
০৮ নভেম্বর, ২০১৫ ১২:৪৭
সিলেটের কুমারগাঁওয়ে অমানবিক নির্যাতনের মাধ্যমে শিশু সামিউল আলম রাজনকে হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে।
অমানবিক নির্যাতনের মাধ্যমে রাজন হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় কামরুলসহ ৪ আসামির ফাঁসির রায় দিয়েছেন আদালত।
রবিবার (৮ নভেম্বর)সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আকবর হোসেন মৃধা আলোচিত এ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন।
আলোচিত এ মামলার রায় হচ্ছে ৭৬ পৃষ্টার। এর মধ্যে আছে ২৮১০ লাইন, ৩১৩৫৮ শব্দ। বিচারক রায় পড়েছেন ২২ পৃষ্টা এবং ৫৪ পৃষ্টা থেকে এ রায় পড়া হয়।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন কামরুল, বাদল, ময়না মিয়া ও জাকির হোসেন পাভেল।
নুর মিয়ার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
মুহিত, আলী হায়দার ও শামীমের ৭ বছর করে কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত।
রুহুল আমিন, আছমত ফিরোজ ও আয়াজ আলী খালাস পেয়েছেন।
এদিকে, আসামিদের আদালতে উপস্থিত করার সঙ্গে সঙ্গে ফাঁসি ফাঁসি স্লোগানে উচ্চকিত হয়ে ওঠেছে আদালত প্রাঙ্গন। অসংখ্য সাধারণ মানুষ আদালতে উপস্থিত হয়ে ফাঁসি ফাঁসি স্লোগানে আদালত প্রাঙ্গণ উচ্চকিত করে তুলেন।
হত্যাকাণ্ডের ঠিক চার মাসপূর্তিতে এ মামলার রায় ঘোষণা করা হলো।
উল্লেখ্য, গত ৮ জুলাই সিলেটের কুমারগাঁওয়ে সামিউল আলম রাজনকে নির্মম নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যা করা হয়। নির্যাতনের সময় ঘাতকরা নির্যাতনের দৃশ্য ভিডিওচিত্রে ধারণ করে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছড়িয়ে দিলে দেশ-বিদেশে আলোড়নের সৃষ্টি হয়।
রাজন হত্যা মামলার ১৩ আসামির মধ্যে সৌদি আরবে আটক প্রধান আসামি কামরুলসহ ১১ জন কারাবন্দি ও দু’জন পলাতক রয়েছেন।
১৬ আগস্ট ১৩ জনকে আসামি করে এ মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিলেট মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক সুরঞ্জিত তালুকদার।
২৪ আগস্ট চার্জশিট আমলে নেন আদালত। ২২ সেপ্টেম্বর ১৩ জনকে অভিযুক্ত করে রাজন হত্যা মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়।
হত্যার পর লাশ গুমচেষ্টার অভিযোগে আদালতের বিচারক মুহিদ আলম ময়না চৌকিদার, তাজউদ্দিন আহমদ বাদল ও শামীম আহমদের বিরুদ্ধে আলাদা অভিযোগ আনেন।
১ অক্টোবর থেকে শুরু হয় রাজন হত্যা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ।
মামলার মোট সাক্ষী ৩৮ জনের মধ্যে ৩৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয় আদালতে। ২৫ আগস্ট পলাতক কামরুল ও শামীমের মালামাল ক্রোক করে নগরীর জালালাবাদ থানা পুলিশ।
৭ সেপ্টেম্বর রাজন হত্যা মামলা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে মহানগর দায়রা জজ আদালতে হস্তান্তর করা হয়।
নির্মম এ হত্যাকাণ্ডের পর মামলার প্রধান আসামি কামরুল ইসলাম পালিয়ে সৌদি আরবে চলে যান। সেখানে গিয়েও তার শেষ রক্ষা হয়নি। প্রবাসীরা তাকে ধরে বাংলাদেশ দূতাবাসে হন্তান্তর করেন। ইন্টারপোলের মাধ্যমে ১৫ অক্টোবর কামরুল ইসলামকে দেশে ফিরিয়ে আনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
আপনার মন্তব্য