছেন, কামরুলসহ সকল আসামীদের আদালতে তারা নির্দোষ প্রমাণে সক্ষম হয়েছন।

অপরদিকে, রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা দাবি করেছেন, আসামীদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণে সক্ষম হয়েছেন তাঁরা। সকল আসামীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছেন তাঁরা।

এই মামলায় ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার কাজ শেষ হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে আদালত চত্বরে আসামী পক্ষের আইনজীবী হাবিবুর রহমান বলেন, আমরা সকল আসামীকে নির্দোষ প্রমাণে সক্ষম হয়েছি। আমরা আশা করছি, রায়ে অভিযুক্তরা খালাস পাবেন।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চুরির দায়ে রাজন গণপিটুনিতে মারা গেছে।

তবে মামলার প্রধান আসামী কামরুল ইসলামের আইনজীবী আলী হোসেন অভিযোগ করে বলেন, বিচার শেষ হওয়ার আগেই কামরুলকে অপরাধী সাব্যস্ত করা হয়ে গেছে। রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপীর করবেন বলেও জানান তিনি।

আসামীপক্ষের আইনজীবীরা এমনটি দাবি করলেও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের দাবি, তাঁরা আসামীদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণে সক্ষম হয়েছেন।

সিলেট মহানগর জজ আদালতের পিপি মফুর আলী বলেন, সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আমরা আসামীদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ প্রমাণে সক্ষম হয়েছি। আশা করছি রায়ে সকলের সর্বোচ্চ শাস্তি হবে।

একই প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন সিলেটের পিপি মিসবাহ উদ্দিন সিরাজও।

এরআগে রাজন হত্যার পরপর আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ ঘোষণা দিয়েছিলেন, রাজনের হত্যার দায়ের অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সিলেটের কোনো আইনজীবী মামলা পরিচালনা করবে না।

রায়ের তারিখ ঘোষণার পর আদালত চত্বরে এক প্রতিক্রিয়ায় রাজনের বাবা শেখ আজিজুর রহমান বলেন, দ্রুততম সময়ে বিচার কাজ শেষ হওয়ায় আমি সংশ্লিস্ট সকলের কাছে কৃতজ্ঞ। আমি চাই আমার ছেলের খুনিদের ফাঁসি হোক।

রায়ের তারিখ ঘোষণার পরপরই আদালত চত্বরে কান্নয় ভেঙ্গে পড়েছিলেন আজিজুর রহমান।

মঙ্গলবার যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন শেষে মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণা করেন সিলেট মহানগর দায়রা জজ আকবর হোসেন মৃধা।

বিচার শুরুর এক মাসের মধ্যে আলোচিত এই মামলার রায় প্রদানের তারিখ নির্ধারিত হলো। গত ২২ সেপ্টেম্বর ১৩ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্যে দিয়ে এই মামলার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়। ১ অক্টোবর থেকে শুরু হয় সাক্ষ্য গ্রহণ। এরআগে গত ১৬ অগাস্ট ১৩ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিলেট মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক সুরঞ্জিত তালুকদার।

মামলার ১৩ আসামীর মধ্যে দু'জন পলাতক ও ১১ জন কারাগারে রয়েছেন। কামরুল ছাড়াও রাজন হত্যা মামলার বাকি আসামিরা হলেন- মুহিদ আলম, আলী হায়দার, শামীম আহমদ, পাভেল আহমদ, ময়না চৌকিদার, রুহুল আমিন, তাজউদ্দিন আহমদ বাদল, দুলাল আহমদ, নুর মিয়া, ফিরোজ মিয়া, আছমত উল্লাহ ও আয়াজ আলী।

এরমধ্যে পাভেল ও শামীমকে এখনো গ্রেফতার করা যায় নি।

প্রসঙ্গত, গত ৮ জুলাই সিলেটের কুমারগাঁওয়ে সামিউল আলম রাজনকে নির্মম নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যা করা হয়। নির্যাতনের সময় ঘাতকরা নির্যাতনের দৃশ্য ভিডিওচিত্রে ধারণ করে। যা ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছড়িয়ে পরলে দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত