নিজস্ব প্রতিবেদক

১৮ মার্চ, ২০২১ ১২:৫৮

সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসীদের হাত ভেঙে দেয়া হবে : র‍্যাব প্রধান

অচিরেই সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসীদের কালো হাত ভেঙে দেয়া হবে জানিয়েছেন র‍্যাব মহাপরিচালক চৌধুরী আব্দুল্লাহ্ আল মামুন। তিনি বলেছেন, সাম্প্রদায়িক অশান্তি সৃষ্টি করে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চাইছে একটি পক্ষ। তারা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশের এগিয়ে যাওয়াকে সহ্য করতে পারছে না। দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেভাবে দেশ থেকে জঙ্গিবাদ দমনে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখে বিশ্ব দরবারে দেশের সুনাম অর্জন করেছে সেভাবে অচিরেই সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসীদের কালো হাত ভেঙে দেয়া হবে।

বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার হবিবপুর নয়াগাঁও মধ্যহাটিতে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।  এর আগে তিনি সকাল ১১টায় ক্ষতিগ্রস্ত ঘর বাড়ি পরিদর্শন করেন।

পরিদর্শন শেষে তিনি বলেন, শাল্লায় গতকাল ঘটে যাওয়া ঘটনা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক। কোনোভাবেই এই ঘটনা বরদাশত করা হবে না। ঘটনার সাথে জড়িতদের কালো হাত ভেঙ্গে দেয়া হবে। যারা দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি করছে তাঁদেরকে অতিদ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচার নিশ্চিত করারও আশ্বাস দেন তিনি।

র‍্যাব মহাপরিচালক বলেন, বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক দেশ। এখানে সবার সমান অধিকার রয়েছে। কেউ যদি সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন করে তা সহ্য করা হবে না। জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করা হবে। এই ধরনের ঘটনা পুনরায় যাতে না ঘটতে পারে সেই জন্য ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামে র‌্যাব ও পুলিশের অস্থায়ী ক্যাম্প বসানো হবে। এছাড়াও সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হবে বলে জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করার কারণে বিতর্কিত ধর্মভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক গত ১৫ মার্চ দিরাইয়ে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে বক্তৃতা করেন। ওই সমাবেশে তার কিছু বক্তব্যে ক্ষুব্ধ হন শাল্লা উপজেলার হবিবপুর ইউনিয়নের নোয়াগাও গ্রামের এক তরুণ। তিনি মামুনুলের সমালোচনা করে মঙ্গলবার ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

এই পোস্টকে কেন্দ্র করে দিরাই ও শাল্লা উপজেলায় উত্তেজনা দেখা দেয়। হেফাজতে ইসলাম ও মামুনুল হক অনুসারীরা এমন পোস্টে বিক্ষুব্ধ  হয়ে ওঠেন। এই ঘটনায় বুধবার সকালে বিক্ষোভ মিছিল আহ্বান করে হেফাজতে ইসলাম।

তবে আগের রাতেই উত্তেজনা আঁচ করতে পেরে নোয়াগাও গ্রামবাসী ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার দায়ে অভিযুক্ত তরুণকে পুলিশের হাতে তুলে দেন। এই গ্রামের অর্ধশতাধিক পরিবারের প্রায় সবাই দরিদ্র হিন্দু। ফলে আরও বেশি আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গ্রামের মানুষজনের মধ্যে।

তবে এমন উত্তেজনাকর পরিস্থিতি আর আতঙ্ক সত্ত্বেও প্রশাসনের বাড়তি নজরদারি না থাকায় বুধবার সকালে নোয়াগাঁও গ্রামে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মিছিল করে নির্বিঘ্নেই হিন্দু অধ্যুষিত এই গ্রামের সবগুলো বাড়িঘরই ভাঙচুর ও লুটপাট করে। গ্রামের প্রায় ৮০টি হিন্দু বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। এ সময় গ্রামের লোকজন পাশের হাওরে গিয়ে লুকিয়ে আত্মরক্ষা করেন। তবে এখন পর্যন্ত এই ঘটনায় কোনো মামলা বা কাউকে আটক করা হয়নি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত